Bartaman Patrika
অমৃতকথা
 

গায়ে হার্মাদি দুর্গন্ধ, বাঁচতে মুছছে কংগ্রেস?
হারাধন চৌধুরী

‘নির্বাচনের ঠিক ছ’দিন আগে দমদমে পুলিস ও কংগ্রেস একযোগে সশস্ত্র তাণ্ডব চালায়। মুহুর্মুহু বোমা ও গুলিবর্ষণ করা হয়। হত্যা করা হয় ১২ জন সিপিআই(এম) কর্মী-সমর্থককে। এঁদের মধ্যে সাতজনের মৃতদেহ পুঁতে ফেলা হয় বাগজোলা খালে। নিখোঁজ হন ৫০ জন। গুরুতরভাবে আহত হন অজস্র কর্মী। কংগ্রেস পরিচালিত একটি মিছিল থেকেই চলে এই পরিকল্পিত আক্রমণ। পুলিস সরাসরি কংগ্রেসি গুন্ডাদের পক্ষ নেয়। সিপিআই(এম) এবং ফরওয়ার্ড ব্লক পার্টি অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ভস্মীভূত হয় আমাদের কর্মী-সমর্থকদের শতাধিক বাড়ি-দোকান। নারীদেরও রেহাই দেওয়া হয়নি।’ (সংক্ষেপিত)
—এখানে বক্তার নাম জ্যোতি বসু। রাজনৈতিক আত্মকথন ‘যতদূর মনে পড়ে’ গ্রন্থে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কথাগুলি বলেছেন ‘বাহাত্তরের রিগিং’ প্রসঙ্গে। 
ওই বইতে ‘চতুর্থ পঞ্চায়েত নির্বাচন’ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য এইরকম— 
‘কংগ্রেস প্রথম থেকেই চায়নি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হোক। প্রথমে ওরা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার অজুহাত তুলে বিরোধিতা করেছিল। নির্বাচন এবং ফল ঘোষণা স্থগিত রাখার উদ্দেশ্যে মামলা করেছিল তিনশোর বেশি। বিজেপির সঙ্গে আসন সমঝোতাও করেছিল কংগ্রেস। শুধুমাত্র গ্রাম পঞ্চায়েতেই প্রায় দশ হাজার আসন ছেড়ে দিয়েছিল বিজেপিকে। ভোটের পর তথাকথিত সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে ৭ জুন দু’দল একসঙ্গে বাংলা বন্‌঩ধের ডাক দেয়। কংগ্রেস, বিজেপি, ঝাড়খণ্ডি-সহ প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিগুলি কিছু আসনে বামফ্রন্টের অনৈক্যের সুযোগ নিয়ে কার্যত সর্বত্র সিপিআই(এম) বিরোধী মহাজোট গড়ে তোলে। ... এদের সম্মিলিত হামলা-সন্ত্রাস মোকাবিলা করতে গিয়ে শুধুমাত্র আমাদের পার্টিরই ২৬ জন নেতা-কর্মী শহিদ হন। আহতও হন চার শতাধিক পার্টিকর্মী।’ (সংক্ষেপিত)
রাইটার্সে জ্যোতি বসুর উত্তরসূরি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তাঁর ‘ফিরে দেখা। দ্বিতীয় পর্ব। বামফ্রন্ট সরকারের শেষ ১০ বছর’ বইতে কী লিখলেন? পড়ুন—
‘কংগ্রেসের বিকল্প পথের সন্ধান থেকেই বামফ্রন্টের জন্ম। শিল্পপতি, জমিদারদের কর্মসূচির পরিবর্তে দেশের শ্রমজীবী মানুষ অর্থাৎ কল-কারখানায় শ্রমিক, কর্মচারী, শিক্ষক, দিনমজুর, গ্রামের কৃষক-খেতমজুর, মৎস্যজীবী, তাঁতি, কামার, কুমোর—এঁরাই আমাদের কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে। যেখানেই শ্রমিক কর্মচারী শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া আন্দোলন সংগঠিত হয়েছে বামফ্রন্ট সরকার তাঁদের স্বার্থ রক্ষা করেছে। গ্রামাঞ্চলেও ভূমি সংস্কার, গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েতের লক্ষ্য ছিল কৃষক ও গরিবের স্বার্থ রক্ষা এবং তাঁদের জীবনের উন্নয়ন। ... উদারনীতির ফলে সমাজের শ্রেণিবৈষম্য বাড়ছে। জনসাধারণেরই একাংশ দারিদ্র্যের প্রান্তসীমায় নেমে আসছে।’ (সংক্ষেপিত)
