Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

নানা রঙের দশভুজা
দেবযানী বসু 

মহিষাসুরমর্দিনী দেবী দুর্গা! বেদ, পুরাণ, তন্ত্র, মহাকাব্য—সর্বত্র তাঁর মহিমার জয়গান। মতভেদও কম নেই। আর তা শুধু আবির্ভাব নয়, গাত্রবর্ণ নিয়েও। বেদ-পুরাণের বর্ণনায় দেবী গৌরবর্ণা, স্বর্ণবর্ণা, পীতবর্ণা, অতসীবর্ণা। এমনকী শিউলি ফুলের বোঁটার রঙের দুর্গার কথাও জানা যায়। কিন্তু সর্বদা এমন রূপেই মা আসবেন, তা হয় না। কখনও স্বপ্ন, কখনও দুর্ঘটনা, কিংবা পটুয়ার ভুলে মহিষাসুরমর্দিনী হয়ে উঠেছেন বিচিত্র-বর্ণা। 

একই মূর্তিতে দুর্গা ও কালী  সুভাষগ্রামের ঘোষ বাড়িতে
জয়ন্তী মঙ্গলা কালী ভদ্রকালী কপালিনী
দুর্গাশিবা ক্ষমাধাত্রী স্বাহা স্বধা নমস্তুতে।।
দুর্গা ও কালী—শক্তির দুই রূপ। ভিন্ন ভিন্ন নাম ও মূর্তিতে বিশ্বপ্রসবিনী মহাশক্তি মহামায়ার প্রকাশ। দেবী দুর্গা রজঃগুণের প্রতীকরূপে তপ্তকাঞ্চন বর্ণা। দশহাতে দশপ্রহরণ। তিনি শাকম্ভরী, উজ্জ্বলকান্তি, শতনয়না। তিনি একাধারে সিংহবাহিনী, অসুরদলনী আবার শান্তা, সমাহিতা, বরদাত্রীও। অন্যদিকে দেবী কালী কৃষ্ণবর্ণা, নগ্নিকা, রক্তচক্ষু, আলুলায়িত কেশদাম, হাতে খড়্গ, অসুর মুণ্ডধারিণী, ভীষণ দর্শনা। আর যে মূর্তিতে মহামায়া দু’টি রূপেই প্রকট, তিনি হলেন অর্ধকালীদুর্গা। বাংলার এক কোণে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুভাষগ্রামে শারদলক্ষ্মী আরাধ্য এই রূপেই।
সময়টা ১৮৬৪ সাল। পূর্ববঙ্গের ঢাকা জেলার বিক্রমপুর। মেদিনীমণ্ডলের জাঁদরেল দারোগা হরিকিশোর ঘোষ এক রাতে স্বপ্নাদেশ পেলেন জগজ্জননী মায়ের। তিনি পুজো পেতে চান এই ভিটেয়। পরদিন থেকে শুরু হল পুজোর তোড়জোড়। শুভ তিথি দেখে প্রতিমা গড়ার সূচনা করলেন পটুয়ারা। কিন্তু শেষ পর্যায়ে এসে তাঁরাও অবাক। কারণ, হলুদ রং করতেই প্রতিমা ডানদিকের অংশ বদলে যাচ্ছে ঘোর কৃষ্ণ বর্ণে। হরিকিশোরের মনে পড়ল, তাঁর স্বপ্নের দেবীমূর্তিও তো ঠিক সাধারণ ছিল না। সঙ্কটের এই মুহূর্তে এগিয়ে এলেন কুলপুরোহিত। উপদেশ দিলেন অর্ধকালী অর্ধদুর্গা রূপে দেবীর আরাধনা করার। সেইমতো তড়িঘড়ি সারা হল প্রস্তুতি। মহাসপ্তমীর সকালে ঢাকে কাঠি পড়ার শব্দ শুনে গোটা এলাকার বাসিন্দারা এসে ভিড় করেছিল ঘোষবাড়িতে। 
দেশভাগের পর সেই ঘোষ বংশের উত্তরপুরুষরা চলে আসেন এপারে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুভাষগ্রামে। সঙ্গে আনেন মায়ের বলিদানের খড়্গ আর ওপারের পুজোর বেদির একমুঠো মাটি। এরপর অনেক প্রতিকূলতা এসেছে,   কিন্তু ঘোষবাড়ির দুর্গাপুজোর ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়েনি কখনও। স্থায়ী মণ্ডপে একচালার প্রতিমা। দেবীর শরীরের ঠিক মাঝ বরাবর চুলচেরা ভাগ। ডানদিকে অমানিশারূপী দেবী কালী এবং বামদিকে তপ্তকাঞ্চন বর্ণা দেবী দুর্গা। দশ হাতে দশ প্রহরণধারিণীর ডান পা সিংহের পিঠে আর বাম পা অসুরের স্কন্ধে স্থাপিত। দেবী কালীর হাতের শূলে বিদ্ধ মহিষাসুর। আরও একটি বৈশিষ্ট্য এই প্রতিমার। চিরকুমার কার্তিক এখানে দেবীর ডানপাশে। বিঘ্নবিনাশক গণেশ বামদিকে। পুত্র-কন্যা সহ জগন্মাতার এই রূপই স্বপ্নে দেখেছিলেন হরিকিশোর।
এই পুজোর আচার-বিধিও খানিক ভিন্ন। বৃহৎনান্দীকেশ্বর পুরাণ মতে চলে আরাধনা। ললিতাসপ্তমী তিথিতে হয় কাঠামোপুজো। ঠাকুরদালানেই প্রতিমা তৈরি হয়। সপ্তমীর সকালে চক্ষুদান ও প্রাণপ্রতিষ্ঠার পর হয়ে থাকে মহাস্নান। মায়ের প্রতীকরূপে দর্পণকে স্নান করানোর রীতি এখানে। লাগে তিন সমুদ্রের জল, গঙ্গার জল, দুধ, শিশির, মধু ইত্যাদি ১০৮ রকমের জল। পুজোর তিনদিনই একটি করে আখ, চালকুমড়ো বলি হয়। নবমীর দিন থাকে শত্রু বলি। এটি ষড়রিপুর প্রতীক। চালের পিটুলি দিয়ে মানুষের আকৃতি গড়ে, সেটিকে কচু পাতায় মুড়ে বলি দেওয়া হয়। অন্নভোগ দেওয়ার রীতি নেই এখানে। পরিবর্তে সাড়ে বারো কেজি কাঁচা চালের নৈবেদ্য হয়। দশমীর ভোগে থাকে বোরো ধানের চাল, কচুর লতি, শালুক-শাপলা শাক, আমড়া ইত্যাদি।  দশমীর সকালে দর্পণ বিসর্জন হয়। সন্ধ্যাবেলা দেবী বরণের পর বাড়ির পুকুরেই হয় প্রতিমা বিসর্জন।
আভিজাত্য ও বনেদিয়ানা না থাকলেও নিষ্ঠাভরে আজও দুর্গাপুজো হয় সুভাষগ্রামের ঘোষবাড়িতে। এই অঞ্চলের মানুষের বিশ্বাস দেবী অত্যন্ত জাগ্রত। দূরদূরান্ত থেকে তাঁরা আসেন দর্শন করতে। পুষ্পাঞ্জলির সময়ে একত্রে উচ্চারণ করেন মাতৃমন্ত্র... 
‘নমো নমো কালী কালী মহাকালী, কালিকে পাপনাশিনী 
অর্ধকালীরূপিনী দুর্গে, দুর্গে প্রণতস্মি প্রসিদমে।।’

