Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব   ৮

বাড়িতে সহজের ঠাকুমা বাসবীর দাপট চিরকালের। পান থেকে চুন খসলেই তিনি চিৎকার করে ওঠেন। তাঁর পুত্রবধূর সারাদিনটা কেটে যায় ঠাকুরঘরেই। সহজের বাবা সম্বুদ্ধ মিত্র নামী ল’ইয়ার। তিনি সেই অর্থে বাড়িতে কারও সঙ্গে কথা বলেন না। তবে, দরকার পড়লে সব বিষয়েই রয়েছেন এমন মানুষ। আর রয়েছে সহজের বোন মিমি। লেখক হওয়া নিয়ে বাবার সঙ্গে দ্বন্দ্ব সহজের। তারপর...
 বর্ণিনী স্কুটিটা নিয়ে সটান সহজের গায়ে তুলে দিচ্ছিল। সহজ চমকে উঠেছিল। বনি বলল, ‘কী রে আমাকে দেখে চমকে উঠলি!’ 
‘তোকে নয়, তোর স্কুটিকে দেখে।’ 
‘কেন স্কুটির কী হল?’ 
‘স্কুটির নয়, আর একটু হলে যা হওয়ার আমার হতো।’
‘তোর কী হবে, তোর তো শুনলাম হেব্বি ব্যাপার ক’দিনের মধ্যেই নাকি লটারি লাগিয়ে দিবি!’
‘কে বলল তোকে?’ সহজ হাসল। কিছুটা বোকার মতো। বর্ণিনীও শুনেছে তাহলে।
বনি স্কুটি স্ট্যান্ড করিয়ে তার সামনে এসে বলল, ‘হ্যাঁ তাই তো শুনলাম, আর ক’টা মাত্র দিন, হাতে গোনা। তাই ভাবলাম তোর খোঁজ করি। তোকেই খুঁজতে বেরিয়েছিলাম—’
সহজ হাসল। 
বিকেল ফুরিয়ে এসেছে। আর একটু পরেই সন্ধে নেমে যাবে। আজ দুপুরবেলা মোবাইল অফ করে তেড়ে ঘুমিয়েছে। সকালের ঘুমটা পুষিয়ে নিয়েছে। আজ পড়ানো নেই। বিকেলে বেরিয়ে ভাবছিল রবীন্দ্র লাইব্রেরিতে যাবে। অনেকদিন যায়নি। কিন্তু এখন এখানে বনির সঙ্গে দেখা হয়ে যাবে সে আশা করেনি। বনি কি সত্যি সত্যি তাকে খুঁজতে বেরিয়েছে!
‘তোর মোবাইলটা সুইচ অফ, জানিস?’
‘হ্যাঁ, আমি অফ করে দুপুরে ঘুমিয়েছিলাম। আর খোলা হয়নি বোধহয়।’
‘বোধহয় না, এখনও অফ।’
সহজ পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে অন করে। বলল, ‘কোথায় যাচ্ছিস?’
‘বললাম তো তোকে খুঁজতে বেরিয়েছি।’
‘কেন খুঁজছিস তোর বাবার লকআপে পুরবি।’
‘শোন, লকআপে ঢুকতে গেলে সাহস লাগে, তোর সেটা নেই। তোকে কোনও লকআপ নেবে না।’
এই কথাটা নতুন কিছু নয়, পুরনো। বনি সবসময়ই মনে করে সহজ ভিতু। সহজপাঠ। বনির খুব সাহস। যেখানে যখন তখন যা খুশি করতে পারে। গৌতম ওকে বলেছিল, তোর বাবা পুলিস— তুই জানিস কিছু করলে তোর বাবা তোকে ছাড়িয়ে আনবে, কোনও কেস নেই, তাই তোর এত সাহস। বনি ওকে বলেছিল— তোর বাবা ডাক্তার। তোর দু’ঠ্যাং ভাঙলে তোর বাবা সারিয়ে দেবে, তাহলে ঠ্যাং ভাঙা নিয়ে তোর ভয় পাওয়ার কিছু নেই। চল আমরা দু’জনে মিলে ঝাঁপ দিই এই ছাদ থেকে। ওরা দাঁড়িয়ে ছিল গৌতমদেরই দোতলা বাড়ির ছাদে। গৌতমকে নিয়ে বনি টানাটানি করেছিল দোতলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দেওয়ার জন্য। গৌতম নাকি হাতে পায়ে ধরে মুক্তি পায়। কিন্তু বনি তাতেও থামেনি, ও দোতলা থেকে ঝাঁপ মেরেছিল। বাঁ পা ভেঙে প্রায় দু’মাস পড়েছিল হাসপাতালে। গোড়ালিতে একটা প্লেটও বসাতে হয়েছিল। তারপর থেকে বনিকে সবাই ভয় পায়। গৌতমদের বাড়ির ছাদ থেকে বনি ঝাঁপ মেরেছিল, ওদেরও কম ঝামেলা পোহাতে হয়নি। বনির বাবা দফায় দফায় তাদের থানায় ডেকে নিয়ে গিয়ে জেরা করে। আমার মেয়ে আপনাদের বাড়ির ছাদ থেকে ঝাঁপ দিল কেন? সেখানে আপনার ছেলে ছিল, সে আপনাদের কী বলেছিল? টানাটানি করেছিল? কে কাকে টেনে ছিল? এমনি এমনি ঝাঁপ দিয়ে দিল! আজব ব্যাপার!    