এরই পাশে রাখছি বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্যের ‘টুকরো টুকরো কথা’ গ্রন্থ থেকে কিছু মন্তব্য। ‘কভু কালী, কভু বনমালী’ শীর্ষক অধ্যায়ে তিনি লিখেছেন—
‘ভারতের কমিউনিস্টরা আশিতেও সাবালক হননি। ... জন্মলগ্ন থেকেই এই প্রাচীন দেশের কোনোকিছুরই সঠিক মূল্যায়ন করতে পারেননি তাঁরা। তাঁরা গান্ধীকেও চিনতে পারেননি—সাম্রাজ্যবাদ ও ধনতন্ত্রের দালাল বিশেষণে বিদ্ধ করেছেন। রবীন্দ্রনাথ তাঁদের চোখে বুর্জোয়াদের কবি। সুভাষচন্দ্র অনেক পরে মহান দেশপ্রেমিক হয়েছেন। তবে নেহরুর মূল্যায়নে অপারগ ছিলেন কমিউনিস্টরা। বহু ক্ষেত্রেই তাঁরা পরে ভুল স্বীকার করেছেন অবশ্য! তবে তা কি সত্যিসত্যিই আত্মসমালোচনা, নাকি ভোটের রাজনীতি এবং ক্ষমতা দখলের তাগিদ? স্বাধীনতার আগে মুসলিম লিগের সাম্প্রদায়িক দাবি এবং দ্বিজাতি তত্ত্বের সমর্থক ছিলেন কমিউনিস্টরা। আর এখন এমন হাবভাব যেন ধর্মনিরপেক্ষতার প্রমাণের জন্য ওঁদেরই শংসাপত্রের প্রয়োজন কংগ্রেসের!’ (সংক্ষেপিত)
‘সন্ত্রাসের ব্লু প্রিন্ট তৈরি’ শিরোনামে প্রদীপ ভট্টাচার্য লিখেছেন (২৮ মার্চ, ২০০৪)—
‘ভোটে জিততে সন্ত্রাসের ছক তৈরি করে ফেলেছে সিপিএম। জেলায় জেলায় বিশেষ রিগিং বাহিনীও তৈরি। এজন্য প্রশাসন ও পুলিসের একাংশকে কাজে লাগাবেন বুদ্ধবাবু। রিগিং বাহিনীর গোপন ট্রেনিংও আছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে কেশপুর, গড়বেতা-সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে সিপিএম সন্ত্রাস করে ভোটে জেতে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও মেদিনীপুর—এই তিন জেলায় বিধানসভা ভোটের দিন পুলিসের সামনেই সিপিএম প্রকৃত ভোটারদের বুথে ঢুকতে না দিয়ে ছাপ্পা ভোট মেরে গিয়েছে। তাই মেদিনীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় সিপিএম প্রার্থীদের জয়ের ব্যবধান ছিল এক লাখেরও বেশি! ভোটার তালিকায় নাম তোলা নিয়ে পরিকল্পিতভাবে কংগ্রেসিদের চরিত্রহনন করেছে সিপিএম। তা থেকে বাদ পড়েননি মহিলারাও। কোনও ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। ... সব মিলিয়ে এটাই বুদ্ধদেববাবুর মরূদ্যান!’ (সংক্ষেপিত)
‘বুদ্ধবাবু, হ্যাঁ, আমরাও বলছি’ (২৫ জানুয়ারি, ২০০৪) শীর্ষক অধ্যায়ে প্রদীপ ভট্টাচার্যের বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য—
