কাজকর্মের ক্ষেত্রে যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে। ক্রীড়াবিদদের সাফল্য লাভের সম্ভাবনা। পারিবারিক ক্ষেত্রটি মোটামুটি থাকবে। ... বিশদ
মনখারাপ কাটিয়ে উঠুন
মন্ত্র উচ্চারণ করুন। মন শান্ত হবে। তারপর তাকে নিয়মনিষ্ঠ জীবনে ফেরাতে সুবিধে হবে।
নিজের সঙ্গে কথা বলুন। এই কথা বলার অভ্যাসটা সারা পুজো জুড়েই চলুক অসুবিধে নেই। মনকে বোঝাতে হবে জীবনের একটা ছন্দ রয়েছে। তার মধ্যে হর্ষ এবং বিষাদ দুই-ই বিরাজ করে। অর্থাৎ বাঁধভাঙা আনন্দ যেমন আছে, তেমনই একটু নিয়মেরও প্রয়োজন। এই যে নিজের সঙ্গে নিজের কথা বলা, এটা মনকে ভালো ও শান্ত রাখতে খুবই জরুরি। এতে মনে একটা প্রশান্তি আসে এবং অনিয়মের পর কাজে ফিরতে অসুবিধে হয় না।
একটু হাঁটুন। মন ভালো থাকবে। পুজোয় যতই অনিয়ম হোক না কেন, হাঁটার অভ্যাসটা ছাড়বেন না। দিন শুরুর আগে সকালে আধঘণ্টা হাঁটুন। এর ফলে নিয়মের অভ্যাসটা বজায় থাকবে। তখন অনিয়মের পর কাজে ফিরতে অসুবিধে হবে না।
শরীর ঝরঝরে রাখুন
এবার আসি শারীরিক সুস্থতা ও নিয়মনিষ্ঠ জীবনযাপনের কথায়। দীর্ঘ অনিয়মে শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমলে, চলাফেরায় অসুবিধে হলে তা কাটাবেন কীভাবে? বিস্তারিত জানালেন যোগবিদ তুষার শীল। তাঁর মতে, ‘যাঁরা ফিটনেস রুটিনে অভ্যস্ত তাঁদের একটু অনিয়মিত জীবনযাপনে খুব একটা ক্ষতি হয় না। অনিয়মে ক্ষতি বেশি হয় তাঁদেরই, যাঁরা কোনওরকম এক্সারসাইজে অভ্যস্ত নন।’ সেক্ষেত্রে কীভাবে শুরু করবেন?
ব্রিদিং এক্সারসাইজ দিয়ে শুরু করা উচিত। এই ব্রিদিং এক্সারসাইজ শুধু ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে তা-ই নয়, গলায় মেদ জমা, ডবল চিন ইত্যাদি সমস্যাতেও অত্যন্ত কার্যকর। এই আসনের ফলে রক্তে অক্সিজেন সঞ্চালনের মাত্রাও খুব ভালো থাকে। এর জন্য কী করতে হবে? যোগবিদ বললেন, দু’পায়ের মাঝে আট ইঞ্চি ফাঁক রেখে দাঁড়াতে হবে। হাত দুটো পিছন দিকে নিয়ে সোজা করে একটা হাতে অন্য হাতের তালু ধরে নিন। এবার শ্বাস নিতে নিতে মাথা পিছন দিকে ঝুলিয়ে দিন। একইসঙ্গে দুটো কাঁধকেও পিছনদিকে নিয়ে যাবেন। এরপর শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে মাথা সামনে ঝুঁকিয়ে থুতনি বুকে লাগিয়ে দিতে হবে। এইভাবে বার বার সামনে এবং পিছনে নিয়ে যেতে হবে। এই আসনটির নাম মনোতোষ রায় ব্রিদিং। এই আসনে থাইরয়েড, হাঁপানি ইত্যাদি রোগেরও উপশম হয়। এইভাবে ১৫ থেকে ২০ বার অভ্যাস করা যেতেই পারে।