বনি আজব। আজ আর একটু হলে স্কুটিটা সহজের গায়ের ওপর তুলে দিত। ওর বন্ধু-বান্ধব কম। যে ক’জন আছে তারা সবাই বনিকে সমঝে চলে। শেষে নাকি বনিই ওর বাবাকে বলেছিল, সে নিজেই ঝাঁপ মেরেছে— স্রেফ মজা! সাহসটা চেক করে নিল। আর কিছু না।
মজা! সাহসটা চেক করতে কেউ ছাদ থেকে ঝাঁপ দেয়! বনি বলে, পারি কি না দেখে নিলাম।
এই আজব বনির সঙ্গে কিছু আজব লোকের ভাব আছে। তারা সবাই-ই সাহসী। তাদের মধ্যে একমাত্র ভিতু সহজ। তবে সে-ও তো কম আজব নয়।
সহজ বলল, ‘আমি বলে দিতে পারি— তুই আমাকে খুঁজছিলিস না, কোথাও যাচ্ছিলিস। সেটা কোথায়, সেটাও বলতে পারি।’
বনি কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়াল, ‘বল।’
‘বিচিত্রদার বাড়ি।’
এদিকেই বিচিত্র ঘোষালের বাড়ি। কিন্তু সেটা এখান থেকে অন্তত আধ ঘণ্টা হাঁটতে হবে। বাইকে গেলে পাঁচ-সাত মিনিট।
সহজের কথায় বনি হাসল, হাত বাড়াল সহজের গাল টিপে দেওয়ার জন্য। সহজ ঝটতি নিজেকে সরিয়ে নিল। বনি বলল, ‘তোকে ফোন করছিলাম আমার সঙ্গে বিচিত্রদার বাড়ি যাওয়ার জন্য। ভালোই হল, যাবি? বিচিত্রদার শুনলাম খুব জ্বর। একা মানুষ—’  
সহজ বলল, ‘চল।’
বিচিত্র ঘোষাল বিচিত্র মানুষ। তিনি এখনও বিশ্বাস করেন বিপ্লব হবে। ক্ষেত্র প্রস্তুত, শুধু একজন গণনেতার অভাব। এই গণনেতা যে কোনও সময় যে কোনও আন্দোলন থেকে উঠে আসবে।  বনির বাবা এই বিচিত্র ঘোষালকে সহ্য করতে পারে না। তার স্পষ্ট কথা, পুলিস তক্কে তক্কে আছে, যে কোনওদিন লোকটাকে তুলে নিয়ে এসে পেটাবে বলে। অবশ্য লোকটার এত বার পাবলিকের কাছে পেটানি খেয়েও শিক্ষা হয়নি। লাস্ট বার গিয়েছিল লোকাল এক ডক্টর্স চেম্বারে আন্দোলন করতে। সেখানে তাঁর দাবি ছিল— এদিককার বস্তির লোকজন খুব গরিব, আপনারা এদের জন্য ফিজ নেবেন না। আর যদি নেন তবে সেটাও সামান্য। টোকেন মানি। 
এই নিয়ে বিস্তর গোলমাল হয়। যাঁর চেম্বার, যিনি ডাক্তার বসাচ্ছেন তিনি থানা পুলিস করেন। কিন্তু তাতেও বিচিত্র ঘোষালকে দমানো যায়নি। সেইসঙ্গে তার আরও দাবি ছিল— একটু সস্তার ওষুধ দিন। ডাক্তারবাবুরা বিচিত্রদার হাতের প্রেশক্রিপশনগুলো নিয়ে দেখে বলেছিল— এই অসুখে এগুলোই ওষুধ।  বিচিত্রদা নাকি বিনয়ের সঙ্গে ডাক্তারদের বলেছিলেন— একই কম্পোজিশনে এই এই ওষুধ আছে, সেই নামগুলোও লিখে দিন। বিচিত্রদা নাকি গড় গড় করে চেম্বারের ডাক্তারদের কম্পোজিশন বলে দিয়েছিলেন। তাতে ডাক্তাররা মারাত্মক খাপ্পা, তাঁদের জ্ঞান দেওয়া হচ্ছে? যে চোদ্দোজন ডাক্তার ওই চেম্বারে বসা শুরু করেছিল, তারা সবাই একদিনে আসা বন্ধ করে দেয়। 
