গুরুজনের চিকিৎসায় বহু ব্যয়। ক্রোধ দমন করা উচিত। নানাভাবে অর্থ আগমনের সুযোগ। সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়ায় ... বিশদ
নবজ্যোতি সরকার: উত্তর দিনাজপুরের তুলাইপাঞ্জির পর উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলার সুগন্ধী ধান কালোনুনিয়া বাজার পাচ্ছে। কালোনুনিয়া হল ১৪০ দিনের ধান। বিঘা প্রতি উৎপাদন ১২ থেকে ১৪ মণ। ছোট দানার চাল। সুগন্ধী ও সুস্বাদু বলে পায়েসের জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বহু বছর ধরে এই কালো নুনিয়া ধানের চাষ হয়ে আসছে কোচবিহার জেলায়। চাষিরা জানিয়েছেন, কোচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের সময় এই ধানের চাষ হতো। এবং এই চালের তৈরি পায়েস মদনমোহন মন্দিরে ঠাকুর মদনমোহনকে ভোগ হিসেবে নিবেদন করা হতো। আজও মদনমোহনকে কালো নুনিয়া চালের পায়েস দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মূলত আমন মরশুমে কালোনুনিয়া ধানের চাষ করা হয়। ধান উঠেছে। চাষিরা কুইন্টাল প্রতি ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা পাচ্ছেন সেই ধান বিক্রি করে। অনেকে বোরো মরশুমেও চাষ করে থাকেন এই ধানটি। কোচবিহার জেলার মাথাভাঙা এক নম্বর ব্লকের তেকোনিয়া, পাটকামারি ও রুনিবাড়ি গ্রামে এবং মাথাভাঙা দুই নম্বর ব্লকের পচাগড় ও কোদালখেতিতে চাষিদের উন্নত প্রথায় ধান চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এবছর বোরো মরশুমে কালোনুনিয়া ছাড়াও এইসব অঞ্চলে উঁচু জমিতে লালগঙ্গা, গঙ্গা, ২৮-৩০, এবং ৩২-৩০ প্রজাতির ধান চাষ হবে। সব প্রজাতির ধানই ১২০-১৩০ দিনের। লালগঙ্গা ধানের বিঘা প্রতি উৎপাদন ১৬-১৭ মণ। কৃষি বিজ্ঞানী খোকন বর্মন জানিয়েছেন, চাষিদের প্রথমে জমির মাটি পরীক্ষা করতে বলা হচ্ছে। এর পর বিবেকানন্দ দক্ষিণ ২৪ পরগনার ইনস্টিটিউট অব বায়ো টেকনোলজি নিমপীঠ আশ্রম থেকে মাটির স্বাস্থ্য কার্ড দেওয়া হচ্ছে তাঁদের। রাসায়নিক সারের পরিমাণ কমিয়ে চাষিদের জৈবসারের উপযুক্ত ব্যবহার করার উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কেঁচো সার তৈরির কৌশল শেখানো হচ্ছে চাষিদের। বিভিন্ন রোগে জৈব কীটনাশক ট্রাইকোডার্মা ভিরিডি, সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স এবং পোকার আক্রমণে বিউভেরিয়া ব্যাসিয়ানা, মেটারহিজিয়াম অ্যানিসোপ্লাই, ব্যাসিনাস থুরিনজিয়েনসিস এর ব্যবহার শেখানো হয় নিয়মিতভাবে। কোচবিহারে বৃষ্টিপাত ভালোই। ফলে জলের তেমন সমস্যা নেই। অপর দুই কৃষি বিজ্ঞানী রণজিৎ সরকার ও অভিজিৎ বর্মন জানিয়েছেন, টম্যাটো, বেগুন ও ঢেঁড়শের ফলছিদ্রকারী পোকা, আখের কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকা, লেবুর পাতার খেকো পোকার ক্ষেত্রে ট্রাইকোডার্মা চিলোনিস ব্যবহারের পদ্ধতি চাষিদের নিয়মিত শেখানো হচ্ছে। ধানের ঝলসা রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু পাইরিকুলারিয়া ওরাইজি ও কাণ্ডপচা রোগের জন্মদাতা স্কেরোসিয়াম ওরাইজি জীবাণুদের ক্ষেত্রে বীজ শোধন জরুরি। ১০ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স ১ লিটার জলে ১ কেজি বীজ শোধন করা যাবে।
