শনিবার, 17 মে 2025
Logo
  • শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

পরীক্ষায় ওএমআর শিটের সঙ্গে কার্বন পেপার, সংরক্ষণ ৩ বছর

পুরনো ভুলের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে নিয়োগবিধিতে নতুন বেশ কিছু বদল আনছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। চলতি মাসেই নয়া নিয়োগবিধি সরকারের কাছে পাঠাতে তৎপর তারা।

পরীক্ষায় ওএমআর শিটের সঙ্গে কার্বন পেপার, সংরক্ষণ ৩ বছর

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পুরনো ভুলের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে নিয়োগবিধিতে নতুন বেশ কিছু বদল আনছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। চলতি মাসেই নয়া নিয়োগবিধি সরকারের কাছে পাঠাতে তৎপর তারা। তাতে সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত ওএমআর সংরক্ষণ, প্রার্থীদের ওএমআরের সঙ্গে কার্বন কপি দেওয়ার মতো বিষয়গুলি রাখা হচ্ছে। সূত্রের খবর, ওএমআর স্ক্যানিংয়ের বিষয়টিও কোনও বেসরকারি সংস্থা নয়, নিজেদের হাতে বা কোনও সরকারি সংস্থার হাতে রাখতে চায় এসএসসি। এসব বিষয়ই নিয়োগ মামলায় বারবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে। রাজ্য অবশ্য ওএমআর শিট ১০ বছর সংরক্ষণের পক্ষপাতী।
পর্ষদের আবেদনের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যোগ্য শিক্ষকদের চাকরি বজায় রাখলেও ৩১ মে’র মধ্যে নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশও দিয়েছে। তা করতে না পারলে আদালত অবমাননার দায়ে পড়তে হবে সরকারপক্ষ এবং এসএসসি’কে। তাই এ ব্যাপারে কোনও খুঁত রাখতে চাইছে না তারা। প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে নিয়োগবিধির খসড়া তৈরি করেছিল কমিশন। তাতেই বেশ কিছু ঘষামাজা করে সরকারকে দিতে চলেছে তারা। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ইতিমধ্যেই ওএমআরের কার্বন কপি, ১০ বছর ওএমআর সংরক্ষণের ব্যবস্থা কার্যকর করেছে। মাদ্রাসা শিক্ষা কমিশনেও রয়েছে একই ব্যবস্থা। তবে, প্রার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় সেই পথে হাঁটতে রাজি নয় কমিশন। তারা তিন বছরের জন্য সংরক্ষণ চাইছে। যদিও এ নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলবে বলেই জানা গিয়েছে। মূলত এ ধরনের কিছু বিষয়ে সহমতে পৌঁছনো যায়নি বলেই আগের নিয়োগবিধিতে শিক্ষাদপ্তর সম্মতি দিতে পারেনি বলে বিকাশ ভবনের আধিকারিকদের দাবি।
নতুন নিয়োগের পদক্ষেপের পাশাপাশি রাজ্য সরকার, এসএসসি এবং প্রার্থীরা সুপ্রিম কোর্টে চাকরি খারিজের মূল রায়ের রিভিউ পিটিশনের প্রক্রিয়াও চালাচ্ছেন। দিল্লিতে যাওয়া যোগ্য শিক্ষকদের নিয়ে বাস শুক্রবার কলকাতায় ফিরে এলেও মামলার প্রস্তুতি নিতে ছ’জন রয়ে গিয়েছেন সেখানে। ফিরে আসা ‘যোগ্য শিক্ষক’ প্রতিনিধি হুমায়ুন ফিরোজ মণ্ডল বলেন, ‘যন্তরমন্তরে আন্দোলনের জেরে সারা দেশে বিষয়টি ইতিবাচক প্রচার পেয়েছে। অনেক সময় আদালতের রায়ে জনমতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। সেই কাজটা আমরা করতে পেরেছি।’
এদিন কয়েকশো শিক্ষাকর্মী পার্ক সার্কাস থেকে তপসিয়া হয়ে মেট্রোপলিটনে তৃণমূল ভবনের উদ্দেশে রওনা দেন। বাইপাস-মেট্রোপলিটন ক্রসিংয়ে তাঁদের পথ আটকালে সেখানেই বসে পড়েন তাঁরা। প্রায় দু’ঘণ্টা বন্ধ থাকে বাইপাস থেকে তৃণমূল ভবনমুখী রাস্তা। ভবনে সাতজনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেখান থেকে বেরিয়ে গ্রুপ-সি চাকরিহারা সুজয় সর্দার বলেন, ‘চাকরি ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত আমরা আশ্বস্ত হচ্ছি না। আমাদের বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকার আদালতে না গেলে বৃহত্তর আন্দোলনের পরিকল্পনা রয়েছে।’ শিক্ষকদের সঙ্গে এক যাত্রায় শিক্ষাকর্মীদের পৃথক ফল হল কেন, সেই প্রশ্নও তোলা হয় তাঁদের তরফে। প্রায় ৩ হাজার ৩০০ নন টেইন্টেড বা তথাকথিত যোগ্য শিক্ষাকর্মীদের চাকরি ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বজায় রাখেনি কোর্ট। শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য বলেন, ‘ওঁদের বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে। আদালতের রায়ের উপরে আমি কোনও আশ্বাস দেওয়ার জায়গায় নেই। তবে তালিকা প্রকাশ ২১শেই হবে।’