চেম্বার বন্ধ হয়ে যেতে এতে খাপ্পা হয়ে এলাকার লোকজন বিচিত্রদাকে ধরে একদিন পিটিয়ে দেয়। সেই নিয়েও থানা পুলিস।  বনি নাকি বিচিত্র ঘোষালের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল। লোকাল পুলিস বনির বাবাকে জানিয়েছিল— স্যার আপনার মেয়ে একটা পাগলের সঙ্গে জুটেছে। শেষে মেয়েকে বাঁচাতে বনির বাবা কেসটাও সালটায়। সেই থেকে বনির বাবা খাপ্পা হয়ে আছে বিচিত্র ঘোষালের ওপর। তাতে অবশ্য বনিকে থামাতে পারেনি। তখনই বনির বাবা খোঁজ নিয়ে জানতে পারে বিচিত্র ঘোষাল নাকি পাবলিকের হাতে এই প্রথম মার খেল না, এর আগেও লোকটা জনগণের স্বার্থে লড়তে গিয়ে তিন-চারবার মার খেয়েছে। কিন্তু তাতেও লোকটাকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারেনি।
বিচিত্র ঘোষালকে চেনে সহজ। মানুষটাকে দেখেছে। কোনওদিন তাঁর বাড়ি যায়নি। উনি মাঝে মাঝেই পরমেশ্বরের অফিসে আসেন। এসে সবার শেষে একটা চেয়ারে চুপ করে বসে থাকেন। চা এলে খান, আর খুব মন দিয়ে খবরের কাগজ পড়েন। সিগারেট দিলে প্রত্যাখ্যান করে তাঁর দিকে বিড়ি এগিয়ে দেন।
সহজের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় পরমেশ্বর শান্ত গলায় বলেছিল— বিচিত্রদা সেই বিরল মানুষ যারা এখনও মনে করে বিপ্লব হবে। কখন হবে, কীভাবে হবে কেউ জানে না, শুধুমাত্র একটা স্ফুলিঙ্গ। সেই স্ফুলিঙ্গ থেকে দাবানল হয়ে যাবে।
বিচিত্র ঘোষাল শান্ত চোখে সহজের দিকে তাকিয়েছিলেন। ঝকঝক করছে দু’চোখ। কাঁচা পাকা না-কাটা দাড়ি ভর্তি গালে জানলার গরাদ ডিঙিয়ে রোদ এসে পড়েছে। তিনি ফিসফিস করে বলেছিলেন— আসলে একজন নেতা চাই। যার বুকের ভেতর আগুন আছে, আর যে হবে সংগঠক।
পাশ থেকে কে যেন বলল— কেন পরমেশ্বরদা আছে, হবে না। 
—হবে। নিশ্চিত হতে পারত। কিন্তু ও এখন কোরাপশনে ডুবে গিয়েছে। এখন গণনায়ক হতে হলে ওকে আগুনে শুদ্ধ হতে হবে। সেই আগের পরমেশ্বর আর নেই। যাকে আমি চিনতাম।
বিচিত্র ঘোষালের কথায় পরমেশ্বর হাসে, আর দু’পা নাড়ায়। ওর চোখের ভেতর সরু হয়ে আলো খেলা করে।
কোরাপশন! কোরাপশন! বিচিত্র ঘোষাল মাথা নাড়ান। কেউ না কেউ আসবেই। গণনায়ক! জায়গা ফাঁকা থাকবে না।
প্রফুল্ল সেন কলোনির প্রায় শেষপ্রান্তে বিচিত্র ঘোষালের বাড়ি। কাঁচা নর্দমা টপকে ওরা দু’জনে গিয়ে দাঁড়াল দরজার সামনে। সহজ কড়া নেড়ে ডাকতে যাচ্ছিল, কিন্তু বনি সটান ঢুকে পড়ল বাড়ির ভেতর।
ঘরে চৌকির ওপর বিচিত্র ঘোষাল শুয়ে। মাথার ধারে জলের বোতল, কিছু ওষুধ আর প্লাস্টিকের প্যাকেটে একটা অর্ধেক খাওয়া পাউরুটি।
বনি বলল, ‘কেমন আছ বিচিত্রদা?’
‘একদম ঠিক আছি। সামান্য সর্দি জ্বর। কে তোমাকে খবর দিল?’
‘ক’দিন পড়ে আছ? ডাক্তার দেখিয়েছ?’
‘ডাক্তার লাগবে না, আমি বুঝে গিয়েছি কী হয়েছে। প্যারাসিটামল। ব্যস। খাচ্ছিও তো।’
বনি এগিয়ে গিয়ে বিচিত্র ঘোষালের কপালে গলায় হাত রাখে। ‘ঠিক আছ বলছ, এই তো বেশ জ্বর। একবার ডাক্তার দেখিয়ে নেবে? আমার স্কুটিতে বসতে পারবে? আমি তোমাকে ভবেশ ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতাম।’
