সম্মানরক্ষায় বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। শত্রুর সঙ্গে সম্মানজনক সমঝোতা। বাড়ি ঘর বাহন কেনার যোগ। কর্মে সংস্থাগত ... বিশদ
সহজ মিত্র হতে পারে বড্ড সোজা। সোজাসাপ্টা। সহজপাঠ! কিন্তু সে ভেড়া নয়। পরমেশ্বর ব্যানার্জি ভেড়া হয়েছে। তাকে ভেড়া বানিয়েছে পিশাচ সাধু।
শনিবারের বারবেলায় পরমেশ্বরের অফিসে ঢুকে সহজ বলল, ‘পরমেশ্বরদা তোমাদের ক্যাপ্টেনের কথা কিন্তু মিলল না।’
শনি আর রবিবার পরমেশ্বরের অফিসে ফালতু কেউ থাকে না। এদিন যারা তার অফিসে থাকে তারা সবাই ভালো ভালো মুখ। মুখ না বলে তাদের পরমেশ্বরের মুখোশ বলা যায়। পরমেশ্বরের বারণ আছে, শনি-রবি কোনও কানকাটা, গালে ক্ষুরটানা, অ্যালকোহলে তেলা মুখ— কেউ তার অফিসে আসবে না। আর একটা কথা সবাই জানে, এটা পার্টি অফিস নয়। শনি-রবিবার কোনও পার্টি পলিটিক্স চলবে না এখানে। এদিন পরমেশ্বর সাদা জামা পরে, দু’হাতের দশ আঙুলে ছ’টা সোনার আংটি পরে— লাল নীল সবুজ পাথরের। কারণ, এই দু’দিন পার্টি আসে। ফ্ল্যাট কেনার পার্টি। ব্যাঙ্কের লোক আসে। এই দুটো দিন বিজনেসের। এছাড়াও যাদের জমি আছে, দালালরা শনিবার-রবিবারই তাদের সঙ্গে মিটিং সেট করে। তারাও আসে। তারা যদি এসে পরমেশ্বরকে সোনাহীন দেখে, তারা কী করে বিশ্বাস করবে— এই লোকটা এত টাকার প্রজেক্ট শেষ করবে! এর পকেটে টাকা আছে! নাকি মাছের তেলে মাছ ভাজবে? সবার বিশ্বাস জোগানোর জন্যই পরমেশ্বর এদিন আর্থিকসঙ্গতিপূর্ণ সাউন্ড বিজনেসম্যান সাজে। অফিসের টেবিলে ইংরেজি, বাংলা মিলিয়ে তিনটে খবরের কাগজ রাখে। এদিন সে পরম বা ঈশ্বর নয়, পুরোপুরি পরমেশ্বর ব্যানার্জি। একজন সফল প্রোমোটার অ্যান্ড ল্যান্ড ডেভলপার। মাথার পিছনে লেনিন, মার্কস আছেন তো কী হয়েছে, দু’হাতে ছ’টা নানা রঙের আংটিও তো আছে!
পরমেশ্বর মন দিয়ে খবরের কাগজ পড়ছিল। ঘরে ছিল ল’ইয়ার তরুণবাবু। তিনি কোর্টের কাগজ সাজাচ্ছিলেন। পরশু দুটো ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন আছে। তবে এই দু’দিন সহজের আসায় বাধা নেই। বরং এদিন সহজ থাকলে পরমেশ্বর বেশ খুশি হয়। অনেক সময়ই পার্টিদের সঙ্গে সহজের পরিচয় করিয়ে দেয়, এ ম্যাথমেটিক্সের স্কলার। এর বাবা খুব নামী ইনকাম ট্যাক্স ল’ইয়ার। সহজ সে সবদিনগুলোয় গম্ভীর হয়ে বসে থাকে। আর মনে মনে গালাগাল দেয়— স্কলার, না ছাই —!