চণ্ডীপাঠে ভুল, ক্রোধে লাল দুর্গা  নবদ্বীপের ভট্টাচার্য বাড়িতে 
সাড়ে তিনশো বছরের বেশি সময় ধরে রক্তবর্ণ দুর্গাপ্রতিমার পুজো হয়ে আসছে নবদ্বীপের যোগনাথতলার ভট্টাচার্য পরিবারে। যদিও নদীয়া নয়, এই পরিবারের আদি নিবাস পূর্ববঙ্গের ঢাকা জেলার প্রাচীন মিতরায় গ্রামে। একসময় অতসীবর্ণা দেবীরই আরাধনা করতেন তাঁরা। কিন্তু একটি অঘটন বদলে দেয় প্রতিমার রং।
ভট্টাচার্য পরিবার শাস্ত্রজ্ঞ ব্রাহ্মণ। বংশের আদি পুরুষ রাঘবরাম ভট্টাচার্য চণ্ডীপাঠ করতেন নিয়মিত। একবার পুজো চলছে আপনগতিতে। দেবী দুর্গা দক্ষিণমুখী। আর রাঘবরামবাবুর পুত্ররা বসে আছেন পূর্বমুখী হয়ে। হঠাৎ বিঘ্ন ঘটল চণ্ডীপাঠে।  সর্বসমক্ষে পিতার মন্ত্রোচ্চারণের ভুল ধরিয়ে দেন পুত্র রামেশ্বর। এরপর যা ঘটে, তা নিয়ে অবশ্য মতভেদ রয়েছে। একটি মতানুসারে রামেশ্বরের পাণ্ডিত্যে বিশেষ আননন্দিত হন দেবী। কাঠামো সমেত ঘুরে গিয়ে তিনি পশ্চিমমুখী অর্থাৎ রামেশ্বরের মুখোমুখি হন। আনন্দে তাঁর মুখের বর্ণ হয়ে ওঠে লাল। অন্যমতে পুত্রের আচরণে মৃত্যুর অভিশাপ দেন ক্ষুব্ধ পিতা। অপমানে দেবীর শরীর রক্তবর্ণ ধারণ করে। অভিশাপের ফলে দশমীর দিন রামেশ্বরের মৃত্যু হয়। সেই থেকে এই পরিবারের লাল দুর্গারই পুজোর প্রচলন। দেবীর অধিষ্ঠান হয়ে ওঠে পশ্চিমমুখী। এবং চণ্ডীপাঠ চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়।
নদীর গ্রাসে গ্রাম বিপন্ন হওয়ায় ভট্টাচার্য পরিবার এপারে চলে আসেন। সেও ১০০ বছরেরও বেশি আগে। সেই থেকে লাল দুর্গাও পুজো নিচ্ছেন নদীয়ার নবদ্বীপে। রক্তবর্ণ প্রতিমার পরনে রক্তবর্ণ বস্ত্র। এখানেও কার্তিক-গণেশের অবস্থান উল্টো। অন্নভোগেও রয়েছে বৈচিত্র্য। প্রতিদিন মাছ ভোগ হয়।  নবমীতে দেবীর ভোগে থোড় ও বোয়াল মাছ দেওয়ার মতো পুরনো প্রথা চলে আসছে।  
এই পুজোর সঙ্গে আদিপুরুষ রাঘবরামের কতটা আত্মিক সম্পর্ক, তা বোঝা যায় একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে। ভট্টাচার্য বংশের নিয়ম, কোনও অব্রাহ্মণকে দীক্ষা দেওয়া যাবে না। সেই নিয়ম ভাঙেন রাঘবরাম। তৎকালীন ব্রাহ্মণ সমাজ তাঁকে বর্ষপূরশ্চরণ বা ১২ বছর তীর্থে থেকে প্রায়শ্চিত্তের নিদান দেন। কামাখ্যার গৌরীকুণ্ডে চলে যান রাঘবরাম। চার বছর পর, দুর্গাপুজোর ঠিক আগে এক কুমারী মেয়ে এসে তাঁকে বলে যান, বোয়াল মাছ দিয়ে থোড়ের তরকারি খেয়ে এলাম। রাঘবরাম বুঝলেন, মা তাঁকে পুজোয় ডেকেছেন। তিনি চলে আসেন বাংলাদেশে। বাড়ির পুজো শেষে আবার ফিরে যান।

