হঠাৎ পাওয়া যোগাযোগের মাধ্যমে কর্ম জটিলতার অবসান ও মানসিক চিন্তামুক্তি। আয় ব্যয়ের ক্ষেত্র ঠিক থাকবে ... বিশদ
চীনে রান্নার একেবারে আদি পর্বেই ডিপ ও স্যসের ব্যবহার শুরু হয়। সেই সময় অবশ্য তার এত রকমফের ছিল না। হাতে গোনা কয়েকটা মাত্র ধরন পাওয়া যেত স্যসে। তার মধ্যে বিশেষ জনপ্রিয় ছিল সয়া স্যস, ভিনিগার, তিলের পেস্ট দিয়ে তৈরি সিসেমি স্যস ইত্যাদি। চীনে রান্নার ইতিহাস ঘাঁটলে দেখবেন হান রাজত্বের সময় (খ্রিস্টপূর্বাব্দ ২২০ থেকে খ্রিস্টপূর্বাব্দ ২০৬) থেকেই চীনে রান্নার স্বাদ বাড়ানোর জন্য স্যস ব্যবহার করতেন রাজপরিবারের রাঁধুনিরা। পরবর্তীতে অঞ্চলভিত্তিক কিছু ভিন্ন ধরনের স্যসের প্রচলন উঠে আসে রান্নায়। হোয়েসিন স্যস, চিলি অয়েল, হট মাস্টার্ড স্যস তারই কয়েকটি। আধুনিক রান্নার উপকরণ হিসেবে যেসব স্যস খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তার মধ্যে পাবেন সুইট সয়া স্যস, স্রিরাচা মেও স্যস, চিলি ট্যামারিন্ড স্যস, প্লাম স্যস, দুবানিজিয়াং স্যস ইত্যাদি। এই স্যসগুলো রান্নার ফ্লেভার বাড়িয়ে তোলে। স্টার ফ্রাই, ডাম্পলিং ইত্যাদি রান্নায় মূলত এর ব্যবহার চোখে পড়ার মতো।
চীনে রান্নায় স্যস ব্যবহার না করলে স্বাদ জমে না, ফিকে লাগে। নুন ও মিষ্টির সঠিক ব্যালান্স আর স্যসের ব্যবহারে চীনে রান্না যেন প্রাণ পায়। আর ডিপ, তা তো যে কোনও খাবারের পরিবেশনের সময় চাই-ই চাই। এক একটা রান্নায় স্যস যেমন এক এক রকম তেমনই কিন্তু ডিপের ব্যবহারও পদ বিশেষে ভিন্ন। এমন স্যস আবার বাড়িতেও বানানো যায়। তেমনই দু’টি রেসিপি জানালেন শেফ।
শৃরাচা মেয়ো স্যস
উপকরণ: মেয়োনিজ কাপ, শৃরাচা স্যস ১ টেবিল চামচ, লেবুর রস ১ চা চামচ, নুন স্বাদ মতো।
পদ্ধতি: একটা ছোট পাত্রে মেয়োনিজ, শৃরাচা স্যস একসঙ্গে নিয়ে তা ভালো করে ফেটিয়ে নিন। অনবরত ফেটাতে ফেটাতে দেখবেন মেয়োনিজের রং বদলে যাবে। এবং তা একে অপরের সঙ্গে সম্পূর্ণ মিশে যাবে। কাঁটা চামচ সহযোগে একটু জোরে জোরে ফেটালে ভালো মিশ খাবে উপকরণ দু’টি। এরপর তাতে লেবুর রস মিশিয়ে নিন। নুন মেশান স্বাদ অনুযায়ী। এবার তা মিনিট পনেরো ফ্রিজে রেখে পরিবেশন করুন। যে কোনও ফ্রায়েড ডিশ, সুশি ইত্যাদির সঙ্গে এই স্যস খুবই ভালো জমবে। তাছাড়া স্যালাড ড্রেসিং হিসেবেও তা ব্যবহার করতে পারেন। লাল লঙ্কা, ভিনিগার, নুন ও চিনি মিশিয়ে শৃরাচা স্যস বানাতে হবে। উপকরণগুলো একসঙ্গে বেটে নিতে হবে।
হট পেপার স্যস
উপকরণ: থেঁতো করা গোটা গোলমরিচ ২ টেবিল চামচ, চিলি ফ্লেক্স ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজশাক মিহি করে কুচানো ২ টেবিল চামচ, রসুন কুচি ২ কোয়া, আদা কুচি ১ টেবিল চামচ, সয়া স্যস ২ টেবিল চামচ, ভিনিগার ১ টেবিল চামচ, চিনি ১ চা চামচ, নুন চা চামচ, জল ১ কাপ, তিলের তেল ১ টেবিল চামচ।
পদ্ধতি: একটা স্যসপ্যানে তেল গরম করে নিন। তাতে আদা-রসুন ভাজুন। বেশ লালচে হলে আর আদা নরম হয়ে যাওয়া পর্যন্ত ভাজবেন। তারপর এতে গোলমরিচ আর চিলি ফ্লেক্স দিয়ে দিন। মশলার একটা ঝাঁজ আর সুগন্ধ বেরতে শুরু করবে। তখন সয়া স্যস, ভিনিগার, নুন ও চিনি মিশিয়ে নিন। সবশেষে পেঁয়াজশাক দিয়ে দিন। এরপর তাও খানিকক্ষণ নাড়াচাড়া করে ভাজুন। এরপর একে একে ভিনিগার, সয়া স্যস ও জল দিয়ে ঢিমে আঁচে রান্না করুন। ক্রমাগত নাড়বেন যাতে তলাটা কোনওভাবেই না ধরে যায়। খেয়াল রাখতে হবে, আদা-রসুন বা পেঁয়াজশাকও যেন পুড়ে না যায়।
এইভাবে নাড়তে নাড়তে দেখবেন মিশ্রণটা ফুটতে শুরু করেছে। ফুটতে ফুটতে দেখবেন স্যস একসময় ঘন হয়ে আসবে। মোটামুটি ঘন ও মোলায়েম হলে এবং রঙে একটা চকচকে ভাব এলে স্যসটা নামিয়ে নিন।