কর্মে সাফল্য ও সুনাম বৃদ্ধি। উকিল, মৃৎশিল্পীদের শুভ। সংক্রমণ থেকে শারীরিক অসুস্থতা হতে পারে। আর্থিক ... বিশদ
পুজোর সাজে শাড়িই শেষ কথা নয়। বরং ফ্যাশনিস্তাদের পছন্দের তালিকায় এবার পুজোয় কুর্তি, চুড়িদার ও লেহেঙ্গাও রয়েছে। নকশাদার নানারকম কুর্তি এবার পুজো ফ্যাশনে ইন। ইউ, ভি, বোট কাটিং, উল্টো ভি, স্ট্রেট প্যাটার্ন— এমন নানা কাটিংয়ের কুর্তি এবার খুব চলছে। চাহিদা আছে ঘের দেওয়া কুর্তিরও। হাতার ডিজাইনেও এবার নতুনত্ব বেশ চোখে পড়ার মতো। ঢিলেঢালা হাতা যেমন রয়েছে, তেমনই আছে কার্ভ স্লিভ বা বেল স্লিভ। গলার কাটিংয়ে বোট নেক যেমন আগের বছর খুব জনপ্রিয় হয়েছিল, তেমন এবছর আবার সেমি বোট নেক, পোর্ট্রেট, সেট ইন স্লিভ নেক ফ্যাশনে ইন। এমনিতে কুর্তির বাজারে কটন ও রেয়নের চাহিদা চিরকালই ঊর্ধ্বমুখী। তবে এবার এদের পাশাপাশি নেট দেওয়া জর্জেটের চলও বেড়েছে। সালোয়ার স্যুটের ক্ষেত্রে বাঁধনির চাহিদা এবছর আবার বেড়েছে।
মনের মতো কুর্তির খোঁজ কোথায় পাবেন? কোন দোকানে ঢুঁ মারলে পছন্দের সালোয়ার স্যুট মিলবে সহজেই? ‘বিকিকিনি’-র পাতায় রইল সেসবের খবর।
খাদি সিল্ক এম্পোরিয়াম: ভারতীয় উপমহাদেশের ফ্যাশনে ‘খদ্দর’ বরাবরই আলাদা কদর পায়। এখানকার জলবায়ুর জন্য সুতি বা খাদি কাপড় এতটাই আরামদায়ক হয় যে ফ্যাশন ডিজাইনাররাও তাঁদের নানা নকশার বুননে খাদি কাপড়কে আলাদা গুরুত্ব দেন। শহরের বুকে খাদিবস্ত্র কেনাকাটা করার অন্যতম সেরা বিপণী খাদি সিল্ক এম্পোরিয়াম। এবছর পুজোর কথা মাথায় রেখে এরা নিজেদের ঢেলে সাজিয়েছে। স্লিভলেস, হাফ ও ফুল স্লিভ নানারকম কুর্তা এখানে পাবেন। এবছর পুজোয় একটু বড় ঝুলের কুর্তার চাহিদা বেশি। তাই খাদি সিল্ক এম্পোরিয়ামও তাদের সম্ভার সেভাবেই সাজিয়েছে। সুতি ও খাদি এই দুই মেটেরিয়ালকে একসঙ্গে রেখ এখানকার ডিজাইনাররা আকর্ষণীয় নানা কাটিংয়ের কুর্তা বানিয়েছেন। ভালো লাগবে মালয়েশিয়া খাদি কটন লং ড্রেস। কলার ও পকেটওয়ালা এমন কুর্তা একবার দেখলেই পছন্দ হতে পারে। দাম ঘোরাফেরা করবে ৯৮০ থেকে ১২০০-র মধ্যে। ৩৬ থেকে ৪৪ পর্যন্ত মাপে মিলবে। কোনও কোনও নকশা ৪৬ মাপেও পাবেন। খাদির নিজস্ব ডিজাইনাররা এবার কিছু লং ড্রেস বানিয়েছেন। তার কোনওটা ফ্রিল দেওয়া, কোনওটা আবার দু’রকম কাপড়ের মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ নকশার। ছিমছাম দেখতে হাফ স্লিভ কুর্তিও রয়েছে