বিচিত্র ঘোষাল হাসলেন, ‘ভবেশ প্যারাসিটামল ছাড়া আর কী দেবে? ভিটামিন টনিক দেবে? ওষুধ কোম্পানির থেকে কমিশন খায় তো। আর অ্যান্টাসিড, এই। আমি তো খাচ্ছিই।’
সহজ বলল, ‘হোক, তবু আপনি একবার দেখিয়ে নিন।’
সহজের কথায় ভ্রূ কুঁচকে তাকালেন বিচিত্র ঘোষাল। বনি বলল, ‘আমার বন্ধু। তুমি তো চেনো।’
সহজ বলল, ‘আপনার সঙ্গে পরমেশ্বরদার অফিসে আলাপ হয়েছিল—।’
বিচিত্র ঘোষাল মাথা নাড়লেন। হাত ইশারা করে বসতে বললেন।
বনি বলল, ‘তাহলে কি ডাক্তার দেখাতে যাবে? স্কুটিতে না যেতে পারলে রিকশ ডেকে নিয়ে আসতে পারি।’
মাথা নাড়ালেন বিচিত্র ঘোষাল। ‘আর একদিন, ফিট হয়ে যাব। চিন্তা করো না।’
বনি বলল, ‘কাল আমি তোমায় দুপুরে খাবার দিয়ে যাব। পেট ভরে ভাত খাও ফিট হয়ে যাবে।’
‘চা খাব।’
‘চা!’ বনি এদিক ওদিক তাকাল। বলল, ‘চায়ের ব্যবস্থা আছে, তাহলে আমি করছি।’
‘করতে হবে না। আমাদের বাড়ির পিছন দিকে দোকান আছে। ওদের বলে এলেই হবে।’
‘গুড। সেই ভালো আমি যাচ্ছি।’
‘তুই বোস, আমি যাচ্ছি।’ সহজ উঠে গেল। 
ছোট্ট চায়ের দোকান। সহজ চা, চার পিস বাটার টোস্ট আর দুটো ডিম সেদ্ধর অর্ডার দিয়ে এল। মানুষটা না খেয়ে পড়ে আছে। সেই সঙ্গে কথা বলে এল রাতে বিচিত্রদার ঘরে রুটি আর আলুরদম দেওয়ার জন্য। ফিরে এসে বিচিত্রদাকে বলল, ‘আপনার খাবার রাতে ওরা দিয়ে যাবে।’
সহজের কথা শুনে বিচিত্রদা কিছু বলতে যাচ্ছিলেন, বনি কড়া গলায় ধমক দিল। ‘তোমার কী অসুবিধে বলো তো? আমরা কোরাপটেড নই। হ্যাঁ, আমার বাবা ঘুষখোর। কিন্তু তার ঘুষের টাকা এনে তোমাকে খাওয়াচ্ছি না। তুমি চুপচাপ খেয়ে নেবে।’ বনির ধমক খেয়ে বিচিত্রদা অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে থাকলেন। চা এল, সঙ্গে টোস্ট, ডিম সেদ্ধ। খাবার দেখে বনি খুশি, ‘বাহ্‌ তুই তো বেশ গুছিয়ে এনেছিস।’
বিচিত্র ঘোষাল উঠে বসলেন, খুব আস্তে আস্তে খাবারটুকু খেলেন। 
সহজ বলল, ‘আপনার সঙ্গে পরমেশ্বরদার অনেক দিনের চেনাশোনা?’
ঘাড় নাড়ল বিচিত্র ঘোষাল। ‘পুরনো কমরেড।’
সহজ বলল, ‘ওদের কাছে একজন আসেন— ক্যাপ্টেন। চেনেন?’
হাতের খাবার ফেলে ঠিকরে উঠল বিচিত্র ঘোষাল। ‘ক্যাপ্টেন। চিনি। একটা হারামজাদা। নিজেকে সাধু বলে। আসলে ও পিশাচ!’
‘উনি তো নিজেই নিজেকে পিশাচই বলেন। ভালো কিছু বলেন না।’
‘ও একজন ব্ল্যাকমেলার। ব্ল্যাকমেল করে। কাঁচা মাথায় চিবায়।’
সহজ চুপ করে থাকে।
‘তুমি কি তন্ত্র মন্ত্র মানো?’ বিচিত্র ঘোষাল তীক্ষ্ণ গলায় প্রশ্ন করল। 
‘আমি তন্ত্র মন্ত্রের ব্যাপারে একদমই অজ্ঞ। তাই মানা, না-মানার কোনও প্রশ্ন নেই।’
বিচিত্র ঘোষাল থমথমে মুখে বসে থাকেন। বললেন,  ‘মানুষটা ভালো নয়। ও মানুষকে ভয় ধরায়। ও শরীরের রক্ত শুষে নেয়।’
‘উনি রক্ত শুষে নেয়— এটা আপনি বিশ্বাস করেন?’
‘ওর পাল্লায় যারা পড়ে, তারা আর মানুষ থাকে না, মানুষের খোলসে অমানুষ হয়ে যায়। ভেড়া! ভেড়া বোঝো, ও ভেড়া করে দেওয়ার বিদ্যা জানে।’                 (চলবে)
11th  April, 2021
ছোট গল্প
সম্ভবামি যুগে যুগে

