টেনিদা, ক্যাবলা, প্যালা আর হাবুলের দল আবার অভিযানে নামছে। সেই সঙ্গে বাংলা সিনেমার দর্শক নতুন টেনিদা পেতে চলেছেন। ছবির পরিচালক সায়ন্তন ঘোষাল। ‘যকের ধন’, ‘আলিনগড়ের গোলকধাঁধা’র পর এখন সায়ন্তন ‘সাগরদ্বীপের যকের ধন’ ছবির কাজে ব্যস্ত। তারমধ্যেই টেনিদাকে আবার বড়পর্দায় ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা ছকে ফেলেছেন। টেনিদার চরিত্রে চূড়ান্ত করে ফেলেছেন কাঞ্চন মল্লিককে। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘ঝাউবাংলো রহস্য’ অবলম্বনে তৈরি হবে এই নতুন ছবি। শোনা যাচ্ছে ছবির নাম নাকি ‘টেনিদা অ্যান্ড কোং’। পরিচালক সায়ন্তন অবশ্য বলছেন,‘একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এই ছবির প্রস্তুতি। বলার মতো পরিস্থিতি এখনও আসেনি। সাগরদ্বীপের পোস্ট প্রোডাকশন নিয়েই আপাতত ব্যস্ত আমি। ছবিতে প্রচুর ভিএফএক্স ব্যবহার হবে। ছবিটা খুব শিগগিরই মুক্তি পাবে।’ কিন্তু কাঞ্চন তো টেনিদার চরিত্রে চূড়ান্ত হয়েছেন বলে খবর। এবার হাসতে হাসতে সায়ন্তনের স্বীকারোক্তি, ‘টেনিদাই চূড়ান্ত হয়েছে। বাকি নিয়ে প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। এর বেশি এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।’
এর আগে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই অমর সৃষ্টি নিয়ে তিনটি ছবি ও একটি ধারাবাহিক তৈরি হয়েছে। এবং প্রত্যেকবারই টেনিদার সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন হয় চিন্ময় রায় না হলে শুভাশিস মুখোপাধ্যায়। তবে, দূরদর্শনে সম্প্রচারের জন্য ধারাবাহিকটির শ্যুটিং শুরু হলেও কোনও অজ্ঞাত কারণে মাঝপথেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল শ্যুটিং। স্বাভাবিকভাবেই রাজা সেন পরিচালিত সেই ধারাবাহিক দিনের আলো দেখেনি। টেনিদার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন শুভাশিস। তবে টেনিদা হিসেবে আমরা প্রথম পাই চিন্ময় রায়কে ‘চারমূর্তি’ ছবিতে। উমানাথ ভট্টাচার্যের পরিচালনায় ১৯৭৮ সালে মুক্তি পায় সেই ছবি। এরপর ২০১১ সালে চিন্ময়ের পরিচালনায় মুক্তি পায় ‘চারমূর্তির অভিযান’ যেখানে টেনিদার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন শুভাশিস। ৭ বছর পর আবার শুভাশিসকে টেনিদা করেই পরিচালক রাজশেখর সোম তৈরি করেন আর একটি ছবি। গল্পটি ছিল ‘কম্বল নিরুদ্দেশ’। এই নতুন ছবিটি বড়পর্দায় টেনিদার চার নম্বর অভিযান হতে যাচ্ছে।
গরমের ছুটিতে দলবল নিয়ে দার্জিলিং বেড়াতে যাচ্ছে টেনিদা। সেই সফরে টেনিদার দলকে চকোলেট ছুঁড়ে দেয় মণিহারিতে যার সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল সেই লোকটি। চকোলেটের মোড়কে নীল কাগজে লেখা একটি কবিতা— মিথ্যা যাচ্ছ দার্জিলিং সেখানে আছে হাতির শিং। যাবে তো যাও নীলপাহাড়ি, সেথায় নড়ে সবুজ দাড়ি/হাড়িচাঁচায় কুণ্ডুমশায়ের মুণ্ডু নাচায়। সেই রহস্যময় কবিতা ও সবুজ দাড়িওয়ালা ব্যক্তি নিয়েই ঘনীভূত হয় রহস্য। সম্ভবত এই ছবির প্রযোজনা করছে চ্যাম্পিয়ন মুভিজ, যেই সংস্থা সায়ন্তনের ‘যকের ধন’ ছবিও প্রযোজনা করেছিল। চিত্রনাট্য লিখেছেন সৌগত বসু। এই ছবির শিল্পী তালিকা এখনও চূড়ান্ত নয়। টেনিদার সঙ্গে পটলডাঙা গ্যাংয়ের বাকিদের নির্বাচন অবশ্য অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। যেমন ক্যাবলার চরিত্রটি করার কথা গৌরব চক্রবর্তীর। থিয়েটার অভিনেতা সৌরভ করছেন প্যালার চরিত্র। ছবির ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করতে পারেন সব্যসাচী চক্রবর্তী এমনটাই খবর। যদিও সব্যসাচীর সঙ্গে পাকা কথা হয়নি বলে জানা গিয়েছে। ছবির একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করার কথা অরিন্দোল বাগচিরও। আরও কয়েকটি চমক থাকবে কাস্টিংয়ে এমনটাই খবর। ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে কলকাতায় শুরু হবে শ্যুটিং। মার্চ মাসে উত্তরবঙ্গে দলবল নিয়ে আউটডোর লোকেশনে যাবে পটলডাঙার টেনিদা।
সন্দীপ রায়চৌধুরী