‘স্বাভাবিক হোক বা অস্বাভাবিক—সব মৃত্যুরই একটা কারণ থাকে—চিকিৎসকের ভাষায় কার্ডিয়াক ফেলিওর। কিন্তু কারণ শুধু এইটুকুই নয়। তাই বন্ধ চা বাগান শ্রমিক পরিবারের অনেকেরই মৃত্যু সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী যে কারণ দেখিয়েছেন, তা সর্বার্থে সত্য নয়। ... দীর্ঘদিনের প্রশাসনিক ব্যর্থতা, প্রয়োজনীয় উদ্যোগের অভাব এই শিল্পকে ধ্বংস করেছে। সঙ্গে রয়েছে দলীয় মদতে বাগান মালিক ও শ্রমিকদের উপর আর্থিক জুলুম। ওই শ্রমিকদের মধ্যে সিপিএমের প্রভাব ছিল খুবই সামান্য। শ্রমিক সংগঠনগুলি মূলত ছিল কংগ্রেসের আদর্শে বিশ্বাসী। বাকি কিছু অংশে প্রভাব ছিল ফরওয়ার্ড ব্লক ও আরএসপির। শ্রমিকদের মধ্যে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে প্রশাসনিক ক্ষমতাকে হাতিয়ার করেছিল সিপিএম। দলসর্বস্ব রাজনীতির কুফল মেলে তখন থেকেই। সিপিএম নেতৃত্ব সেদিন জেনেশুনেই এই শিল্প-ধ্বংসের অভিযান চালায় শুধুমাত্র কংগ্রেস এবং শরিকদের অস্তিত্ব নষ্ট করতে। ... শুধুমাত্র গরিবির সঙ্গে যুদ্ধ করে একবছরে জলপাইগুড়ি জেলায় ১২০০ শ্রমিক মারা গিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর বিশ্লেষণে সেটা অসুখ হলেও তার কারণ কিন্তু অনাহার। আত্মহত্যারও কারণ পরিবারের গ্রাসাচ্ছাদনের ব্যবস্থা করতে না-পারা। বাগানগুলি বন্ধ করে সিপিএমের তাবড় নেতা/ফড়েরা ঝাঁপিয়ে পড়েছেন জমিগুলি প্রোমোটরদের হাতে তুলে দিতে। কংগ্রেসকে স্তব্ধ করার চেষ্টা হলেও হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিয়েছেন কমলবাবু (গুহ)। বুদ্ধবাবু, আমরাও বলছি, যে-কথা আপনি বলেছেন, তা সত্যি নয়। হতভাগ্য শ্রমিকদের খোলা চোখে দেখার চেষ্টা করুন।’ (সংক্ষেপিত)
এখনও কলকাতায় এবং জেলায় জেলায় খাড়া রয়েছে অগুনতি শহিদ বেদি। শহিদের তালিকার নীচে কোনোটিতে বিষোদ্গার নজরে পড়ে ‘সিপিএমের জল্লাদ’ এবং কোনোটিতে ‘কংগ্রেসি খুনিদের’ সম্পর্কে। এছাড়া হাওড়ার কান্দুয়া গ‍্রাম এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে পাঞ্জা থেকে হাত কেটে নেওয়া—এক বেনজির নৃশংসতার চিহ্ন। ‘হাত’ চিহ্নে ভোট দেওয়ার শাস্তি দিয়েছিল জ্যোতি বসুর পার্টির হার্মাদরা। বর্ধমানে পা দিয়ে গাওয়া ঘিয়ে প্রস্তুত সীতাভোগ, মিহিদানার সুবাস নাকে আসার আগেই কারও কারও মনের পর্দায় ভেসে ওঠে সাঁইবাড়ি হত্যাকাণ্ডের ছবি!  
এ হল তাদের সম্পর্ক-পরম্পরার শো-রুম। গোডাউনের চেহারা অনুমেয়। এরপরও কি মনে হয় না অন্তত বাংলার বুকে সিপিএম-কংগ্রেসের জোট একটা জবরদস্তি কারবার? তবু চিরকালের সাপ ও নেউল নির্বাচনী মিত্রতার সম্পর্কে আবদ্ধ হল। ‘সিপিএমের বি টিম’ হিসেবে ‘সুনামের সঙ্গেই’ দায়িত্ব পালন করেছিল সোমেন মিত্রদের প্রদেশ কংগ্রেস। এজন্যই আপসহীন সংগ্রামী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস ছেড়ে নিজের দল তৃণমূল কংগ্রেস গড়তে বাধ্য হন। সেই দলই যখন সিপিএম নামক জগদ্দল শক্তিকে রাইটার্স থেকে হটাতে বদ্ধপরিকর, তখন তাঁকে সমর্থন করেন রাজ্যের প্রায় সকলেই। ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে সিপিএম বিরোধিতা এমন উচ্চতা স্পর্শ করে যে, তার বিরোধিতার অর্থই ‘গণশত্রু’ চিহ্নিত হয়ে যাওয়া। ফলে তখন প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে দাঁড়ানোর কোনও সুযোগই ছিল না, সেটা করলে নির্ঘাত আত্মঘাতী পদক্ষেপই হতো। ওই নির্বাচনে অগ্নিকন্যার নেতৃত্বে আসলে জিতেছিল বাংলার মানবাধিকার ও গণতন্ত্র। মমতার বদান্যতায় ৪২টি আসনে জিতে সেবার ওই সরকারেও যোগ দিয়েছিল কংগ্রেস। তবে তাদের পক্ষে বেশিদিন থাকা সম্ভব হয়নি। তৃণমূলের ছাতার নীচে থেকে কংগ্রেসের অতিদ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার পিছনে যে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের নিরন্তর নষ্টামি সক্রিয় ছিল, তার প্রমাণ পেতে দেরি হয়নি। কংগ্রেস-সিপিএমের মাখামাখি পোক্ত হতে দেখা গেল ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনে। প্রদেশ কংগ্রেসে মমতা বিরোধিতার প্রতীক অধীর চৌধুরী। তাঁরই একবগ্গা সিদ্ধান্তে ওই ভোটে সিপিএম-কংগ্রেসের জোট হয়। 
সেটা নানা পর্যায়ে টিকে থাকলেও দিকে দিকে কংগ্রেসের নিচুতলায় গর্জনই শোনা গিয়েছে নেতৃত্বের অবিমৃশ্যকারিতার বিরুদ্ধে। সেই জনমত উপর্যুপরি উপেক্ষারই দাম মেটাচ্ছে কংগ্রেস। ২৯৪ আসনের বিধানসভায় তারা এখন ‘মহাশূন্য’! সঙ্গে জিগরি দোস্ত সিপিএমেরও হাল অনুরূপ। মাঝখান থেকে দই মেরেছে নেপোয় (বিজেপি এবং আইএসএফ)! অথচ কংগ্রেসই একমাত্র দল, তামাম ভারতের প্রতিটি গ্রামে যার কিছু কর্মী এবং তেরঙ্গা পতাকা ধরার লোক আছে। নিশ্চিতভাবে তাঁদেরই স্বাভিমান খর্ব হচ্ছিল বাংলায়, অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে। সম্ভবত এজন্যই প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বে আনা হয়েছে তাৎপর্যপূর্ণ বদল। অধীরের কুর্সিতে এখন শুভঙ্কর সরকার—যিনি মমতা-বিরোধী এজেন্ডা নিয়ে রাজনীতি করেননি কখনও। অধীরের সিপিএম-পিরিতির কারণে বাংলার যেসব কংগ্রেস কর্মীর দম বন্ধ হয়ে আসছিল, শুভঙ্করকে পাশে পেয়ে তাঁরা হয়তো উজ্জীবিত। জেলায় জেলায় তাঁরাই আওয়াজ তুলেছেন, ‘সিপিএমের সঙ্গে আর চলব না।’ গা থেকে হার্মাদি দুর্গন্ধ দ্রুত মুছেই কংগ্রেসকে বাঁচাতে মরিয়া তাঁরা। আসন্ন উপনির্বাচনে তাঁরা একক শক্তিতেই লড়াই দিতে চান, সিপিএমের লেজুড় থাকতে চান না কোনোমতেই। অত্যাচার অনাচারে রেকর্ড গড়ে বাংলার ক্ষমতার অলিন্দ থেকে বিতাড়িত মার্কসবাদী কমিউনিস্টদের অক্সিজেন জোগাবারও দায়িত্ব কেন নেবেন তাঁরা! যারা নিজেদেরকে ভারতের স্বাধীনতার ‘ভগীরথ’ বলে আত্মশ্লাঘা অনুভব করে এসেছে, এই উপনির্বাচনই হয়তো সেই শতবর্ষ প্রাচীন কংগ্রেসকে পুনর্জন্মলাভের আশ্চর্য সন্ধান দিতে পারে। আর এই উদ্যোগ ব্যর্থ হলে, একবগ্গা মমতা-বিরোধিতার রাজনীতিই কংগ্রেসকে বাংলার মাটি থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার রাস্তাটা পরিষ্কার করে দেবে—একই করুণ দশা হতে পারে সিপিএমেরও।
23rd  October, 2024
ভারতবর্ষীয় জীবনজাল