 

মহাপ্রস্থানের পথে অর্জুনের পতনের পর ভীম ও যুধিষ্ঠির আরও উত্তরদিকে এগিয়ে গেলেন। সেই বরফে ঢাকা শ্বেত প্রান্তরে মৃত্যুর অপেক্ষা করতে করতে অর্জুনের মন আসন্ন স্বর্গ না নরক এই দুর্ভাবনার  থেকেও শেষজীবনের পরাজয় ও হতাশায় আচ্ছন্ন হয়ে রইল। তিনি চিরকালের শৌর্যাভিমানী। বিশদ

25th  April, 2021
পিশাচ সাধু
পর্ব  ১০

তেত্রিশ দিন হয়ে গেল অথচ সহজের জীবনে ক্যাপ্টেনের করা ভবিষ্যদ্বাণী মিলল না। পরমেশ্বরের কথা শুনে ক্যাপ্টেনকে ফোন করে সহজ বলে দিল, ‘আপনি ফ্লপ! আপনার ভবিষ্যদ্বাণী ফ্লপ!’ সেদিন রাতেই বাড়ি ফিরে বাবার কাছ থেকে সহজ জানতে পারল, তার নামে একটি অফিসিয়াল চিঠি এসেছে। তারপর... বিশদ

25th  April, 2021
পিশাচ সাধু

 

