বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যার বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
এই ছবিটা নিয়ে অনেক প্রযোজকের দরজায় দরজায় ঘুরেছেন সাগ্নিক। কিন্তু তাদের চাপিয়ে দেওয়া শর্ত মানেননি বলে ছবিটি তখন করতে পারেননি। কাস্টিংয়ের ক্ষেত্রে তিনি কোনওরকম আপস করতে চাননি। চাপে পড়ে বাজার চলতি নায়ককে নিতে রাজি হননি। ‘সত্যজিৎ রায় নিজেও নতুনদের সঙ্গে কাজ করেছেন। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে কামু মুখোপাধ্যায় এরকম উদাহরণ অজস্র,’ বলছিলেন সাগ্নিক। শেষপর্যন্ত কয়েকজন শুভানুধ্যায়ী এসে পাশে দাঁড়ান। তৈরি হয় সাগ্নিক ও শ্রীপর্ণা মিত্রের প্রযোজনা সংস্থা সাউন্ড মোশন এন্টারটেনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড। এই ব্যানারের প্রথম ছবি ‘মাস্টার অংশুমান’। মূল গল্পের রূপান্তর, সংলাপ ও চিত্রনাট্যও লিখেছেন এঁরা দু’জনে। সহ-প্রযোজক অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (অ্যাডজিট)।
গল্পের প্রেক্ষাপট আজমির আর উদয়পুর হলেও ছবির প্রেক্ষাপট চলে যাচ্ছে দার্জিলিংয়ে। পরিচালকের কথায়, ‘বাংলা ছবির বাজেট অনুযায়ী রাজস্থানে শ্যুট করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। দ্বিতীয় কারণ ব্যাকড্রপের সঙ্গে গল্পটি সে অর্থে জড়িত নয়। অর্থাৎ সোনার কেল্লার মতো নয় যে, আমাকে জয়সলমিরেই শ্যুটিং করতে হবে। আর দার্জিলিংয়ের সঙ্গে সত্যজিৎ রায় তথা ফেলুদার একটা আলাদা যোগসূত্র আছে। প্রথম ফেলুদার কাহিনি ওখানকার প্রেক্ষাপটে। তারপর রয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা ছবিটিও। টেলিফিল্ম ও অঞ্জন দত্তের ছবি ছাড়া বিশেষ করে বড়পর্দায় দার্জিলিংয়ের অনেক জায়গাই এক্সপ্লোর করা বাকি রয়েছে।’ মূল গল্পের কাঠামোর কোনওরকম পরিবর্তন করা হচ্ছে না। তবে, ছবির প্রয়োজনে কিছু নতুন চরিত্রের অন্তর্ভুক্তি করা হয়েছে, বলা যেতে পারে পরিমার্জন করা হয়েছে।
ছবির নামভূমিকায় অভিনয় করছে সামন্ত্যকদ্যুতি মিত্র। স্টান্টম্যান অর্থাৎ ক্যাপ্টেন কৃষ্ণনের চরিত্রে সৌম্য মুখোপাধ্যায়। সৌম্যর ‘প্রেম টেম’ ছবিটি এই সপ্তাহেই মুক্তি পাচ্ছে। তাঁকে এই ছবিতে একদম অন্য চেহারায় দেখা যাবে। ভিলেন জগ্গু হচ্ছেন রজতাভ দত্ত। ফিল্ম ডিরেক্টর সুশীল মল্লিকের চরিত্রে সুপ্রিয় দত্ত, আর প্রোডাকশন কন্ট্রোলার বিশুদার চরিত্রে থাকছেন রবি ঘোষের ছাত্র চঞ্চল ঘোষ। অংশুমানের বাবার চরিত্রে বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়। মিস্টার লোহিয়ার চরিত্রে মুম্বইয়ের কানোয়ালজিৎ সিং। ছবির অন্যতম মহিলা চরিত্র যিনি অনেকদিন পর সিনেমায় কামব্যাক করছেন সেই মিসেস সেনের চরিত্রেই অভিনয় করছেন প্রিয়াঙ্কা। এছাড়াও থাকছে অনেক নতুন মুখ। চিত্রগ্রাহক মুম্বইয়ের প্রবীণ সিনেমাটোগ্রাফার ধরমবীর গুলাটি যাঁর বায়োডেটায় ‘রুদালি’, ‘আর ইয়া পার’-এর মতো ছবি রয়েছে। শিল্প নির্দেশক ইন্দ্রনীল ঘোষ। সম্পাদনায় সুজয় দত্ত রায়। শব্দগ্রহণ অনিন্দিত রায়। কসটিউম ডিজাইন করছেন সন্দীপ রায়ের স্ত্রী ললিতা রায় ও শ্রীপর্ণা। ফাইটমাস্টার জুডো রামু।
‘গল্পের মূল প্লট ছিল বাচ্চা ও স্টান্টম্যানের মধ্যে সম্পর্ক , সাবপ্লট ছিল চুরি। ছবিতেও তাই। সত্যজিৎ রায়ের লেখার মধ্যে তো একটা অদ্ভুত ঢং, একটা অদ্ভুত সারল্য আছে, সেটাই এই ছবিতে থাকছে। গল্প ও তার সারল্যকে এতটুকু আঁচড় লাগতে দেব না। এই ছবিটার একটা প্রি-সেট অডিয়েন্স আছে। একে তো মানিকবাবুর লেখা গল্প নিয়ে ছবি। তাছাড়া এই বছর সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষ। এটাই জন্ম শতবর্ষে তাঁর প্রতি আমার শ্রদ্ধার্ঘ্য,’ আত্মবিশ্বাসী পরিচালক। আগামী মার্চ মাস থেকেই দার্জিলিংয়ে শুরু হয়ে যাবে শ্যুটিং। কিছু ইন্ডোর শ্যুটিং হবে কলকাতায় জুন মাসে।