আর্য্যা নিবেদিতার “ভারতবর্ষীয় জীবনজাল” নামক গ্রন্থখানির কথা আপনাদিগের নিকটে উপস্থিত করিতেছি। দীপশিক্ষা যেমন একই কালে আপনাকে এবং বহুদূরবর্ত্তী অন্ধকারকে প্রদীপ্ত করিয়া তোলে, তেমনি এই পুস্তকখানি আমাদের সমাজের অভ্যন্তরে আপনার রশ্মি প্রেরণ করিয়াছে এবং সেই রশ্মির সাহায্যে আমাদিগের অতীত ইতিহাসের অন্ধকারকে কিয়ৎপরিমাণে দূর করিয়াছে। বিশদ

সংসার

সংসারে কেন হবে না? ঠাকুর দৃষ্টান্ত দিচ্ছেন জনক ঋষির, রাজর্ষি জনক—তিনি রাজাও ছিলেন আবার ঋষিও ছিলেন—তিনি রাজর্ষি। তাঁর সম্বন্ধে একটা গল্প আছে—শুকদেব ব্যাসের পুত্র। তিনি ব্যাসকে বলেছিলেন—‘আমাকে ব্রহ্মজ্ঞান দিন।’ বিশদ

04th  November, 2024
দীপাবলি

সংস্কৃতের ‘ক’, ‘ত’, ‘প’, ‘দ’ প্রাকৃতে ‘অ’ হয়ে যায়। তাই ‘দীপ’ হয়ে যায় ‘দীয়’। দীপ মানে আগুনের শিখা অথবা কোন একটা ছোট পাত্রে আগুন জ্বলছে। প্রদীপ মানে কোন একটা বড় পাত্রে শিখা জ্বলছে, দীপক মানে ছোট কী বড় দূর থেকে ঠিক বোঝা যছে না কিন্তু গরম লাগছে। বিশদ

01st  November, 2024
দশমহাবিদ্যার

শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দপুরী মহারাজ একজন পণ্ডিত সাধক ছিলেন। তন্ত্র, পুরাণ এবং অন্যান্য শাস্ত্রীয় গ্রন্থ থেকে তিনি যথেষ্ট উদ্ধৃতি তাঁর রচিত গ্রন্থে সন্নিবেশিত করেছেন। কালী, তারা, ষোড়শী, ভুবনেশ্বরী, ভৈরবী, ছিন্নমস্তা, ধূমাবতী, বগলা, মাতঙ্গী ও কমলা ইঁহারাই দশমহাবিদ্যা। বিশদ

29th  October, 2024
ঈশ্বরপ্রেম—সাফল্যের অপরিহার্য শর্ত্ত

তোমরা জান, অন্যান্য সকল বিষয়ে যত যত্নই নেওয়া হোক না কেন, তরকারিতে লবণ ঠিক মত না দিলে তা কখনও সুস্বাদু হয় না। তেমনই সসীম ও অসীমের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের যাবতীয় প্রয়াস বিফল হয় যদি ভক্তির অভাব ঘটে।
বিশদ

28th  October, 2024
গুরু

গুরুকে মানুষ বুদ্ধি করতে নাই। সচ্চিদানন্দই গুরুরূপে আসেন। মানুষ-গুরুর কাছে যদি কেউ দীক্ষা লয়, তাঁকে সাক্ষাৎ ঈশ্বর ভাবতে হয়, তবে তো মন্ত্রে বিশ্বাস হবে! শূদ্র (একলব্য) মাটির দ্রোণকে সাক্ষাৎ দ্রোণাচার্য্য জ্ঞানে পূজা করত, তাতেই বাণ শিক্ষায় সিদ্ধ হল। বিশদ