হঠাৎ বর্ণিনীর সঙ্গে রাস্তায় দেখা হয়ে যায় সহজের। বনির গন্তব্য বিচিত্রদার বাড়ি। সহজকে সঙ্গী করে বনি। জনগণের স্বার্থে লড়াই করতে গিয়ে বহুবার পেটানি খাওয়া বিচিত্র ঘোষাল বিশ্বাস করে, এ দেশে একদিন বিপ্লব হবেই। কথায় কথায় বিচিত্রদাও সহজকে সাবধান করে দেয়, সে যেন পিশাচ সাধুর পাল্লায় না পড়ে। বিশদ

18th  April, 2021
মিষ্টু
উৎপল দাস

রিমা ভিতরে ভিতরে জ্বলে পুড়ে মরে। এ পৃথিবীতে কেউ নেই যে তার অবস্থা বোঝে। মিষ্টুকে বিদায় না করতে পারলে যেন ওর শান্তি নেই।  বিশদ

11th  April, 2021
বিদিশা কি ভানুমতী?
আশিস ঘোষ

বেশি কথা বা শব্দ, আলো এখন ভালো লাগছে না। বিদিশাকে বলতেই, ও টিউব লাইট নিভিয়ে জিরো পাওয়ারের নীল আলো জ্বালিয়ে দিল। জানলার পর্দা হাওয়ায় উড়ছে। বাইরের রাস্তায় গাড়ির শব্দ। বিদিশা আমার দিকে চেয়ে আছে। কিছুই বলছে না। বিশদ

04th  April, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব   ৭
জয়ন্ত দে

দারোগা বাড়ির নিমন্ত্রণে ক্যাপ্টেন হঠাৎ উদয় হল কেন? এ প্রশ্ন সহজের মনে অবিরাম ঘুরপাক খাচ্ছে। নচের সঙ্গে কথা বলে মনে হল, ক্যাপ্টেনকে সেদিন দারোগা বাড়িতে পাঠিয়েছিল পরমেশ্বরের পার্টনার শঙ্কর। সহজের কাছে আস্তে আস্তে পরিষ্কার হতে থাকে পুরো স্কিমটা। এদিকে, ক্যাপ্টেনের ভবিষ্যদ্বাণীর আতঙ্ক থেকে কিছুতেই বেরিয়ে আসতে পারছে না নচে। তারপর... বিশদ

04th  April, 2021
দহ
হামিরউদ্দিন মিদ্যা

ঘুম-জড়ানো চোখেই ধড়ফড় করে উঠে দাঁড়াল নুরু। মাটি থেকে গামছাটা তুলে, ধুলো ঝেড়ে কোমরে বাঁধল। বাঁ-হাতে নিল পাচন লাঠিটা। গোরু-মোষের দলটা সামনেই চড়ছে। মোষগুলোর দিকে চেয়ে দেখল, নিবারণ ঘোষের লেজকাটা মোষটা নেই। বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল নুরুর। পাগলের মতো ছুটতে লাগল দহের দিকে। বিশদ

28th  March, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস  পর্ব   ৬
জয়ন্ত দে

সহজের একটিমাত্র টিউশন টিকে আছে। মনোতোষ স্যারের কোচিং ক্লাস সে ছেড়ে দিয়েছে। সৃজনীকে পড়ানোর সময় মুখ ফস্কে সহজ বলে ফেলে, তার ভাগ্য খুলতে আর ঊনত্রিশ দিন বাকি। অথচ, প্রেমিকা বর্ণিনীকেও সে ক্যাপ্টেনের ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে কিছু বলেনি। এদিকে, সহজকে পরমেশ্বর সাবধান করে, ‘পিশাচের ফাঁদের পড়িসনি।’ তারপর... বিশদ

28th  March, 2021
ভুল ফোন
কৌশানী মিত্র

ছেলেটি নরম। মেয়েটি কঠিন। ছেলেটির চোখে সারাক্ষণ জল টলটল করছে। আসলে জন্মানোর পর শুধু লড়াই করতে করতে দু-দণ্ড বসে কাঁদতে পারেনি কোনওদিন। এখন যেটুকু যা আছে তাইই ইমনের সামনে উপুড় করে দিতে পারলে যেন বেঁচে যায়। বিশদ

21st  March, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব   ৫
জয়ন্ত দে

নচে রেগে গিয়ে ক্যাপ্টেনকে রিকশসুদ্ধু খালে ফেলে দেওয়ার সুপারি দিল নেত্রকে। স্ত্রীকে নিয়ে নেত্রর রিকশয় উঠলেন ক্যাপ্টেন। রিকশ এগতে থাকে আর স্বামীকে একের পর এক অনুযোগ করতে থাকে বঁড়শি। তারপর... বিশদ