এই তালিকায়। দাম পড়বে ১০০০-১২০০ টাকা। খাদির কটন কামিজও পছন্দ করতে পারেন। এখানেও মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ নকশা পাবেন। এক্ষেত্রে বাজেট রাখুন ৮০০-১১৫০ টাকা। কাঁথাস্টিচের কাজ যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য খাদি বরাবরই নিত্যনতুন নকশায় কাঁথাকাজের সমাহার রাখে। কটনের উপর নকশিকাঁথার কাজ চাইলে খরচ হবে ৭১৫-৮৫০ টাকা। এবছর এদের আর এক আকর্ষণ পিওর সিল্ক প্রিন্টেড কামিজ। যে কোনও অনুষ্ঠান বা নিমন্ত্রণবাড়ির সাজের জন্য এই পোশাক খুব উপযুক্ত। ১২৫০-১৫০০ বাজেট কম হলে এই ধরনের কুর্তা কিনতে পারেন। আবার র-সিল্কের উপর মটকা প্রিন্টেড কুর্তিগুলোও খুব চোখ টানে। বাজেট একটু বেশির দিকে হলে নিতেই পারেন। দাম পড়বে ২২০০-২৫০০ টাকা। পুজোর কেনাকাটার মরশুমে প্রতিদিন দোকান খোলা। কোভিডবিধি মেনেই চলছে কেনাকাটা।
(শপ নং : জি ৯৫-৯৭, সিআইটি কমপ্লেক্স, দক্ষিণাপণ মার্কেট। যোগাযোগ : ৯৪৩৩২৪৫৬১২)
রেণি: ফ্যাশন সচেতন যাঁরা, রেণি তাঁদের সকলেরই খুব কাছের এক ব্র্যান্ড। সেলেব থেকে সাধারণ মানুষ সকলের পছন্দের তালিকায় থাকে এরা। বিভিন্ন রুচি ও বয়সের ক্রেতার কথা মাথায় রেখে এখানকার ডিজাইনাররা পোশাকের নকশা আঁকেন, বোনেন। তসর, চান্দেরি, ইক্কত, কটন সহ বিভিন্ন মেটেরিয়ালের উপর নজরকাড়া নকশা ও কাটিংয়ে পোশাক প্রস্তুত করে রেণি। এবারের পুজোও তার ব্যতিক্রম নয়। সুতি ও ইক্কতের মেলবন্ধনে আরামদায়ক কুর্তি চাইলে খরচ পড়বে ১৪০০ টাকা। এমন ইক্কত কুর্তির দাম শুরু ১২০০ টাকা থেকে। হাফ স্লিভ এই কুর্তি যে কোনও চেহারা ও কমপ্লেকশনে খুব ভালো মানাবে। উৎসবের মেজাজ ধরে রাখতে সোনার রং এবার পোশাকে ঠাঁই দিতে চেয়েছে রেণি। চলেছে সেই রঙের উপর নানা কাটিং ও নকশা। চান্দেরি মেটেরিয়ালের উপর কখনও মেরুন ও সোনালি রঙের এমব্রয়ডারির কনট্রাস্ট, কখনও বা পিচরঙা কাপড়ে সাদা সুতোর কাজ করা কলকা মোটিফ, কোনও কোনও পোশাকে আবার হলুদ-সবুজ রঙের জমিতে সোনালি রঙের চান্দেরি কাজ। রেণির এবছরের পুজো কালেকশনের এই কুর্তিগুলো সত্যিই আকর্ষণীয়। দাম ঘোরাফেরা করবে ৩০০০-৫৫০০ টাকার মধ্যে। যাঁরা সাদা রং পছন্দ করেন তাঁদের কথা মাথায় রেখে সাদার উপর গোল্ডেন চান্দেরি কাজের একটি লং ড্রেসও তৈরি করেছে রেণি। ভালো লাগতে পারে সেটিও। এর দাম ৩০০০ টাকা। চান্দেরি কামিজের দামও শুরু ৩০০০ টাকা থেকে। এছাড়াও শোরুমে আরও নানা মনকাড়া নকশার কুর্তা পাবেন।