27th  October, 2024
ভজস্ব মাম্‌

বিনশ্বর ও দুঃখপূর্ণ জগতে সুদুর্লভ মনুষ্য দেহধারী সংসারী মানবের ঈশ্বর ভজনই নিত্য সুখশান্তি লাভের একমাত্র প্রকৃষ্ট উপায়। এই উপদেশ স্বয়ং ভগবান্‌ গীতার নবম অধ্যায়ে রাজবিদ্যারাজগুহ্যযোগের বর্ণনার সমাপ্তিতে ব্যক্ত করিয়াছেন বিশদ

26th  October, 2024
স্বীকারোক্তি

মানুষের সামর্থ্য খুবই সীমিত। তবে হ্যাঁ, এই সীমিত পরিবেশের  ভেতরে যে যতটুকু জানে, তাই নিয়ে বলতে পারে—আমার অল্প বুদ্ধিতে আমি যা জানি, বুঝি, তদনুযায়ী কাজ করছি; কোনো গ্যারান্টি দেবার মতো বিদ্যে-বুদ্ধি আমার নেই। এইটেই হ’ল স্পষ্ট স্বীকারোক্তি। বিশদ

25th  October, 2024
ভক্তি

একজন চাকরী করে কষ্টে সৃষ্টে কিছু কিছু করে টাকা জমাত। একদিন গুণে দেখে যে হাজার টাকা জমেছে। অমনি আহ্লাদে আটখানা হয়ে মনে করলে তবে আর কেন চাকরী করা? হাজার টাকা ত জমেছে, আর কি? এই বলে চাকরী ছেড়ে দিলে! বিশদ

24th  October, 2024
সাধনভজন

প্রথমে সাধনভজন করতে গেলে আহার ও স্বাস্থ্য অনুকূল হওয়া চাই। কোথায় মন চলে যায়, মাথা-টাথা এক রকম হয়ে যায়। এই সব করতে হলে একটু গাওয়া ঘি, দুধ খেতে হয়। শরীরও সুস্থ হওয়া চাই। ঠাকুরের রাসমণির দেবালয়ে স্থান পেতেই তো সাধনভজনের কত সহায় হলো। বিশদ

23rd  October, 2024
কৃষ্ণানুরাগ

এক ভক্ত চীৎকার করে বলেন, “হায়, আমি মথুরা দর্শন করতে পারলাম না! যে মথুরার নাম শুনলে আমার শরীর রোমাঞ্চিত হয়, আমি সেই স্থান দর্শন করতে পারলাম না। সুতরাং আমার এই চোখের কি প্রয়োজন?” এই উক্তি থেকে মথুরা দর্শনের তীব্র উৎকণ্ঠা প্রকাশিত হয়, যার উদয় গভীর কৃষ্ণভক্তি থেকে হয়। বিশদ

22nd  October, 2024
চিঠি

আলমোড়ায় আবস্থানকালে মহাপুরুষজী শ্রদ্ধেয় মাস্টার মহাশয়কে কয়েকখানি চিঠি লিখিয়াছিলেন; তাহার মধ্যে ২৭।১০।১৩ তারিখের চিঠিতে রহিয়াছে, “আপনার চিঠি পাইয়া সাতিশয় আনন্দিত হইয়াছি—বিশেষ করিয়া আপনি মঠেই বাস করিবার সংকল্প করিয়াছেন জানিয়া।
বিশদ

21st  October, 2024
আত্মজ্ঞান

তত্ত্বজ্ঞানের মূল আত্মযোগ, আত্মজ্ঞানের মূল শিবে ভক্তি, ভক্তির মূল ভগবানে প্রেম, প্রেমের মূল শাস্ত্র শ্রবণ, শ্রবণের মূল সৎসঙ্গ, সৎসঙ্গের মূল সদ্‌গুরু, আর জ্ঞান উৎপন্ন হইলে মুক্তি নিশ্চিত। গাছের গোড়ায় জল দিলে যেমন গাছের শাখাগুলি পুষ্ট হয়, তেমনি শিবের পূজায় সমস্ত জগৎ সন্তুষ্ট হয়। বিশদ