দগ্ধ প্রতিমায় কৃষ্ণবর্ণ দুর্গা ক্যানিংয়ের ভট্টাচার্য বাড়িতে
আজ থেকে ৪৩৩ বছর আগের ঘটনা। বাংলাদেশের ঢাকা জেলার বিক্রমপুরে, বানিখারা গ্রামের জমিদার ছিলেন রামরাজা ভট্টাচার্য। বংশের প্রথম দুর্গাপুজোর প্রচলন হয় তাঁর হাতেই। দেবীর গায়ের রং ছিল বাসন্তী। কিন্তু শুরুতেই অঘটন। মুহূর্তের অসতর্কতায় ঘটে যায় চরম দুর্ঘটনা। পুজোর পর মন্দিরের দরজা বন্ধ করতে ভুলে গিয়েছিলেন পুরোহিত। একটি কাক সেখানে ঢুকে প্রদীপ থেকে জ্বলন্ত সলতে নিয়ে উড়ে যায়। তারপর গিয়ে বসে মন্দিরের চালে। সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায় শনের ছাউনি দেওয়া দুর্গামণ্ডপে। গোটা মণ্ডপ ভস্মীভূত, পুড়ে কালো হয়ে যায় প্রতিমা। গোটা ভট্টাচার্য পরিবারে বিষাদের ছায়া। আতঙ্কও চরমে। এমন সময় এল স্বপ্নাদেশ— বাসন্তী রং নয়, দেবীর গাত্রবর্ণ হবে তামাটে আর মুখ ঘোর কৃষ্ণবর্ণ। এমন শিহরণ জাগানো  রূপেই পুজো হবে দুর্গার। সেই থেকে এই রূপ চলে আসছে পরিবারে।  দেশভাগের পর ভট্টাচার্য পরিবার চলে আসে পশ্চিমবাংলার ক্যানিংয়ে। কিন্তু  প্রতিমার রূপ বদল হয়নি।
শুধু দেবীমূর্তি নয়, এই পুজোর নিয়মও বিচিত্র। লোকমুখে শোনা কথা আজও বিশ্বাস করেন ভট্টাচার্য পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম। তাই তো কাজ শেষের পর পোটোদের (পটুয়া) এই প্রতিমার মুখদর্শন একেবারে নিষিদ্ধ। এই নিয়মের নেপথ্যেও রয়েছে দেবীর স্বপ্নাদেশ। একবার এক পটুয়া জোর করে প্রতিমার মুখ দেখে ফেলায় বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন। সেই থেকে কঠোরভাবে মেনে চলা হয় এই নিয়ম। তন্ত্রমতে পুজো হওয়ায় কৃষ্ণবর্ণা দুর্গার আরাধনায় পশুবলির চল ছিল। এখন বলি বন্ধ। তবে নবমীর দিন চালের পিটুলির মূর্তি দিয়ে তৈরি শত্রুবলির নিয়ম আছে। চালবাটা থেকে মূর্তি তৈরি, সবটাই করতে হয় বাঁহাতে। বলির পর মূর্তিটিকে তিন টুকরো করে পুঁতে দেওয়া হয় মাটিতে।

ভদ্রকালী রূপে বেলেঘাটার কালো দুর্গা 
দেবী দুর্গার ধ্যানমন্ত্র অনুযায়ী মায়ের গাত্রবর্ণ অতসী পুষ্পবর্ণের মতো। বেশিরভাগ মাতৃ প্রতিমাই তার প্রমাণ। কিন্তু অনেকেই জানেন না, হিমালয়ের পাদদেশে তরাই অঞ্চলের কোথাও কোথাও কৃষ্ণবর্ণের অতসীপুষ্প ফোটে, যা অতি দুষ্প্রাপ্য। দেবীর বোধহয় কখনও সাধ জেগেছিল এমন কৃষ্ণবর্ণা রূপে আবির্ভূতা হতে। তাই তিনি স্বপ্নাদেশ দিয়েছিলেন পাবনা জেলার হরিদেব ভট্টাচার্যকে। এমনকী এক সাধুর হাত দিয়ে বিশেষ পুঁথিও পাঠিয়েছিলেন।
এই পুজোর ইতিহাস ২৯২ বছরের। ওপার বাংলার পাবনা জেলার স্থলবসন্তপুরের জমিদার ছিলেন হরিদেব ভট্টাচার্য। সেই জমিদার বাড়িতেই প্রথম আবির্ভাব ঘটে কৃষ্ণবর্ণা মা দুর্গার।
নাটোরের রানি ভবানী স্থলবসন্তপুরের জমি-জায়গা প্রদান করেছিলেন হরিদেববাবুকে। তার আগে থেকে এই পরিবার ছিল কালীসাধক। রানি ভবানীর আমলেই হরিদেববাবু শুরু করেন দুর্গাপুজো। কারণ, মা যে বারবার তাঁর স্বপ্নে দেখা দিচ্ছেন। কিন্তু স্বপ্নে দেবী এমন বিচিত্র কৃষ্ণবর্ণ কেন? উত্তর খুঁজতে ভাটপাড়া, কাশীর পণ্ডিতদের সঙ্গে কথা বললেন তিনি। কিন্তু কোনও মতই মনঃপূত হল না। একদিন আনমনা হয়ে কাশীর গঙ্গার ঘাটে বসে আছেন। এমন সময় এক সাধু এসে বললেন, ‘কেয়া হুয়া বেটা?’ যাবতীয় বৃত্তান্ত শুনে সাধু জানালেন, ভদ্রকালীরূপে পুজো করো মায়ের। দিলেন তালপত্রে লেখা পুঁথি, যার সংক্ষিপ্ত রূপ অনুসরণ করে আজও পুজো হয় দেবী দুর্গার।
দেশভাগের পর কলকাতার বেলেঘাটা অঞ্চলে চলে আসে ভট্টাচার্য পরিবার কিন্তু পুজোয় ভাটা পড়েনি কখনও। শlক্তমতে আরাধনা হয়। আগে বলিদান প্রথা থাকলেও এখন সেই প্রথা বন্ধ। নবমী ও সন্ধিপুজোতে বলি দেওয়া হয় চালকুমড়ো। সকালে নিরামিষ আর রাতে আমিষ ভোগে মাকে আপ্যায়ন করে গোটা পরিবার। সন্ধিপুজোতে থাকে মাছভাজা। দশমীতে পান্তাভাত, দই, কলা। তারপর শুরু হয় বিসর্জন পর্ব।