ভানুদা থাকলে, পরিচয় হয় রিটায়ার্ড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার। ভানুদা নড়ে না, চড়ে না। হয়তো মনে মনে বলে— ধরণী দ্বিধা হও। তিনি ব্যাঙ্ক কর্মচারী ছিলেন, ম্যানেজার নন। প্রতিবাদ করে কোনও লাভ নেই। চুপচাপ বসে থাকো। আর সত্যিকারের ঈশ্বরকে ডাকে— কেউ যেন চেনা না বেরিয়ে পড়ে, সে যেন না বলে বসে— দুর মশাই, ভানুবাবু আবার কবে অফিসার হলেন!
সহজের কথায় খুব যেন মজা পেল পরমেশ্বর। বলল, ‘তোর সেই তেত্রিশ দিন হয়ে গেল এরমধ্যে! ক্যাপ্টেনের কথা মিলল না তাহলে?’
‘না, একটি পাতাও খসেনি, ঝড় ওঠা তো দূরের কথা।’
‘তুইও তাহলে ক্যাপ্টেনের পাল্লায় পড়েছিলি— একটা একটা করে তেত্রিশ দিন গুনছিলি!’
‘হ্যাঁ, উনি তো তেত্রিশ দিনই বলেছিলেন সেদিন।’
‘ক্যাপ্টেন তোকে দিন বেঁধে দিয়েই ফ্লপ করল। সাদা পাতায় কালো অক্ষর— এই পর্যন্ত ঠিক ছিল। নে অনন্তকাল ভাব, ভেবে যা। কিন্তু তেত্রিশ দিন! মালটাকে ফোন করবি নাকি? ফোন করে বল— তোর তেত্রিশ দিন কেটে গিয়েছে। কোনও সুসংবাদের দেখা মেলেনি, ভাগ্য ফেরা তো দূরের কথা। এবার কী করব?’
সহজ হাসল, বলল, ‘বেচারা ক্যাপ্টেন! উনি যা ইনফরমেশন পেয়েছিলেন তাই বলেছেন। কিন্তু ওই তেত্রিশ দিনটা একটু বেশি হয়ে গিয়েছে। ওভারডোজ! নাহলে ধরা পড়তেন না।’
‘ফোন কর, ফোন কর। ফোন করে বল তোমার ভবিষ্যদ্বাণী মায়ের ভোগে গিয়েছে। খিস্তি দে মাতালটাকে। নাতনির বয়সি মেয়েকে বিয়ে করলে সব অলৌকিক ক্ষমতাই ভোগে যায়।’
‘মেয়েটার কী দোষ! তোমাদের মতো ওই মেয়েটাও হয়তো ফাঁদে পড়েছে। আমার কাছে ওর ফোন নম্বর নেই।’
‘আমার কাছে আছে ওর নম্বর। ওখানে নম্বর লাগা। বল, ক্যাপ্টেনকে ডেকে দিতে, দশ মিনিট বাদে ফোন করছি।’
‘কার নম্বর?’
‘ক্যাপ্টেনের বাড়ির পাশেই একটা টালির গোলা আছে, তাদের ফোন।’
‘কেন ওর বউয়ের তো মোবাইল আছে। নম্বর জানো না তুমি?’
‘তুই কি আমাকে শঙ্কর পেয়েছিস— অন্যের বউয়ের ফোন নম্বর টুকে রাখব। এই নে টালির গোলার নম্বর।’
পরমেশ্বর তার সামনে থাকা ডায়েরি এগিয়ে দেয়। সহজ নম্বর মিলিয়ে ফোন করে। বলে, দশ মিনিট পরে ফোন করছি। ক্যাপ্টেনকে চাই।
দশ মিনিট পরে ফোন করতেই ক্যাপ্টেন ধরে। সহজ খুব ঠান্ডা গলায় বলে— ‘আমি সহজ বলছি, চিনতে পারছেন। সেই সুজিদার সাধে—’
‘হ্যাঁ, হ্যাঁ কেন চিনতে পারব না। স্মৃতিশক্তি দুর্বল হোক তোর। অ্যালঝাইমার্স, ডিমেনসিয়া হোক তোর বাপের। আমি এখনও টাটকা তাজা, মজাদার!’