20th  October, 2024
হরিনাম-প্রচার

শ্রীচৈতন্যের হরিনাম-প্রচার প্রসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ বলতেন, ‘যিনি পাপ হরণ করেন তিনিই হরি। হরি ত্রিতাপ হরণ করেন। চৈতন্যদেব হরিনাম প্রচার করেছিলেন—অতএব ভাল। দ্যাখ চৈতন্যদেব কত বড় পণ্ডিত—আর তিনি অবতার। তিনি যে-কালে এই নাম প্রচার করেছিলেন এ অবশ্য ভাল।’ বিশদ

19th  October, 2024
সাপ

গভীর ধ্যানে বাহ্যজ্ঞান শূন্য হয়। ধ্যানে একাগ্রতা হয়, অন্য কিছু দেখাশুনা যায় না, এমন কি স্পর্শবোধ পর্য্যন্ত হয় না। গায়ের উপর দিয়ে যদি সাপ চলে যায় তাহলে যে ধ্যান করে সেও বুঝতে পারে না, সাপটাও জানতে পারে না।
বিশদ

18th  October, 2024
মহাপুরুষ

জনৈক সন্ন্যাসী একদিন কথাপ্রসঙ্গে বলিয়াছেন, “১৯০৮ সালে যখন আমি প্রথম মঠে যোগদান করি তখন দেখেছি মহাপুরুষজী মঠের কাজকর্ম দেখতেন; অথচ সর্বদাই নিজের ভাবে বিভোর হয়ে থাকতেন। আর কি কঠোর জীবনই তাঁর ছিল! পরনে সামান্য হাঁটুপর্যন্ত কাপড়, খালি গা, খালি পা—ঐ ভাবে মঠে বেড়াতেন। বিশদ

17th  October, 2024
একনজরে
প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নেই। মহিলা চিকিৎসক নেই। অন্যান্য সুযোগ সুবিধার অবস্থাও তথৈবচ! অসমের ডিটেনশন শিবিরগুলির পরিকাঠামোগত খামতি নিয়ে সোমবার আরও একবার অসন্তোষ প্রকাশ করল সুপ্রিম ...

জনসমক্ষে দেশে কড়া পোশাকবিধির প্রতিবাদ করলেন ইরানের আরও এক তরুণী। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে হাঁটলেন শুধু অন্তর্বাস পরে। এরপরই তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। কিন্তু দু’দিন কেটে গেলেও ...

সোমবার ভোর চারটের সময় বারাসতের একটি পুজো মণ্ডপ দেখতে গিয়ে পুলিসের হেনস্থার অভিযোগ তোলেন এক মহিলা। যদিও বারাসত থানার পুলিস হেনস্থা বা মারধরের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি করেছে। ...

বালুরঘাটে ল’কলেজ পাড়ায় নেশার টাকা না পেয়ে খুনের অভিযোগে ধৃতকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করল পুলিস। পাশাপাশি এক দুষ্কৃতীর বাড়ি থেকে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