পটুয়ার ভুলে দুর্গা হলেন নীলবর্ণা 
নদীয়ার সদর শহর কৃষ্ণনগরের নাজিরাপাড়ার সম্ভ্রান্ত পরিবার চট্টোপাধ্যায়রা বাড়িতে দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি শেষ। রথের দিন কাঠামো পুজো করে যে দুর্গা প্রতিমা গড়া শুরু হয়েছে, তাও প্রায় সমাপ্ত। রঙের প্রলেপ একটু বাকি। কিন্তু চিরাচরিত কাঞ্চনবর্ণা বা অতসীবর্ণা নন, মা দুর্গা এখানে অপরাজিতা ফুলের মত নীলবর্ণা। কেন? ঘটনাটি বড়ই কাকতালীয়। অনেকদিন আগে বাংলাদেশে থাকাকালীন চট্টোপাধ্যায় পরিবারে দুর্গাপুজোর প্রচলন। সেখানেই প্রতিমা গড়তে গড়তে পটুয়ারা ভুল করে দিয়ে ফেলল নীল রং। এবার কী করা যায়? ভাবতে ভাবতেই এল দেবীর স্বপ্নাদেশ— নীল রঙা প্রতিমাই পুজো হবে এই ভিটেয়। সেই থেকে তিনি পূজিতা হয়ে আসছেন চট্টোপাধ্যায় পরিবারে।
১৯৪৯ সাল থেকে কৃষ্ণনগরে পুজো শুরু হলেও তার সূচনা পর্বের বীজ নিহিত বাংলাদেশের বরিশাল জেলার বামরাইল গ্রামে। ৩৫০ বছরের বেশি সময় ধরে পুজো চলে আসছিল। এরই মধ্যে কোনও এক বছর নীলদুর্গার আবির্ভাব। দেশভাগের সময় চট্টোপাধ্যায় পরিবার এপারে এসে বসতি স্থাপন করেন নদীয়ায়। সেই থেকে নীলদুর্গার পুজো এক প্রাচীন ও পারিবারিক ঐতিহ্যময় উৎসব। 
আজ চট্টোপাধ্যায় পরিবার শরিকি ভাগে আলাদা পুজো করে। তবে নিয়ম এক। রথের দিন কাঠামো পুজোর নিয়ম থাকলেও শনি-মঙ্গলবার পড়ে গেলে তা হয় উল্টোরথে। একচালার অনিন্দ্যসুন্দর প্রতিমা। নীলমূর্তির গায়ে লাল শাড়ি, জরির সাজ। পূর্ববঙ্গীয় রীতি অনুযায়ী এখানেও কার্তিক ডান দিকে এবং গণপতি দেবীর বাম দিকে। পুজো চলে তন্ত্রমতে। অষ্টমীতে কুমারীপুজো হয়। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বামরাইলে এক সময় নরবলি হতো। নবমীর দিন হতো মোষবলি। আজও বলির প্রতীক হিসেবে চালের পিটুলি দিয়ে মানুষ গড়ে বলি হয়। নবমীতে কুমড়ো, শশা বলি হয়। অন্নভোগের সঙ্গে থাকে মাছ। নবমীতে বিশেষ ভোগ দেওয়া হয় সরলপিঠে, কলার বড়া ইত্যাদি। দশমীর বিদায়বেলায় মাকে দেওয়া হয় পান্তাভাত, কচু শাক, ডালের বড়া সঙ্গে গন্ধরাজ লেবু।

