সৎসঙ্গ ও আধ্যাত্মিক ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠে মানসিক তৃপ্তি। কাজকর্মের ক্ষেত্রে নতুন কোনও যোগাযোগ থেকে উপকৃত ... বিশদ
মা-বাবার কথার মাধ্যমে তিতান বুঝেছে এবার ওর রুটিনে চকোলেট আর চিপস খাওয়া কমে যাবে আর ওকে রোজ মায়ের নজরে নজরে থেকে দাঁত ব্রাশ করতে হবে।
এই সমস্যা ইদানীং শুধু তিতান নয়, কমবেশি সব শিশুরই। দাঁতের সমস্যায় তারা স্বাভাবিকভাবেই খুব কষ্ট পায়।
তবে শুধু ব্যথার কষ্টই নয়, ব্যথার চোটে ঠিক মতো খেতে না পারায় তাদের ঠিকমতো পুষ্টি হয় না । ফলে বৃদ্ধিতে প্রভাব পড়ে। শরীরে নানা ভিটামিনের অভাব দেখা যায়। দাঁত থাকতে এমনিই দাঁতের মর্যাদা বুঝি না আমরা। তার উপর অভিভাবকদের ধারণা থাকে দুধের দাঁত তো সেই পড়েই যাবে, তাই এর অত যত্ন না করলেও চলবে। এখানেই হয়ে যায় মস্ত ভুল।
কোথায় ভুল
দুধের দাঁতের যত্ন না নিলে একটা সময়ের পর সেই দাঁতে ক্যাভিটি দেখা দেয়, যাকে চলতি কথায় আমরা ‘দাঁতের পোকা’ বলি। দাঁতে ক্যাভিটির ব্যথা থাকায় সে ভালো করে চিবিয়ে খেতে পারে না। ফলে তার শরীরে খাবারের সিংহভাগ পুষ্টি প্রবেশ করে না। হজমেরও সমস্যা দেখা দেয়। ছোট থেকেই ঠিকমতো দাঁতের যত্ন না নেওয়ার কারণেই এই ক্যাভিটি হয়।
কীভাবে যত্ন
• যতদিন না শিশুর দাঁত উঠছে, ততদিন দাঁতের মাড়ি ও চোয়াল পরিষ্কার আঙুলে অল্প চেপে ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে। কোনও নরম সুতির কাপড় ভিজিয়েও দাঁত পরিষ্কার করে দিতে পারেন। শিশুরা এই সময় যে দুধ খায়, তার আঠালো ভাগ ওই চোয়ালে আটকে থাকে।যত্নের অভাব হলে দাঁত ঠিক মতো উঠবে ন।
• দাঁত ওঠার দিন থেকেই দাঁত পরিষ্কার করতে হবে। তিন বছর বয়স পর্যন্ত অভিভাবকদের উচিত দাঁত ব্রাশ করিয়ে দেওয়া।
নরম ব্রিসলের এমন ব্রাশ ব্যবহার যা ভালোভাবে নড়াচড়া করতে পারে। এতে দাঁতের সবদিক ভালোভাবে পরিষ্কার হয়।
• তিন থেকে ছ’বছর বয়স পর্যন্ত শিশুরা দাঁত ব্রাশ নিজেরা করবে তবে তা অভিভাবকদের তত্ত্বাবধানে।
• প্রতিবার খাওয়ার পর ভালোভাবে মুখ কুলকুচি করে ধুতে হবে। লজেন্স বা চকোলেট জাতীয় খাবার খেলে দাঁত ব্রাশ করা উচিত।
• নিত্য দু’বেলা ভালো ভাবে দাঁত মাজতে হবে।
• বছরে এক বা দু’বার দাঁতের চেক আপ। কোনও সমস্যা ধরা পড়লে তার সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা করা।
দাঁতে পোকার চিকিৎসা
১. চেক আপের সময় দাঁতে কোনও ব্লাড স্পট দেখো গেলে অবহেলা না করে চিকিৎসা করতে হবে। ব্লাড স্পট ফিলিং করে সরিয়ে ফেলা যায়। নইলে সেখান থেকেই কেরিজ বা ক্যাভিটি দেখা দেবে। এটি ব্যথাহীন প্রক্রিয়া।
২. বেশিরভাগ সময়ই দেখা যায় চেক আপের বালাই নেই। কখনও দাঁতে ব্যথা শুরু হলে বাবা-মা শিশুকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসেন। ব্যথা হওয়ার অর্থ ক্যাভিটি বা কেরিজ গভীর হয়ে দাঁতের স্নায়ুকে ছুঁয়ে ফেলেছে। তখন দাঁতের ভালো অংশকে সজীব রেখে ক্যাভিটির অংশকে বাদ দেওয়া হয়। এটা অনেকটা বড়দের রুট ক্যানাল করার মতো। ছোটদের ক্ষেত্রে একে বলে পালমোটমি।
৩. শিশুদের অনেকসময় একাধিক দাঁতে একসঙ্গে কেরিজ দেখা দেয়। একে হলে ‘বেবি বটল সিনড্রোম’। তার অন্যতম কারণ তারা সারারাত স্তন্যপান করতে করতে ঘুমায় বা ফিডিং বোতল মুখে দিয়ে ঘুমায়। ফলে নিপলের চাপে বা বোতলের মুখের সঙ্গে দাঁতের ঘর্ষণে দাঁতে কেরিজ দেখা দেয়।
দেড়-দু’বছরের শিশুর ক্ষেত্রে এই কেরিজ খুবই যন্ত্রণাদায়ক। ফলে প্রথম থেকেই সচেতন হোন। দুধ খাওয়া হয়ে গেলেই দুধের উৎস থেকে শিশুর মুখ সরিয়ে দিন। প্রথম থেকেই দন্ত বিশেষজ্ঞের পুরামর্শ নিয়ে যত্ন নেওয়া খুব দরকার। এতে শিশুর মুখের স্বাস্থ্য ও দাঁত দুইই ভালো থাকবে।