উচ্চতর বৃত্তিমূলক শিক্ষা লাভের জন্য নামী স্বদেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানে সুযোগ পেতে পারেন। অর্থকর্মে উন্নতি ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৫৫৬: পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধে মোগল সম্রাট আকবরের বাহিনীর হাতে হেমু পরাস্ত হন
১৭৯৫: বাংলা নাটকের প্রথম বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয় ‘ক্যালকাটা গেজেট’ পত্রিকায়
১৮৭০: আইনজীবী এবং রাজনীতিবিদ দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের জন্ম
১৮৮৭: স্বাধীনতা সংগ্রামী বিপিনবিহারী গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম
১৮৯২: বৃটিশ-ভারতীয় বিজ্ঞানী জে বি এস হ্যালডেনের জন্ম
১৮৯৩: রবীন্দ্রনাথের পুত্রবধূ ও রথীন্দ্রনাথের স্ত্রী তথা লেখক, কবি, চিত্রশিল্পী ও নৃত্যবিশারদ প্রতিমা ঠাকুরের জন্ম
১৯০২: গহরজানের গান দিয়ে কলকাতায় এশিয়ার প্রথম রেকর্ডিং শুরু হয়
১৯০৫: অভিনেতা ধীরাজ ভট্টাচার্যের জন্ম
১৯১৫: ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফিরোজ শাহ মেহতার মৃত্যু
১৯১৮: বিশিষ্ট বাঙালি কবি ও সাহিত্যিক বাণী রায়ের জন্ম
১৯৫৫: বিশিষ্ট সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক করণ থাপারের জন্ম
১৯৭৪: অভিনেতা অহীন্দ্র চৌধুরীর মৃত্যু
১৯৮৮: ক্রিকেটার বিরাট কোহলির জন্ম
২০০৬: ইরাকের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে আল দুজাইল ট্রায়ালে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়
২০১১: সঙ্গীতশিল্পী ভূপেন হাজারিকার মৃত্যু
২০১২: যাত্রাসম্রাট শান্তিগোপাল পালের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.২৫ টাকা ৮৪.৯৯ টাকা
পাউন্ড ১০৭.৪১ টাকা ১১১.১৯ টাকা
ইউরো ৮৯.৯৮ টাকা ৯৩.৩৯ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৮,৬৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৯,০৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭৫,১৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৯৪,৮৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৯৪,৯৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১৯ কার্তিক, ১৪৩১, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪। চতুর্থী ৪৬/১৫ রাত্রি ১২/১৭। জ্যেষ্ঠা নক্ষত্র ৯/৫৫ দিবা ৯/৪৫। সূর্যোদয় ৫/৪৭/৯, সূর্যাস্ত ৪/৫৩/২৬। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/৩১ মধ্যে পুনঃ ৭/১৬ গতে ১০/৫৮ মধ্যে। রাত্রি ৭/২৯ গতে ৮/২০ মধ্যে পুনঃ ৯/১২ গতে ১১/৪৬ মধ্যে। পুনঃ ১/৩০ গতে ৩/১২ মধ্যে পুনঃ ৪/৫৫ গতে উদয়াবধি। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ৭/২৯ মধ্যে। বারবেলা ৭/১০ গতে ৮/৩৪ মধ্যে পুনঃ ১২/৪৪ গতে ২/৭ মধ্যে। কালরাত্রি ৬/৩০ গতে ৮/৬ মধ্যে। 
১৯ কার্তিক, ১৪৩১, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪। চতুর্থী রাত্রি ৯/৩৫। জ্যেষ্ঠা নক্ষত্র দিবা ৮/৩৩। সূর্যোদয় ৫/৪৮, সূর্যাস্ত ৪/৫৪। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৬ মধ্যে ও ৭/২৯ গতে ১১/৩ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/২৬ গতে ৮/১৯ মধ্যে ও ৯/১২ গতে ১১/৪১ মধ্যে ও ১/৩৮ গতে ৩/২৪ মধ্যে ও ৫/১০ গতে ৫/৪৮ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ৭/২৬ মধ্যে। বারবেলা ৭/১১ গতে ৮/৩৫ মধ্যে ও ১২/৪৪ গতে ২/৮ মধ্যে। কালরাত্রি ৬/৩১ গতে ৮/৮ মধ্যে। 
২ জমাদিয়ল আউয়ল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আপনার আজকের দিনটি
মেষ: কাজকর্ম অপেক্ষাকৃত শুভ। বৃষ: যোগাযোগ রক্ষায় সাফল্যের যোগ। মিথুন: মানসিক অস্থিরতা বাড়াবে। কর্কট: ধর্মকর্মে মন। সিংহ: কর্মস্থলে পদোন্নতির ...বিশদ

10:36:38 AM

আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে শুরু হবে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন, চলবে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত, জানালেন সংসদ বিষয়কমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু

10:40:36 PM

ছুরির আঘাতে মারাত্মক জখম সবজি বিক্রেতা
  এক সবজি বিক্রেতার উপর ছুরি নিয়ে হামলার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ...বিশদ

11:06:00 PM

পাঞ্জাবের সাঙরুর জেলায় মাঠেই জ্বালানো হল ফসল, ধোঁয়াচ্ছন্ন এলাকা

10:43:00 PM

গুজরাতে নির্মীয়মান রেল ব্রিজের একাংশ ভেঙে পড়ার ঘটনায় ধ্বংসস্তুপের নীচে আটকে ৩ জন শ্রমিক, চলছে উদ্ধারকাজ

10:14:00 PM

আইপিএল ২০২৫-এর নিলামে অংশগ্রহণ করছেন ১৫৭৪ জন প্লেয়ার

09:56:00 PM