সহজ হাসল, বলল, ‘সে হোক। তাহলে চিনতে পারছেন? কিন্তু তেত্রিশ দিন হয়ে গেল, আপনার ভবিষ্যদ্বাণী যে মিলল না।’
ক্যাপ্টেন বললেন, ‘এর মধ্যে তেত্রিশ দিন হয়ে গেল! কী আশ্চর্য! কীভাবে দিন যায়!’
‘আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। প্রতিদিন সূর্য ওঠে, অস্ত যায়— একটা করে দিন শেষ হয়। এভাবেই তেত্রিশ দিন হয়েছে। আমার কিছু হয়নি— নো সুসংবাদ!’
ফোনের ওপারে চুপ! চুপ করে আছে ক্যাপ্টেন। সহজ সেই শুকনো মুখটা যেন দেখতে পাচ্ছিল। বলল, ‘আপনি ফ্লপ! আপনার ভবিষ্যদ্বাণী ফ্লপ!’
পিছন দিক থেকে পরমেশ্বর চিৎকার করে, ‘ক্যাপ্টেন, তুমি মায়ের ভোগে।’
নীরবতা ভেঙে ক্যাপ্টেন বলল, ‘আমি হাত গুনি না, কোষ্ঠী বিচার করি না রে ভাই, আমার যা মনে হয়েছিল তাই বলেছিলাম। মেলেনি তো মেলেনি, আমি কী করব?’
‘হ্যাঁ আপনি তো বলেছিলেন লাগে তুক, না-লাগে তাক! পুরো ঢপ!’ সহজের গলায় তীব্র শ্লেষ!
‘হ্যাঁ, পুরো ঢপ, তবু বলব, ওই কালো মানুষজন, প্রমোটার, ভাঙোয়ার, দালালগুলোর সঙ্গে থাকিস না। হুল্লোড়ে মাতিস না। এটা আমি ঠিক বলছি। নিজেকে খরচা করে ফেলিস না।’
সহজ বুঝল ধরা পড়ে লোকটা এবার জ্ঞান দিচ্ছে। এসব কথা বলার জন্য পিশাচ সাধু হতে হয় না। তার বাবা সম্বুদ্ধ মিত্র হলেও হয়। বনি হলেও হয়। সহজ বলল, ‘আপনি যে কথা বলছেন, তা আমার বাবা সম্বুদ্ধ মিত্রও বলেন, আমার এক বন্ধু আছে সে-ও বলে। আপনি নতুন কিছু বলছেন না।’
ক্যাপ্টেন বিষণ্ণ গলায় বলল, ‘বুঝতে পেরেছি, তুই বলছিস আমি তোকে জ্ঞান দিচ্ছি।’ কথাটা বলে চুপ করে গেলেন। বেশ কিছুক্ষণ চুপচাপ। সহজের মনে হল লোকটা ফোন ছেড়ে দিয়েছে, সে বলল, ‘হ্যালো—।’
‘একটা কথা ভাবছিলাম, সারা জীবন ধরে আমি অনেক অনেক খারাপ কথা বলেছি। নতুন কাউকে দেখলে আমার খারাপ কথাগুলোই ভেসে ওঠে। কিন্তু সেটা খারাপ কথা, ভালো কথা নয়। আমি স্পষ্ট কালো ছোপ দাগ দেখতে পাই। আমি ভালো দেখতে পাই না। আমার জীবনে দু-একজন মানুষকে দেখে ভালো ভালো কথা বলতে ইচ্ছে করেছিল। তার মধ্যে তুই একজন। মনে হয়েছিল, আমি ভালো বলতে পারি। ভালো কিছুও দেখতে পারি। আমি শুধু পিশাচ নই, মানুষের হাড় মাংস ছাই ভস্ম শুধু নই। ভুল হয়ে গেল। না রে আমার ভালো দেখার ক্ষমতা নেই। পরি ঠিক চিৎকারই করছে, আমার ক্ষমতা নেই। ভালো বলার ক্ষমতা নেই। পরিকে বলে দে— ক্যাপ্টেন ইজ ডেথ!’