গাত্রবর্ণ শ্যামাকালী আর গঠনে দশভুজা দক্ষিণ কলকাতার ঘোষরায় পরিবারের নীলদুর্গা
দুর্গার ধ্যানমন্ত্র অনুযায়ী মহামায়া দশহাতে দশ অস্ত্রধারিণী। তিনি সিংহাসিনা, পদতলে শূলবিদ্ধ অসুর। এক চালচিত্রে মহাদেব সহ জমজমাট উপস্থিতি। কিন্তু দক্ষিণ কলকাতার ঘোষরায় পরিবারের নীলদুর্গা একেবারেই আলাদা। অনেকটা যেন শ্যামা মায়ের আদল। ১৮২৭ সালে পূর্ববঙ্গের বরিশাল জেলার নরোত্তমপুরের বাসিন্দা ছিলেন কালীমোহন ঘোষরায়। তাঁর স্ত্রী সারদা দেবী স্বপ্ন দেখেছিলেন দেবীর এমন রূপের। যেন দেবী দুর্গা আর দেবী কালী একসঙ্গে এসেছেন তাঁর স্বপ্নে। তখন আর মাত্র সাত দিন বাকি পুজোর। তড়িঘড়ি আয়োজন করা হয়।
দুই দেবীর মেলবন্ধনে তৈরি হয় প্রতিমা, যাঁর অবয়ব দুর্গার কিন্তু গাত্রবর্ণ শ্যামাকালীর। এখানেও কার্তিক-গণেশের অবস্থান বিপরীত। অর্ধগোলাকৃতি চালচিত্রে আঁকা থাকে রামায়ণ। পূর্ববঙ্গ থেকে চলে আসার পর ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত টালিগঞ্জের প্রতাপাদিত্য প্লেসে পুজো হয়েছে এই পরিবারের। পরের বছর থেকে মায়ের আরাধনা হয়ে আসছে সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে। দেবীপুরাণ অনুযায়ী, শাক্তমতে পুজো হয়। ভোগে দেওয়া হয় কাঁচা মাছ, কাঁচা আনাজ এবং নানা ধরনের মিষ্টান্ন।

ঘোমটা খসার লজ্জায় রাঙা মাখলার লাল দুর্গা
মহাসমারোহে উদযাপিত হচ্ছে দুর্গাপুজো। বহু ভক্ত সমাগম হয়েছে। এসেছেন অনেক সাধক, ব্রাহ্মণ পণ্ডিত। মধ্যাহ্নভোজনে বসেছেন। মাটিতে কলাপাতায় অন্নভোগ খাওয়ানোর ব্যবস্থা। কথিত আছে, লালপেড়ে শাড়ি পরে মাথায় ঘোমটা দিয়ে গৃহবধূরূপে অন্ন পরিবেশন করতেন মা মহামায়া স্বয়ং। একবার এই মধাহ্নভোজনের সময় হঠাৎই দেবীর মাথার ঘোমটা খসে যায়। তৎক্ষণাৎ পিছন থেকে দু’টি হাত এসে মায়ের ঘোমটা টেনে দেয়। প্রসাদ ভক্ষণ করার সময় ঘটনাটি দেখে ফেলেন ব্রাহ্মণরা। লজ্জায় রাঙা হয়ে ওঠেন মা। গাত্রবর্ণ অতসী পুষ্পবর্ণা থেকে হয়ে ওঠে লাল বা তপ্ত গলিত স্বর্ণবর্ণা। পুজোর আয়োজক ছিলেন জগদানন্দ তর্কবাগীশ। তিনি তখন আদেশ দেন, এই রূপেই দেবীর আরাধনা চলবে। 
হুগলি জেলার উত্তরপাড়ার মাখলায় ভট্টাচার্য পরিবারের বাস বহুদিনের। আদি নিবাস অবশ্য অধুনা বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার পালং থানার ধানুকা গ্রামে। সম্ভবত কান্যকুব্জ থেকে এসেছিলেন তাঁরা। এই বংশের সঙ্গে শ্রীচৈতন্যদেবের পিতা জগন্নাথ মিশ্র ও মাতা শচীদেবীর পারিবারিক সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। রাজা বল্লাল সেনের সময় ধানুকা গ্রামে বসত গড়েন জগদানন্দ তর্কবাগীশ। শুরু করেন শারদীয়া দুর্গাপুজো। তিনি অনেক বড় মাপের সাধক ছিলেন। তাম্রপাত্রে রক্তচন্দনের প্রলেপ দিয়ে ধ্যানস্থ হতেন। কিছু পরে সেখানে ফুটে উঠত মায়ের পদযুগলের ছাপ। এই সময় থেকেই লালদুর্গার পুজো করতেন তিনি। তবে টকটকে লাল নয়, শিউলি ফুলের বোঁটার গাঢ় রং। কালিকাপুরাণের বর্ণনায় দেবী এমন রূপেই আবির্ভূতা।
মাখলায় ২০০ বছর ধরে এই পুজো চলছে ভট্টাচার্য পরিবারে। তিন পুরুষ ধরে। প্রথম থেকে এই মূর্তির সঙ্গে মহিষ অনুপস্থিত। কার্তিক-গণেশও বিপরীত অবস্থানে। ঘটের নীচে পঞ্চগুড়ি বা পাঁচরঙের যে আলপনা আঁকা হয়, তার সবই বাড়িতে তৈরি। আমন ধানের তুষ পুড়িয়ে তৈরি হয় কালো রং। বেলপাতা থেকে সবুজ, হলুদ থেকে হলুদ, গোবিন্দভোগ চlল থেকে সাদা আর সিঁদুর থেকে লাল। এই পঞ্চগুড়ির উপর পিতলের চাদর পেতে বসানো হয় প্রতিমা। সপ্তমীতে হয় অর্ধরাত্রি বিহিত পুজো, নবমীতে ছাগ-চালকুমড়ো বলি হয়। দশমীতে মায়ের ভোগে থাকে পান্তাভাত, কচুর শাক, ইলিশমাছ। বিসর্জনের পর একাদশীতে ওই মণ্ডপে অপরাজিতা, বড়ঠাকুর ও নারায়ণের পুজো বাধ্যতামূলক। তিথি যাই হোক না কেন, এই পুজোগুলিও করতে হয় দুর্গাপুজোর পুরোহিতকেই। এমনটাই মায়ের আদেশ।