21st  March, 2021
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে

পিশাচ সাধু ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন সহজের। নচেও তার ভবিষ্যৎ জানতে চায়। সাধু বলেন, ‘তুই অপঘাতে মরবি।’ শুনে প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত নচে। তারপর... বিশদ

14th  March, 2021
তন্ত্রমন্ত্র
সৌমিত্র চৌধুরী

ঠক ঠক ঠক। অন্ধকার ঘর। মিনিট পাঁচেক হল কারেন্ট চলে গিয়েছে। নিজের বিছানায় চাদর মুড়ি দিয়ে বসে আছি। তবুও মশার কামড়। স্বস্তিতে বসতেও পারছি না। তার মধ্যে দরজায় টোকা।  বিশদ

14th  March, 2021
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে 

দারোগাবাড়ির ঠেকে সহজকে দেখে হঠাৎই ক্যাপ্টেন বেমক্কা বলে বসলেন— ‘তুই ভুল করেছিস পরি! এ ছেলে সহজ নয়, এ ছেলে কেন তোর এখানে? বড্ড ভুল করছিস!’ পরমেশ্বর অবাক হয়ে জানতে চাইল, ‘কেন, কী ভুল করলাম ক্যাপ্টেন?’ তারপর... 
বিশদ

07th  March, 2021
পিশাচ সাধু 
জয়ন্ত দে

পরমেশ্বরের সঙ্গে দারোগা বাড়ির ভূতুড়ে ঠেকে এসেছিল সহজ। হুল্লোড়ের মাঝে সেখানে হঠাৎই হাজির হলেন ক্যাপ্টেন। যিনি নিজেকে পিশাচ সাধু বলেন। তিনি সহজকে দেখে বললেন, তুই এখানে কেন? তারপর... 
বিশদ

28th  February, 2021
একনজরে
ভারতে করোনার সংক্রমণ ক্রমশ বাড়ছে। আর তার ফলে অক্টোবরে-নভেম্বরে দেশের মাটিতে হতে চলা টি-২০ বিশ্বকাপ ঘিরে তৈরি হয়েছে অনিশ্চিয়তা। কিন্তু টিম ইন্ডিয়ার কোচ রবি শাস্ত্রী ...

২০১৬ সাল থেকে পাঁচ বছর মন্ত্রীহীন ছিল মালদহ জেলা। এবার তৃণমূল কংগ্রেস জেলায় ভালো ফল করায় মালদহবাসী আশায় বুক বাঁধছেন। জেলার অন্তত এক, দু’জন বিধায়ক ...

আরামবাগের মানুষ মুখ ফেরালেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের ধারা বজায় থাকবে। মানুষের পাশে থেকে কাজ করার গতি থামবে না। এমনটাই দাবি আরামবাগ মহকুমার তৃণমূল নেতৃত্বের। এবার ...

হাসপাতালে অক্সিজেন না পেয়ে ফের মর্মান্তিক মৃত্যু দেখল দেশ। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশের পর এবার কর্ণাটক ও অন্ধ্রপ্রদেশ। এই দুই রাজ্যে অক্সিজেন না পেয়ে মোট ৩২ জন ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

সম্মানরক্ষায় বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। শত্রুর সঙ্গে সম্মানজনক সমঝোতা। বাড়ি ঘর বাহন কেনার যোগ। কর্মে সংস্থাগত ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৭৯৯: বৃটিশ ভারতের মহীশূর রাজ্যের শাসনকর্তা টিপু সুলতানের মৃত্যু
১৮৪৯:- বাঙালি নাট্যকার, সঙ্গীতস্রষ্টা, সম্পাদক ও চিত্রশিল্পী জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম
১৮৮৬: হে মার্কেট স্কোয়ার হিংসা: শিকাগো, ইলিনয় সহ বিভিন্ন শহরে শ্রমিক মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে সচেষ্ট পুলিসকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ, ৮ জনের মৃত্যু, আহত ৬০, জনতাকে লক্ষ্য করে পুলিসের গুলি
১৯১৯: চার মে আন্দোলন: ভার্সাই চুক্তির প্রতিবাদে চীনের বেজিংয়ে তিয়েন আন মেন স্কোয়ারে ছাত্র জমায়েত
১৯৫৩: ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি গ্রন্থের জন্য পুলিৎজার পুরস্কার পেলেন আর্নেস্ট হেমিংওয়ে
১৯৫৯: প্রথম গ্র্যামি পুরস্কার দেওয়া হল
১৯৭৯: ব্রিটেনের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হলেন মার্গারেট থ্যাচার  



