হরমুজ বন্ধ? পারস্য উপসাগরের বধ্যভূমিতে থমকে তেলের ভেসেল
স্ট্র্যাটেজিক হরমুজ প্রণালী বন্ধের সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছে ইরানের পার্লামেন্ট। আর তার সঙ্গে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে বিশ্বজুড়ে।

বর্তমান ওয়েবডেস্ক
জুন ২৩, ২০২৫
তেহরান: স্ট্র্যাটেজিক হরমুজ প্রণালী বন্ধের সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছে ইরানের পার্লামেন্ট। আর তার সঙ্গে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে বিশ্বজুড়ে। কারণ একটাই, লক্ষ লক্ষ ব্যারেল কনসাইনমেন্টের কী হবে? প্রতিদিন এই প্রণালী দিয়ে প্রায় ২ কোটি ব্যারেল তেল এবং গ্যাসের সাপ্লাই হয়। অর্থাৎ, প্রায় ৩০০ কোটি লিটার! এবং সবচেয়ে বড় কথা, তেলের কনসাইনমেন্টের ডিল দিনের দিনে হয় না। এর জন্য প্রথমত দুই দেশের চুক্তি হয়। আর দ্বিতীয়ত, প্রতি কনসাইনমেন্টের জন্য ১৫ থেকে ৪৫ দিন সময় লাগে। অর্থাৎ, অনেক আগেই একটি দেশকে জানিয়ে দিতে হয়, সে কতটা তেল আগামী দিনে নেবে। সেই মতো খালি ট্যাঙ্কার (ব্যালাস্টার) নিয়ে কার্গো পৌঁছে যায় অশোধিত তেল সরবরাহকারী দেশের বন্দরে। তারপর ট্যাঙ্কার ভর্তি করে কার্গো সেই তেল পৌঁছে দেয় অন্য দেশটির কাছে। যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য ইতিমধ্যেই হরমুজ প্রণালী পেরিয়ে খালি ট্যাঙ্কার নিয়ে জাহাজগুলির পারস্য উপসাগরে প্রবেশের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছে। যেখানে প্রতিদিন ৬৯টি জাহাজ হরমুজ পেরিয়ে ইরান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ইরাক বা কুয়েতের বন্দরে নোঙর ফেলত, সেই সংখ্যাটাই এখন কমে গিয়েছে ৪০টিতে। খালি ট্যাঙ্কার সমেত যে জাহাজগুলি ইতিমধ্যেই পারস্য উপসাগরে রয়েছে, সঙ্কট তাদেরই সবচেয়ে বেশি। কারণ, হরমুজ প্রণালী বন্ধ হয়ে গেলে তারা আর বেরতে পারবে না। উল্টে যুদ্ধ পরিস্থিতি যদি তীব্র আকার নেয়, তার শিকার হতে হবে ওই ভেসেলগুলিকে। ফল? কোটি কোটি ডলার লোকসান।
হরমুজ প্রণালী বন্ধের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে গেলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে কিন্তু ইরানের বন্ধু দেশ চীনেরই। কারণ, তাদের সিংহভাগ অশোধিত তেল আমদানি হয় ইরান থেকে। এবং তা যায় হরমুজ প্রণালী পেরিয়ে। যুদ্ধ বাড়লে বেজিংয়ের তেল সঙ্কট তৈরি হবেই। পাশাপাশি ধাক্কা খাবে ইরাক, কুয়েত, কাতার, আমিরশাহি, কুয়েতের মতো দেশের অর্থনীতিও। সৌদি আরব বা আমিরশাহির তাও বিকল্প পথ রয়েছে। তারা লোহিত সাগর রুটে বাব-আল-মান্দেব প্রণালী পেরিয়ে আরব সাগরে প্রবেশ করতে পারবে। কিন্তু অন্য দেশগুলির অবস্থা শোচনীয়। আর এই পরিস্থিতি শুধু তেলের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, প্রভাব পড়বে প্রাকৃতিক গ্যাসের ক্ষেত্রেও। কারণ, পশ্চিম এশিয়ার এই গোটা অংশটাই বিশ্বের সিংহভাগ গ্যাস সরবরাহ করে থাকে। ভারত যদিও প্রাকৃতির গ্যাসের ক্ষেত্রে খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কারণ, ভারতকে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহকারী অন্যতম দেশ কাতারের গ্যাস পাইপলাইন কিন্তু হরমুজ প্রণালীর জন্য ধাক্কা খাবে না। এছাড়া এলএনজি (লিকুইফায়েড ন্যাচরাল গ্যাস) আমদানির জন্য অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পথ তো খোলা আছেই। ফলে দাম বাড়লেও ভারতে সাপ্লাই ব্যাহত হওয়ার কথা নয়।
তবে সবথেকে বেশি উদ্বেগের কারণ অবশ্যই হয়ে দাঁড়াচ্ছে অশোধিত তেল। হরমুজ প্রণালী কতদিন বন্ধ থাকবে? কতটা ধাক্কা খাবে জ্বালানি অর্থনীতি? কতটা ধস নামবে বিশ্বের তাবড় শেয়ার বাজারগুলিতে? ততদিনে কোথায় পৌঁছবে ব্রেন্ট, ডব্লুটিআই, উরালসের ব্যারেল পিছু দাম? ৪০০ ডলার? তখন ভারতের শহরগুলিতে পেট্রল-ডিজেলের দাম কোথায় পৌঁছবে? ২০০ টাকা প্রতি লিটার?
related_post
অমৃত কথা
-
‘বিবেকচূড়ামণি’
- post_by বর্তমান
- জুলাই 19, 2025
এখনকার দর
-
ইউরো
- post_by Admin
- জুলাই 17, 2025
-
পাউন্ড
- post_by Admin
- জুলাই 17, 2025
-
ডলার
- post_by Admin
- জুলাই 17, 2025
-
রুপোর দাম
- post_by Admin
- জুলাই 18, 2025
-
সোনার দাম
- post_by Admin
- জুলাই 18, 2025
-
নিফটি ব্যাঙ্ক
- post_by Admin
- জুলাই 18, 2025
-
নিফটি ৫০
- post_by Admin
- জুলাই 18, 2025