বিদ্যার্থীরা মাঝে মধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
দেবিকারানির পরামর্শেই একসময় নিজের নাম পরিবর্তন করেছিলেন দিলীপকুমার। তাঁরই চেষ্টায় ১৯৪৪ সালে বম্বে টকিজ প্রযোজিত ও অমিয় চক্রবর্তী পরিচালিত ‘জোয়ার ভাটা’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন দিলীপ সাহাব। ষাট বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি পঁয়ষট্টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন। শুরুর দিকের কিছু ছবি ফ্লপ হলেও ‘জুগনু’র (১৯৪৭) হাত ধরে দর্শকদের নজরে আসেন। পরের বছর তাঁর দুটি বক্স অফিস সফল ছবি ‘শাহিদ’ এবং ‘মেলা’। তবে নার্গিস এবং রাজ কাপুরের সঙ্গে জুটি বেঁধে ত্রিকোণ প্রেমের ছবি ‘আন্দাজ’ (১৯৪৯) তাঁকে রাতারাতি সর্বভারতীয় স্বীকৃতি এনে দেয়। এরপর একের পর এক হিট ছবি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন। রাশভারী স্বভাব এবং ব্যক্তিত্বশীল মানুষ কিন্তু ১৯৬২ সালের ব্লকবাস্টার ইংরেজি ছবি ‘লরেন্স অব অ্যারাবিয়া’র শেরিফ আলি চরিত্রটির অফার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর অভিনীত বাংলা ছবি তপন সিনহা পরিচালিত ‘সাগিনা মাহাতো’ (১৯৭০) অসম্ভব জনপ্রিয় হয়েছিল। ‘দেবদাস’ এ অভিনয় করেছিলেন মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের সঙ্গে। তাঁর একমাত্র প্রযোজিত ছবি ছিল ‘গঙ্গা যমুনা’ (১৯৬১)। সাতের দশকে আপাত বিরতির পর ‘ক্রান্তি’ (১৯৮১) ছিল দিলীপকুমারের কামব্যাক ফিল্ম। ১৯৯৮ সালে ‘কিলা’ ছবির মাধ্যমে নিজের কেরিয়ারে ইতি টানেন তিনি।
২০০০ সালে কংগ্রেসের তরফে রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন দিলীপকুমার। তবে বিতর্কও ছিল সুপারস্টারের চিরসঙ্গী। কেরিয়ারের শুরুর দিকে মধুবালার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। কিন্তু কয়েকবছর পর সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। তারপর ভগ্নহৃদয় দিলীপের জীবনে প্রবেশ করেন ২২ বছরের ছোট সায়রা বানু। ১৯৬৬ সালে দু’জনে বিয়ে করেন। এরপর ১৯৮১ সালে হায়দরাবাদের আসমা সাহিবার (মতান্তরে রহমান) সঙ্গে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন দিলীপকুমার। কিন্তু সেই বিয়েও টেকেনি। ১৯৮৩ সালে দু’জনের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। সায়রার জীবনে আবার ফিরে আসেন তাঁর প্রিয় ‘কোহিনুর’। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত সায়রা বানুর সঙ্গেই ছিলেন দিলীপ। তাঁরা ছিলেন নিঃসন্তান। কর্মজীবনে বিভিন্ন সমাজ সচেতনতামূলক কাজের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন দিলীপকুমার। তাঁর হাত ধরে বলিউডে জায়গা করে নিয়েছেন বহু প্রতিভা। হিন্দি ছবিতে তথাকথিত ‘বাস্তববাদ’ এর পুরোধা বলা হয় দিলীপকুমারকেই। জীবনে প্রচুর পুরস্কার এবং সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি। ভারতীয় অভিনেতা হিসেবে সবথেকে বেশি সংখ্যক পুরস্কার বিজেতার রেকর্ডও তাঁর ঝুলিতে। ১৯৯১ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মভূষণ এবং ২০১৫ সালে পদ্মবিভূষণ সম্মানে ভূষিত করে। ১৯৯৪ সালে পান দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার। ১৯৯৮ সালে পাকিস্তান সরকার তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান নিশান-এ-ইমতিয়াজে ভূষিত করে। দিলীপকুমারের প্রয়াণে বলিউড তার অভিভাবককে হারাল।