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭৩.১৯ টাকা ৭৪.৯০ টাকা
পাউন্ড ১০০.৮৬ টাকা ১০৪.৩৭ টাকা
ইউরো ৮৭.৬৮ টাকা ৯০.৮৫ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪৭, ৭০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৫, ২৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৫, ৯৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬৯, ২০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬৯, ৩০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

২০ বৈশাখ, ১৪২৮, মঙ্গলবার, ৪ মে ২০২১। অষ্টমী ২০/৩৬ দিবা ১/১১। শ্রবণা নক্ষত্র ৮/২০ দিবা ৮/২৬। সূর্যোদয় ৫/৬/১৩, সূর্যাস্ত ৬/০/৩৭। অমৃতযোগ দিবা ৭/৪১ গতে ১০/১৭ মধ্যে পুনঃ ১২/৫২ গতে ২/৩৪ মধ্যে পুনঃ ৩/২৫ গতে ৫/৯ মধ্যে। রাত্রি ৬/৪৫ মধ্যে পুনঃ ৮/৫৮ গতে ১১/১১ মধ্যে পুনঃ ১/২৫ গতে ২/৫৩ মধ্যে। বারবেলা ৬/৪৩ গতে ৮/২০ মধ্যে পুনঃ ১/১০ গতে ২/৪৭ মধ্যে। কালরাত্রি ৭/২৩ গতে ৮/৪৬ মধ্যে।  
২০ বৈশাখ, ১৪২৮, মঙ্গলবার, ৪ মে ২০২১। অষ্টমী সন্ধ্যা ৫/৪৮। শ্রবণা নক্ষত্র দিবা ১/৫। সূর্যোদয় ৫/৭, সূর্যাস্ত ৬/২। অমৃতযোগ দিবা ৭/৩৭ গতে ১০/১৪ মধ্যে ও ১২/৫১ গতে ২/৩৬ মধ্যে ও ৩/২৯ গতে ৫/১৩ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/৪৯ মধ্যে ও ৯/০ গতে ১১/১১ মধ্যে ও ১/২২ গতে ২/৪৯ মধ্যে। বারবেলা ৬/৪৪ গতে ৮/২০ মধ্যে ও ১/১১ গতে ২/৪৮ মধ্যে। কালরাত্রি ৭/২৫ গতে ৮/৪৮ মধ্যে।  
২১ রমজান। 

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
করোনা আক্রান্ত দীপিকা পাড়ুকোনও
বাবা, মা ও বোনের পর এবার নিজেরও করোনা আক্রান্তের রিপোর্ট ...বিশদ

09:13:50 PM

হলদিয়ায় পচাগলা দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য
খাল থেকে এক ব্যক্তির পচা-গলা দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল ...বিশদ

06:58:00 PM

দেশে এবার সিংহরাও আক্রান্ত করোনায় !
মানবদেহের পর এবার দেশে সিংহদের দেহেও করোনা থাবা বসিয়েছে বলে ...বিশদ

05:16:13 PM

রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, ডিজির সঙ্গে বৈঠকে মমতা
সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ ও কোভিড নিয়ে বৈঠকের জন্য রাজ্য পুলিসের ডিজি, ...বিশদ

05:07:00 PM

১৮ ঊর্ধ্বদের টিকাকরণ শুরু রাজ্যে
দেশজুড়ে ভ্যাকসিনের আকালের মধ্যেই রাজ্যে শুরু হয়ে গেল ১৮ ঊর্ধ্বদের ...বিশদ

04:50:36 PM

করোনায় আক্রান্ত প্রকাশ পাড়ুকোন
করোনায় আক্রান্ত ভারতীয় ব্যাডমিন্টনের কিংবদন্তি খেলোয়াড় প্রকাশ পাড়ুকোন। গত শনিবার ...বিশদ

04:48:24 PM