হুগলির লাল দুর্গা 
দেবী দশহাতে রণসাজে সজ্জিত হয়ে মহিষাসুর বধ করতে উদ্যত। এই ভয়ানক যুদ্ধের এক এক পর্যায়ে দেবীর এক এক রূপ। বৃহন্নন্দিকেশ্বর পুরাণের বর্ণনায়, শারদোৎসবে অষ্টমী-নবমীর সন্ধিক্ষণে দেবী চণ্ডিকা রূপ ধারণ করে অসুর বধ করেন। ক্রোধে তাঁর গাত্রবর্ণ রক্তিম হয়ে ওঠে। এই কারণে সন্ধিপুজোর বিশেষ ক্ষণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দেবীর এই চণ্ডিকা রূপ দেখা যায় হুগলির রায় পরিবারে। পূর্ববঙ্গের ময়মনসিংহ জেলার বিক্রমপুর নয়না গ্রামে সূচনা হয় এই পুজোর। গুপীচরণ রায়ের হাত ধরে মায়ের পদার্পণ এই পরিবারে। স্বাধীনতার আগেই তাঁরা চলে আসেন এপারে, হুগলির বাঁশবেড়িয়ায়। ১৯৫১ সাল থেকে হুগলি শহরের কাঠঘোড়া লেনে পারিবারিক মণ্ডপে আয়োজন করা হয় এই পুজোর। দুর্গা প্রতিমার গাত্রবর্ণ টকটকে লাল। কার্তিক গণেশের অবস্থান পূর্ববঙ্গীয় রীতি অনুযায়ী উল্টো। বলি এ পুজোর বিশেষ অঙ্গ। প্রতিদিন বলি হয়। নবমীতে সব বলির শেষে হয় শত্রুবলি। এ বাড়িতে অন্নভোগ দেওয়ার রীতি নেই। পরিবর্তে কাঁচা সামগ্রীর আমান্ন ভোগ দেওয়া হয়।
গ্রাফিক্স : সোমনাথ পাল
সহযোগিতায় : সত্যেন্দ্র পাত্র
06th  October, 2024
কাজীর কালীবন্দনা
সায়ন্তন মজুমদার

ভয়ে হোক বা ভক্তিতে, মা কালীর মধ্যে কিন্তু একটা ব্যাপার আছে। যে কারণে কেরেস্তানি কবিয়াল অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি সাহেবের লেখা পদেও ‘শ্যামা সর্বনাশী’কে পাওয়া যায়, শোনা যায় ‘জয় কালীর ডঙ্কা’। আবার ত্রিপুরার নারায়ণপুরের মৃজা হুসেন আলিকে জয় কালীর নামে যমকেও তাচ্ছিল্য করতে দেখি। বিশদ

27th  October, 2024
শুভ বিজয়া
কৌশিক মজুমদার 

বিজয়ার থেকেই ধীরে ধীরে দিনগুলো, রাতগুলো কেমন অদ্ভুত ঝিমধরা ক্লান্ত লাগে। প্রতি মুহূর্তে মনে হয় যেন এবার আরও অনেক কিছু করার ছিল, জীবনপাত্র উছলিয়া ভরার ছিল। ভরা হল না।  বিশদ

20th  October, 2024
শ্রী শ্রী দুর্গা সহায়
সোমা চক্রবর্তী

১৯৮৬। তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। ছুটিতে দু’বেলা আর অন্যান্য দিন সন্ধ্যায় পড়তে বসা— এই ছিল রোজের রুটিন। পুজোর অপেক্ষায় থাকতাম সারা বছর। কারণ, আমাদের বাড়িতে নিয়ম ষষ্ঠী থেকে নবমী বই ছোঁয়া যাবে না। দশমীর দিন যাত্রা করে আবার পড়া শুরু। বিশদ

20th  October, 2024
পুজোর টানে ফেরা
সুকান্ত ঘোষ

মহালয়ার ভোর। ঘুম থেকে উঠেই ঘরে চালিয়ে দিয়েছি ‘বীরেনবাবু স্পেশাল’। বেশ জোরে। খানিক পরেই দরজায় টোকা। খুলতেই দেখি, আমার ডানপাশের ঘরের জোসেফ ও বাঁ পাশের ঘর থেকে ফাউস্টো ঘুম ঘুম চোখে দাঁড়িয়ে। ঘরে ঢুকল দু’জনে। বিশদ

29th  September, 2024
কল্যাণীর বিভূতিভূষণ

মুরাতিপুর গ্রাম। তাঁর মামার বাড়ি। জন্মস্থানও। গ্রামটি আর নেই। সেখানেই গড়ে উঠেছে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১৩০ তম জন্মবার্ষিকীতে এমন অনেক অজানা কাহিনি লিখলেন সুখেন বিশ্বাস।
বিশদ

22nd  September, 2024
স্বপ্ন হলেও সত্যি
কলহার মুখোপাধ্যায়

মামা বলল, ‘আগে ভালো করে লাটাই ধরতে শেখ, তারপর ঘুড়ি ওড়াবি।’ বাবা বলল, ‘আগে ভালো করে সিট বেল্ট বাঁধতে শেখ, তারপর গাড়ির স্টিয়ারিং ধরবি।’   পাড়ার ন্যাপাদা বলল, ‘মাঠে ঠিকমতো দৌড়তে শেখ আগে, তারপর বলে পা দিবি
বিশদ

15th  September, 2024
ঘুড়ির পিছে ঘোরাঘুরি
রজত চক্রবর্তী

আরও আরও উপরে। আরও উপরে। ওই আমাদের বাড়ি ছোট হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। বুল্টিদের বাড়ির ছাদ ছোট্ট হয়ে গিয়েছে। দড়িতে টাঙানো বুল্টির লাল জংলা ফ্রক আর দেখা যাচ্ছে না। করদের মাঠ, পুকুর, আম-জাম-পাকুড়-লিচুগাছেদের ভিড়, বাড়িগুলো সব ছোট ছোট, শুধু ছাদের পর ছাদ।
বিশদ