এবার দ্বিতীয় আসন প্রসঙ্গে আসি। এর নাম সিটিং সাইড ক্রসিং। দু’পা সামনে ছড়িয়ে বসুন। তার মাঝে ফাঁক করুন। এবার কাঁধ বরাবর হাত দুটোকে ছড়িয়ে দিন। শ্বাস নিয়ে তা ছাড়তে ছাড়তে মাথা ঝুঁকিয়ে কপালটাকে ডান পায়ের হাঁটুর সঙ্গে লাগান। আর সেই একই হাত (ডান হাত) ভাঁজ করে পিঠের দিকে রাখুন। এরপর শ্বাস নিতে নিতে হাত আবার সোজা করে উঠে বসতে হবে। তবে তার আগে যখন ডান হাত পিছনে রাখবেন তখনই বাঁ হাত দিয়ে ডান পায়ের বুড়ো আঙুল ধরতে হবে। একইভাবে উল্টো দিকটাও করতে হবে। এইভাবে প্রথমে ১০ বার এবং তারপর একটু বিশ্রাম নিয়ে আবারও ১০ বার অভ্যাস করতে হবে।
বয়স্করা কেমন আসন করবেন
এবার একটু বয়স্কদের প্রসঙ্গে এলেন যোগবিদ। তাঁর কথায়, চল্লিশ বছর আমাদের জীবনের একটা ল্যান্ডমার্ক। এরপর থেকেই শরীর একটু একটু করে ভাঙতে শুরু করে। বিভিন্ন ধরনের রোগ বাসা বাঁধে। শরীর স্টিফ হয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। ফলে এই বয়সে আসন অভ্যাস করার সময় একটু বুঝেশুনে করা দরকার। অথচ এই বয়সেই শারীরিক ফিটনেস সবচেয়ে প্রয়োজনীয়। তাহলে কী করবেন? যোগবিদ জানালেন, প্রথম ফিটনেস আসনটির জন্য পা ফাঁক করে সোজা হয়ে দাঁড়ান। এরপর শ্বাস নিয়ে নিন। তারপর তা ছাড়াতে ছাড়াতে শরীর ডানদিকে কাত করে দিন। তারপর শ্বাস নিতে নিতে উঠে দাঁড়ান। আবারও শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে শরীর উল্টো দিকে হেলান। আবারও সোজা হয়ে উঠে দাঁড়ান। একইভাবে দু’পাশ অভ্যাস করার পর সামনে এবং পিছনেও শরীর হেলাতে হবে।
এরপর চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। পা দুটো অল্প ফাঁক করে হাঁটু থেকে ভাঁজ করে দিন। হাত দুটো মাটিতে রাখুন। এবার ওই অবস্থায় উঠে বসার চেষ্টা করুন। কিন্তু মাথা তুলতে পারবেন না। মাথা পিছনেই ঝুলে থাকবে। পিঠ থেকে সামান্য তুলে ধরবেন। এতে পেটের মেদ কমবেই। এই আসনটি খুবই আস্তে ধীরে করুন। এই অবস্থায় আট থেকে দশবার দম নেওয়া ছাড়া করে তারপর আবারও শুয়ে পড়ুন।
বাড়িতেই থাকেন যাঁরা
এবার আসি হোমমেকার বা বাড়ি থেকেই যাঁরা অফিস করেন, তাঁদের কথায়। এঁদের জন্য যে আসনটি সবচেয়ে অনবদ্য তা হল চেয়ার সিটিং ওয়াকিং। এর জন্য একটা হাতল ছাড়া চেয়ারে বসুন। তারপর ডান পা বুকের কাছে তুলে নামিয়ে নিন, আবার বাঁ পা বুকের কাছে তুলে নামিয়ে নিন। একইসঙ্গে হাত দুটোকেও আগুপিছু করুন, হাঁটার ভঙ্গিতে।
এছাড়া আর একটা আসনও রয়েছে। চেয়ারে বসুন। পা দুটো সামনের দিকে মাটি থেকে তুলে টানটান করে ছড়িয়ে দিন। সোজা রাখবেন, হাঁটু যেন ভাঁজ না হয় খেয়াল রাখবেন। এরপর পা দুটো দু’দিকে যতটা সম্ভব ছড়িয়ে দিন। এইভাবে এক মিনিট হোল্ড করুন। তারপর আবার আগের পর্যায়ে ফিরে আসুন।