(১৮৪২, রাজডাঙা মেন রোড, কসবা, কলকাতা ৭০০১০৭। যোগাযোগ: ৯২৩০৫১৮৯৩৬)
অমৃত বস্ত্রালয়: কলকাতা ছেড়ে একটু জেলার দিকে এগলে বস্ত্র ব্যবসায় অমৃত বস্ত্রালয় বেশ জনপ্রিয়। মূলত শাড়ির জন্য বিখ্যাত হলেও এদের দোকানে সালোয়ার স্যুট ও লেহেঙ্গার আলাদা কদর রয়েছে। পুজোর চাহিদার কথা মাথায় রেখে লেহেঙ্গার ক্ষেত্রে এরা নানারকম নকশায় নিজেদের সাজিয়েছে। সিল্ক, ভেলভেট, বেনারসি ও নেট কাপড়ের বিভিন্ন মনকাড়া নকশার লেহেঙ্গা এখানে পাবেন। দামও মধ্যবিত্তের পকেটসই। লেহেঙ্গায় এদের এতই ভ্যারাইটি যে মাত্র ১২০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত নানা রেঞ্জে এই পোশাক পাবেন। সালোয়ার স্যুটের ক্ষেত্রেও দামের একটা বড় রেঞ্জ পাবেন। কটন ও চান্দেরি সিল্কের কাপড়ে বিভিন্ন নকশা পাবেন এখানে। কম বাজেটের সালোয়ার স্যুটেও বাহারি নকশা পাবেন। দাম শুরু ৪২৫ টাকা থেকে। এরপর নকশা ও মেটেরিয়ালের উপর দাম ওঠানামা করবে। তবে একটু বেশি বাজেটের নকশার দিকে ঝুঁকলে দাম পড়বে ২০০০ টাকা।
(৫৪১, জিটি রোড, মল্লিকফটক, হাওড়া ময়দান। যোগাযোগ : ০৩৩-২৬৩৮৫৯৮৫/ ২৬৩৭৩৪৬০)
বসকো: হাওড়া পেরিয়ে আর একটু এগলেই হুগলি। এই জেলার অন্যতম সেরা বস্ত্রবিপণী চুঁচুড়ার বসকো। পুজোর মরশুমে তারাও চাহিদা বুঝে নানা নকশার কুর্তির সম্ভার রেখছে। সুতি ও রেয়ন দু’ধরনের মেটেরিয়ালের উপরই কুর্তি রয়েছে। পাবেন চান্দেরি কাজেরও। রেয়ন ও কটনের মিশেলে জমকালো নকশার কুর্তি চাইলে তাও মিলবে। এমন কুর্তি পছন্দ হলে বাজেট রাখুন ৮৫০ টাকার আশপাশে। এখানে দামের নানা রেঞ্জ রয়েছে। প্রতি বছরই এরা মধ্যবিত্তের পকেট বুঝে নানা বাজেটের কুর্তি রাখে। এবছরও তার ব্যতিক্রম নয়।
সাধারণত ৭০০-৮০০ টাকা রেঞ্জে কটন ও রেয়নের নানা মনকাড়া নকশার কুর্তি এখানে পাবেন। হাতার নকশায় বৈচিত্র্য আনবে এমন কটন কুর্তি মিলবে ৯০০-৯৫০ টাকা বাজেটের মধ্যেই। চাইলে এতে
ফ্রিলও পাবেন। ছিমছাম নকশার স্ট্রেট প্যান্ট ও তার সঙ্গে কনট্রাস্ট করে জমকালো নকশার কটন কুর্তির সেট মিলবে ৯০০-১০০০ টাকা বাজেটের মধ্যে। এছাড়াও কুর্তি-প্যান্টের নানা সেট বিভিন্ন নকশায় প্রস্তুত করেছে এরা। দাম পড়বে ২০০০ টাকার মধ্যে। পুজোয় তাই শহরতলির ফ্যাশনিস্তারাও পোশাকে কলকাতাকে টেক্কা দিতে প্রস্তুত বসকোর মতো বিপণীগুলোর সৌজন্যে।
(আমড়াতলা লেন, চুঁচুড়া হুগলি। যোগাযোগ: ৯৮৩০১৮০৬০৩)