15th  September, 2024
মলমাস
রোহিণী ধর্মপাল 

জিন্স পরিহিতা রীতিমতো আধুনিকা বললেন, ‘ঠাকুরমশাই, গৃহপ্রবেশে কোনও ত্রুটি রাখতে চাই না। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ হলে আমাদের খুব সুবিধা হয়।’ অফিসের ফোন আসায় একটু দূরে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন সঙ্গী যুবক। এবার ফোনটা মিউট করে সুবেশ ছেলেটি বললেন, ‘তারপরেই আসলে আবার আমাদের অস্ট্রেলিয়া ফিরতে হবে তো! বিশদ

08th  September, 2024
মলিন মানুষ
সন্দীপন বিশ্বাস

সারা বাড়ি আনন্দে গমগম করছে। আত্মীয়-স্বজনদের ভিড়ে যেন উৎসবের হাট বসেছে। বাড়ির একমাত্র ছেলে শুভদীপের বিয়ে। বিয়ের দিন সবাই সেজেগুজে প্রস্তুত। এখনই বর বেরবে। দেরি হয়ে যাচ্ছে। বাবা তাড়া দিচ্ছে শুভদীপকে। ‘তাড়াতাড়ি বেরো। এতটা পথ যেতে হবে। সময়মতো পৌঁছতে না পারলে সমস্যা হয়ে যাবে।’  বিশদ

08th  September, 2024
যব ছোড় চলে...

আজ, ১ সেপ্টেম্বর নবাব ওয়াজেদ আলি শাহের মৃত্যুদিন। ১৩৭ বছর আগে নির্বাসিত নবাবের মৃত্যু ঘিরে আজও রয়েছে হাজারো প্রশ্ন। মেটিয়াবুরুজ ঘুরে সেই অতীতের অনুসন্ধান করলেন অনিরুদ্ধ সরকার।
বিশদ

01st  September, 2024
বর্ষামঙ্গল
শ্যামল চক্রবর্তী

কেশববাবু ছাতা কিনেছেন। প্রয়োজনে নয়, দুঃখে! হেড অফিসের ছোটবাবু কেশব দে রিটায়ার করার পর থেকেই দিনরাত স্ত্রীর গঞ্জনা শুনতে শুনতে, এক বর্ষার সকালে বেরিয়ে পড়েছেন। গণশার দোকানে পাউরুটি আর ঘুগনি দিয়ে ব্রেকফাস্ট সেরে মেট্রোগামী অটোতে চেপে বসলেন। বিশদ

25th  August, 2024
কেন মেঘ আসে...
কলহার মুখোপাধ্যায়

‘মেঘের পরে মেঘ জমেছে...’, তবে এই তো আর ক’দিন। এক কী দেড় মাস! তার মধ্যেই দুগ্গা চলে আসবে। তখন আকাশ ফুঁড়ে রোদ্দুর। মেঘগুলোর রং যাবে সব পাল্টে। আইসক্রিম আইসক্রিম মেঘ চড়ে বেড়াবে আকাশে। তখন মালতির একটু স্বস্তি। বিশদ

25th  August, 2024
’৪২-এর কলকাতা

‘ব্রিটিশ ভারত ছাড়ো...’ গান্ধীজির ডাকে ১৯৪২ সালের আগস্টে রাস্তায় নেমেছিল কলকাতাও। আম বাঙালির প্রতিবাদের সেই ইতিহাস ফিরে দেখলেন সৌম্যব্রত দাশগুপ্ত। বিশদ

18th  August, 2024
মৃত্যুর মুখোমুখি

কারাগারের নিস্তব্ধতা চিরে ছুটে আসছে শব্দ। মুজফ্‌ফরপুর জেলের কোনায় কোনায় তখনও জমাট বাঁধা অন্ধকার। কনডেমড সেলের মেঝেয় চুঁইয়ে পড়েছে সামান্য আলোর রেখা। সেই আলোয় স্পষ্ট দূরের অন্ধকারে শক্ত কাঠের পাটাতনে দুলতে থাকা মরণ-রজ্জু। বিশদ

18th  August, 2024
একনজরে
চমকে ভরা আইপিএলের রিটেনশন তালিকা। গত মরশুমের অধিনায়ক ঋষভ পন্থকে রাখল না দিল্লি ক্যাপিটালস। চ্যাম্পিয়ন কলকাতা নাইট রাইডার্সও ছেড়ে দিল অধিনায়ক শ্রেয়স আয়ারকে। আগেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল, নিলামেই ভাগ্য ঠিক হবে লোকেশ রাহুলের। ...

একদিকে পুজো দেওয়ার, অন্যদিকে পুজো দেখার ভিড়। বৃহস্পতিবার বিকেল গড়াতেই জনকোলাহল আছড়ে পড়ল হুগলির বিভিন্ন জনপদের মন্দিরে, মণ্ডপে। আলোকমালায় সুসজ্জিত রাজপথে ছিল থইথই ভিড়। রাত ...

সোনার দাম একলাফে অনেকটাই বেড়েছে। কিন্তু সোনা কেনার প্রতি আগ্রহ একেবারেই কমেনি। ধনতেরসে মালদহ জেলার সবস্তরের মানুষ সাধ্যমতো সোনা কিনেছেন। ধনতেরস উপলক্ষ্যে মালদহ জেলাজুড়ে ২০০ ...

ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানাগায় ট্রেন দুর্ঘটনা মামলায় তিন রেলকর্মীকে জামিন দিল ওড়িশা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার ৫০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডের বিনিময়ে তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেছেন বিচারপতি আদিত্যকুমার মহাপাত্রের বেঞ্চ। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

বিশ্ব ভেগান দিবস
১৫১২: সিস্টিন চ্যাপেল এর ছাদের চিত্রাঙ্কন যা মাইকেলেঞ্জেলো এঁকেছেন, জনগনের জন্য প্রথমবারের মত উম্মুক্ত করে দেয়া হয়
১৬০৪: উইলিয়াম শেক্সপিয়ার এর ট্রাজেডী ওথেলো প্রথমবার মঞ্চস্থ হয় লন্ডনের হোয়াইটহল প্যালেসে
১৬১১: উইলিয়াম শেক্সপিয়ার রোম্যান্টিক কমেডি টেমপেস্ট প্রথমবার মঞ্চস্থ হয় লন্ডনের হোয়াইটহল প্যালেসে
১৮০০: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জন অ্যাডামস হলেন দেশটির প্রথম রাষ্ট্রপতি যিনি দি এক্সিকিউটিভ ম্যানসন এ থাকা শুরু করেন (পরবর্তীকালে যার নাম হয় হোয়াইট হাউস)
১৮৫৮: ব্রিটিশ রাজতন্ত্র ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছ থেকে ভারতের শাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করে
১৮৬৪: পোস্ট অফিসের মাধ্যমে প্রথম মানি অর্ডার পদ্ধতি চালু
১৮৭৩: নাট্যকার দীনবন্ধু মিত্রের মৃত্যু
১৮৮০: কলকাতায় প্রথম ঘোড়ায় টানা ট্রাম চলাচল শুরু
১৯১৫: বাংলা ক্রিকেটের জনক সারদারঞ্জন রায়ের জন্ম
১৯৫০: সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু
১৯৫০: নোবেল জয়ী পদার্থবিদ রবার্ট লাফলিনের জন্ম
১৯৫৬: বাংলা ভাষা আন্দোলন (মানভূম) এর ফলস্বরূপ মানভূমের একটা অংশ পশ্চিমবঙ্গের সাথে যুক্ত হয় পুরুলিয়া জেলা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে
১৯৫৬: ভারতে রাজ্য পুনর্গঠন আইন, ১৯৫৬ মোতাবেক মহীশূর রাজ্য বর্তমানে কর্নাটক, কেরালা ও মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের আত্মপ্রকাশ ও পুনর্গঠন হয়
১৯৭৩: মহীশূর রা্জ্যের নাম বদলে কর্ণাটক হয়
১৯৭৩: অভিনেত্রী ঐশ্বর্য রাইয়ের জন্ম
১৯৭৪: ক্রিকেটার ভি ভি এস লক্ষ্মণের জন্ম



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.৬১ টাকা ৮৪.৭০ টাকা
পাউন্ড ১০৭.৫২ টাকা ১১০.৪৫ টাকা
ইউরো ৮৯.৯৯ টাকা ৯২.৬৯ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৯,৭০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৮০,১০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭৬,১৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৯৭,২০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৯৭,৩০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১৫ কার্তিক, ১৪৩১, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪। অমাবস্যা ৩১/২০ রাত্রি ৬/১৭। স্বাতী নক্ষত্র ৫৪/২৫ রাত্রি ৩/৩১। সূর্যোদয় ৫/৪৪/৫০, সূর্যাস্ত ৪/৫৫/৪০। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/২৯ মধ্যে পুনঃ ৭/১৪ গতে ৯/২৮ মধ্যে পুনঃ ১১/৪২ গতে ২/৪১ মধ্যে পুনঃ ৩/২৬ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৫/৪৭ গতে ৯/১২ মধ্যে পুনঃ ১১/৪৬ গতে ৩/১১ মধ্যে পুনঃ ৪/৩ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৮/৩৩ গতে ১১/২০ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৮ গতে ৯/৪৪ মধ্যে। 
১৫ কার্তিক, ১৪৩১, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪। অমাবস্যা সন্ধ্যা ৫/৯। স্বাতী নক্ষত্র রাত্রি ৩/২৬। সূর্যোদয় ৫/৪৬, সূর্যাস্ত ৪/৫৭। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৪ মধ্যে ও ৭/২৭ গতে ৯/৩৬ মধ্যে ও ১১/৪৫ গতে ২/৩৭ মধ্যে ও ৩/২০ গতে ৪/৫৭ মধ্যে এবং রাত্রি ৫/৩৯ গতে ৯/১১ মধ্যে ও ১১/৫০ গতে ৩/২২ মধ্যে ও ৪/১৫ গতে ৫/৪৬ মধ্যে। বারবেলা ৮/৩৩ গতে ১১/২১ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/৯ গতে ৯/৪৫ মধ্যে। 
২৮ রবিয়স সানি।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
বন্ধ গঙ্গোত্রী মন্দির
শনিবার বন্ধ হল গঙ্গোত্রী ধাম। শীতের মরশুমের আগে মন্দিরের দরজা ...বিশদ

09:32:39 AM

প্রয়াত জনপ্রিয় ফ্যাশন ডিজাইনার রোহিত বল

11:39:32 PM

মুম্বইয়ের গোরেগাঁওতে একটি বহুতলে অগ্নিকাণ্ড, ঘটনাস্থলে দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন

10:47:00 PM

হরিয়ানার রাজ্যপাল বন্দারু দত্তাত্রেয়ার সঙ্গে দেখা করলেন মুখ্যমন্ত্রী নায়েব সিং সাইনি

10:25:00 PM

উত্তরপ্রদেশের সাদাতগঞ্জে একটি কারখানায় আগুন, অকুস্থলে দমকল

10:08:00 PM

জম্মু ও কাশ্মীরের উধমপুরের মারগানা জঙ্গলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

09:48:00 PM