বৃহস্পতিবার, 17 জুলাই 2025
Logo
  • বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

গুরু

ভক্ত চায় ভগবদ্দর্শন, যোগী চায় আত্মদর্শন, জ্ঞানী চায় ব্রহ্মদর্শন আর প্রকৃত শিষ্য চায় গুরুদর্শন। গুরুর কৃপা, গুরুর আশীর্ব্বাদ ও গুরুর শুভদৃষ্টি লাভই গুরুদর্শন। গুরুর নির্দ্দেশ মত চলা, গুরুর আদেশ উপদেশ প্রতিপালন ও তাঁহার নির্ণীত নির্দ্ধারিত পথে চলার দ্বারাই গুরুকৃপা লাভ হইয়া থাকে। 

গুরু

ভক্ত চায় ভগবদ্দর্শন, যোগী চায় আত্মদর্শন, জ্ঞানী চায় ব্রহ্মদর্শন আর প্রকৃত শিষ্য চায় গুরুদর্শন। গুরুর কৃপা, গুরুর আশীর্ব্বাদ ও গুরুর শুভদৃষ্টি লাভই গুরুদর্শন। গুরুর নির্দ্দেশ মত চলা, গুরুর আদেশ উপদেশ প্রতিপালন ও তাঁহার নির্ণীত নির্দ্ধারিত পথে চলার দ্বারাই গুরুকৃপা লাভ হইয়া থাকে। গুরুর আদেশকেই শিষ্য একমাত্র মন্ত্র বলিয়া জানিয়া মানিয়া চলিবে। শিষ্য গুরুকে সতত যেরূপ চক্ষে দেখিয়া থাকে, তাঁহার আদেশকেও সর্ব্বদা সেইরূপ চক্ষে দেখিয়া বুঝিয়া মানিয়া চলিবে। গুরুর আদেশই শিষ্যের একমাত্র সহায় ও সম্বল। শিষ্যের যাবতীয় বিভ্রম-বিভ্রান্তি-বিস্মৃতির ঘোর ভাঙ্গিয়া, মায়ামোহ-বাসনার জালকে ছিন্নভিন্ন করিয়া, যাবতীয় দুঃখ-দৈন্য-দুর্ব্বলতাকে দূর করিয়া এই আদেশই শিষ্যকে সব সময় জাগ্রত, জীবন্ত ও সজাগ রাখিবে; সুতরাং এই আদেশকে সতত স্মরণ মননে নিদিধ্যাসনে রাখাই শিষ্যের একমাত্র সাধনা। মনকে সর্ব্বদা গুরুমুখী করিয়া রাখাই শিষ্যের একমাত্র তপস্যা ও আরাধনা। সব রকম কাজের ভিতর দিয়া চলাফেরার সঙ্গে সঙ্গে বহির্মুখী মনকে গুরুমুখী করিয়া রাখিতে পারিলে বাহিরের কোন রকম বাজে আবহাওয়া শিষ্যকে কোন ভাবে কোন রকমে ধরিতে ছুঁইতে স্পর্শ করিতে পারিবে না। এই বিধান সব সময় মানিয়া চলিলে শিষ্য আর কখনও কোনরূপে বিপদগ্রস্ত হইবে না। বাসনার নাশ যেখানে, ভক্তের ভগবর্দ্দশন, যোগীর আত্মদর্শন, জ্ঞানীর ব্রহ্মদর্শন ও শিষ্যের গুরুদর্শন সেখানে। 
গুরুর আদেশ প্রতিপালনেই শিষ্যের জন্মজন্মান্তরীণ যাবতীয় বাসনার নাশ হইয়া থাকে। এই বাসনার নাশ যেখানে শান্তি, শক্তি ও মুক্তি সেখানে। এই শান্তি, শক্তি ও মুক্তিই শিষ্যের একমাত্র গুরুদর্শন। কখনও কোনও সঙ্ঘ-সন্তান সাময়িক দুর্ব্বলতা বশতঃ যদি কোন নীতিবিগর্হিত কাজ করে এবং সেই সব ব্যাপার লইয়া তাহাকে লোকচক্ষে হেয় করিবার উদ্দেশ্যে—অপর কোন সঙ্ঘ-সন্তান যদি তাহার নানারূপ নিন্দা বা সমালোচনা করে, তবে অনতিদীর্ঘকাল মধ্যেই সেই সমস্ত দোষত্রুটি নিন্দা বা সমালোচনাকারী সঙ্ঘ-সন্তানকে আসিয়া আক্রমণ করিতে থাকে। কোন সঙ্ঘ-সন্তানকে তাহার ভুলত্রুটি সংশোধনার্থ (প্রীতি ও সহানুভূতির সহিত) সমালোচনা করিতে যাওয়া অপরাধ নয়, কিন্তু কেবলমাত্র সাময়িক আনন্দোপভোগ অথবা হেয় অপদস্থ করিবার জন্য কোনও সঙ্ঘ-সন্তানের (কোন দোষ-ত্রুটি) সমালোচনা করিতে যাওয়া খুবই বিপজ্জনক। কোনও সঙ্ঘ-সন্তান আদর্শ জীবন যাপন করিতে করিতে যদি কোন এক অশুভ মুহূর্ত্তে কোনরূপ দুর্ব্বলতা দ্বারা আক্রান্ত হইয়া আদর্শভ্রষ্ট ও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় তবে তাহা দেখিয়া অপর কোন সঙ্ঘ-সন্তানও কি তাহার আদর্শ পরিত্যাগ করিয়া আদর্শভ্রষ্ট ও লক্ষ্যভ্রষ্ট হইবে? না।
‘শ্রীশ্রী সঙ্ঘ-গীতা’ (২য় খণ্ড) ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ থেকে

রাশিফল