কট করে ফোন কেটে গেল।
সহজ ফোনটা রেখে চেয়ার টেনে বসল। পরমেশ্বর উঠে জানলার সামনে দাঁড়াল। ওর মনটা হঠাৎ অস্থির অস্থির লাগছে। এই হাঁটুর বয়সি ছেলেটা ক্যাপ্টেনকে ধাপ্পাবাজ বানিয়ে দিল। অথচ এত বছর ধরে সে ক্যাপ্টেনকে ফলো করে এসেছে। এলাকায় থাকেনি। এটা নিয়ে অনেক হাসি-ঠাট্টা শুনেছে। ক্যাপ্টেন তো তার পিঠে হাত দিয়ে বলেছিল— পিঠ বাঁচা। তার পিঠ বেঁচেছিল অজিতের প্রাণের বিনিময়ে।
সহজ বলল, ‘তোমার ক্যাপ্টেন যে এত সহজে হার মেনে নেবে ভাবিনি। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল।’
মাথা নাড়ল পরমেশ্বর। ‘লোকটার ক্ষমতা চলে গিয়েছে— ফুল ফর্মে থাকা ক্যাপ্টেনকে দেখিসনি। ও! কী দাপট, তোকে আঙুল গুনিয়ে তেত্রিশ দিন গোনাত, মেনে নিত না। অনেক তর্ক করত, ঝামেলা করত। দেখ আমি রঞ্জন মুখার্জির মতো একজন সিনিয়র লিডারকে দেখেছি, সন্দেহজনক মানুষ ধরে ধরে ক্যাপ্টেনের বাড়ি নিয়ে যেতেন। তার সম্পর্কে কী বলে শুনতেন। শোন তোকে একটা গল্প বলি। এই গল্পটা আমাকে ক্যাপ্টেনই বলেছিল। বিম্বিসার আর অজাতশত্রুর গল্প। অজাতশত্রুকে দেখে বুদ্ধ বুঝেছিল— এই ছেলে পিতা বিম্বিসারের দুঃখের কারণ হবে। বুদ্ধের কথা মিলে যায়। বিম্বিসার ও বুদ্ধকে হত্যা করতে যান অজাতশত্রু। ব্যর্থ হন। বিম্বিসার তাঁকে ক্ষমা করেন। কিন্তু অজাতশত্রু পরে আবার বিম্বিসার আর তাঁর পারিষদদের বন্দি করে মগধের সিংহাসনে বসেন। গৃহবন্দি অবস্থায় বিম্বিসারের মৃত্যু ঘটে। বুদ্ধকেও হত্যা করতে যান। কিন্তু পিতার মৃত্যুর পরে অজাতশত্রুর অনুশোচনা হয়। তিনি বুদ্ধের শরণ নেন।
এই ঘটনাটা আমার জীবনেও ঘটেছে।
কমরেড রঞ্জন মুখার্জির কাজ ছিল, বা খেলা বলতে পারিস— মাঝে মাঝে একে তাকে ধরে নিয়ে যেতেন ক্যাপ্টেনের বাড়ি। দেখতেন ক্যাপ্টেন তার সম্পর্কে কী বলে— একবার একটা খুব কাছের ছেলেকে ধরে নিয়ে গেল ক্যাপ্টেনের কাছে। ওই ছেলেটাকে দেখে ক্যাপ্টেন সাবধান করে দিয়েছিল রঞ্জনদাকে। বলেছিল— এ ছেলে তোমার দুঃখের কারণ হবে। রঞ্জনদা এটা অনেক সময়ই হাসতে হাসতে গল্প করত। বলত, ক্যাপ্টেনের এটা ফলস হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কিছুদিন পরে, সেই ছেলে ওই রঞ্জন মুখার্জিকেই উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। জানাজানি হয়ে যায়। তার বাবাও পার্টি মেম্বার। তিনি গিয়ে ক্ষমা চান। রঞ্জনদা ক্ষমা করে দেন। সেবারও ক্যাপ্টেন গিয়ে রঞ্জনদাকে বলেছিল— ক্ষমা করে ভুল করলে রঞ্জন। ও তোমাকে আবার ছোবল দেবে। ক্যাপ্টেনের কথা কিন্তু মিলে গিয়েছিল। ছেলেটা সত্যি এবার ছোবল দিল। বাণপ্রস্থে পাঠিয়ে দিয়েছিল রঞ্জন মুখার্জিকে। পরে তার অনুশোচনা হয়। ততদিনে দেরি হয়ে গিয়েছে। সে সেই অনুশোচনা নিয়ে ক্যাপ্টেনের কাছে যায়। ক্যাপ্টেন হাসেন, বলেন— তুমিই এখন মগধের সিংহাসনে বসো। সেই ছেলেটা আমি। তখনই ক্যাপ্টেন আমাকে গল্পটা বলেছিল। যা আমার আজও মনে আছে। আমি ক্যাপ্টেনকে বিশ্বাস করি কি না বলতে পারব না, কিন্তু চেষ্টা করি অবিশ্বাস করার, পারি না। তুই পারলি ওর মায়াজাল কেটে বেরিয়ে যেতে।’
হ্যাঁ, সহজ পারল, পিশাচ সাধুর তেত্রিশ দিনের মায়াজাল কেটে বেরিয়ে যেতে।
সহজ আজ সারাদিন ধরে হাসছে, রাস্তায় বসা জ্যোতিষীদের টিয়াপাখিগুলোর মতো মনে হচ্ছে ক্যাপ্টেনকে। খাঁচা থেকে বেরিয়ে এসে একটা কাগজের টুকরো টেনে দিয়ে চলে গিয়েছে। সে কাগজের টুকরোয় লেখা সহজের ভবিষ্যদ্বাণী!
সন্ধেবেলায় পড়াতে গেলে সৃজনী বলল, ‘স্যার আপনার সেই গুড নিউজটার কী হল?’
‘হলে বলব।’
‘এখনও কি সময় হয়নি? গুড নিউজগুলো এত দেরি করে কেন?’
সৃজনীকে পড়িয়ে সহজ গিয়েছিল নচের ঠেকে। নচে বলল, ‘পাখি তো আজ বিকেলে ফুরুত। দাদা এলাকায় নেই, পাহাড়ে। কাল থেকে কোম্পানির মালিক সাজবে সুজিদা।’
খানাপিনা সেরে বাড়ি ফিরতে একটু রাত হয়ে গিয়েছিল। সাধারণত এসময়ে ঠাকুমা, বাবা, মা কারও সঙ্গে দেখা হয় না সহজের। বা বলা যায় দেখতে চায় না। অচলদা দরজা খুলে দিতেই সোজা ওপরে চলে যায়। খাবার ওপরেই দেওয়া থাকে। আজও দরজা খুলে ওপরে চলে যাচ্ছিল সহজ। হঠাৎই বাবার গলার আওয়াজে থমকে দাঁড়াল— ‘শোনো, আজ তোমার একটা চিঠি এসেছে। আমার কাগজের তাড়ার মধ্যে পড়েছিল— এই নাও।’
‘আমার চিঠি?’
‘হ্যাঁ, তোমার নামই তো লেখা। অফিসিয়াল চিঠি, কিন্তু খোলা চিঠি— চিঠিটা আমি পড়েছি। পড়ে খুশি হয়েছি। তাই অন্যের চিঠি পড়ার জন্য দুঃখিত হয়ে সরি জানাতে পারছি না।’
চিঠিটা দু’আঙুলে নিয়ে সম্বুদ্ধ মিত্র হাসছেন।
(চলবে)