কর্মক্ষেত্রে অশান্তির সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কার শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার: ... বিশদ
শুক্রবার ভোরে সেরিব্রাল অ্যাটাক হয় অতীনবাবুর। তাঁকে পোর্ট ট্রাস্টের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রয়াত সাহিত্যিকের পুত্র শুভাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ওই হাসপাতালেরই চিকিৎসক। তিনি জানান, মস্তিষ্কে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য প্রথম থেকেই অতীনবাবুর শরীরের অবস্থা ছিল উদ্বেগজনক। সিটি স্ক্যান করানোর সময়ই একবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। এরপর এদিন দ্বিতীয়বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে চিকিৎসকদের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে তিনি চলে যান।
দেশভাগ ও স্বাধীনতা-উত্তর বাংলা কথাসাহিত্যে একটি উজ্জ্বল নাম অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সাহিত্যসৃষ্টির একটি প্রধান বিষয় দেশভাগ। প্রথম জীবনে ভাগ্যান্বেষণে জাহাজের চাকরি থেকে স্কুল শিক্ষকতা সবকিছুই করতে হয়েছে তাঁকে। বহরমপুরে থাকাকালীনই তাঁর লেখকসত্তার পরিচয় মেলে। তাঁর প্রথমদিককার লেখা ‘সমুদ্র মানুষ’-এর জন্য মানিক স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছিলেন। ‘দুই ভারতবর্ষ’-এর জন্য বঙ্কিম পুরস্কার ও ২০০১ সালে ‘পঞ্চাশটি গল্প’-এর জন্য পেয়েছিলেন সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার। অতীনবাবুর বিখ্যাত উপন্যাসগুলি হল— ‘নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে’, ‘অলৌকিক জলযান’, ‘ঈশ্বরের বাগান’, ‘মানুষের ঘরবাড়ি’, ‘নগ্ন ঈশ্বর’। এছাড়াও রয়েছে বহু ছোটগল্প। প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে ‘পরমেশ্বরী’।
অতীনবাবুর প্রয়াণে গভীর শোকপ্রকাশ করেন সাহিত্যিক প্রফুল্ল রায়, অমর মিত্র প্রমুখ। প্রফুল্ল রায় তাঁর স্মৃতিচারণায় বলেন, অতীনবাবুর সঙ্গে আমার জীবনের প্রধান মিল হল, আমরা দু’জনেই দেশভাগের শিকার। একসময় তাঁকে প্রচণ্ড দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। খুব সরল, সাদাসিধে মানুষ ছিলেন। ওঁর সঙ্গে আমার পরিচয় পাঁচের দশকে। মজার ব্যাপার, অমৃত পত্রিকায় আমার ‘কেয়া পাতার নৌকা’ উপন্যাসটি শেষ হওয়ার পরই ওঁর ‘নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে’ উপন্যাসটি প্রকাশিত হতে থাকে। এই উপন্যাসটি দেশভাগের গুরুত্বপূর্ণ দলিল। পরে আমার আর অতীনবাবুর এই উপন্যাস দু’টি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানিং ম্যানেজমেন্ট থেকে পুরস্কৃতও হয়েছিল। একে একে আমার সময়কার সবাই চলে যাচ্ছেন। অতীনবাবুও চলে গেলেন শুনে প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে।
আজ রবিবার, কেষ্টপুরের বাসভবন থেকে অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের শেষযাত্রা শুরু হবে বলে প্রয়াত সাহিত্যিকের পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে।