পারিবারিক বা শেয়ার প্রভৃতি ক্ষেত্র থেকে অর্থাগম ও সঞ্চয় যোগ। ব্যবসা ও কর্মক্ষেত্রে অগ্রগতি। মনে ... বিশদ
সচ্চিদানন্দই গুরু। যদি মানুষ গুরুরূপে চৈতন্য করে, তো জানবে যে সচ্চিদানন্দই ঐ রূপ ধারণ করেছেন। গুরু যেন সেথো, হাত ধরে নিয়ে যান। ভগবান্ দর্শন হ’লে আর গুরু-শিষ্য-বোধ থাকে না। ‘সে বড় কঠিন ঠাঁই, গুরু-শিষ্যে দেখা নাই।’ তাই জনক শুকদেবকে বললেন, ‘যদি ব্রহ্মজ্ঞান চাও, আগে গুরুদক্ষিণা দাও। কেন-না ব্রহ্মজ্ঞান হ’লে আর গুরু-শিষ্য ভেদ-বুদ্ধি থাকবে না।’ যতক্ষণ ঈশ্বর দর্শন না হয়, ততক্ষণই গুরু-শিষ্য সম্বন্ধ। সচ্চিদানন্দই গুরুরূপে আসেন। মানুষ-গুরুর কাছে যদি কেউ দীক্ষা লয়, তাঁকে মানুষ ভাবলে কিছু হবে না। তাঁকে সাক্ষাৎ ঈশ্বর ভাবতে হয়, তবে তো মন্ত্রে বিশ্বাস হবে। বিশ্বাস হলেই সব হ’য়ে গেল। একলব্য মাটীর দ্রোণ তৈয়ার ক’রে বনেতে বাণ শিক্ষা করেছিলেন। মাটীর দ্রোণকে পূজা ক’রত সাক্ষাৎ দ্রোণাচার্য-জ্ঞানে, তাতেই সে বাণ-শিক্ষায় সিদ্ধ হ’ল।
গুরুবাক্যে বিশ্বাস। তাঁর বাক্য ধরে ধরে গেলে ভগবান্কে লাভ করা যায়। যেমন সুতোর খি ধরে ধরে গেলে বস্তুলাভ হয়। গুরুবাক্যে বিশ্বাস করা উচিত। গুরুর চরিত্রের দিকে দেখবার দরকার নাই। “যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়িবাড়ি যায়, তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।” ঝাড়ু অস্পৃশ্য বটে, কিন্তু স্থানকে শুদ্ধ করে। গুরু যে নামটী দেবেন, বিশ্বাস ক’রে সে নামটী লয়ে সাধন-ভজন করতে হয়। যে ঝিনুকের ভিতর মুক্তা তৈয়ার হয়, এমনি আছে, সেই ঝিনুক স্বাতী নক্ষত্রের বৃষ্টির জলের জন্য প্রস্তুত হ’য়ে থাকে। সেই জল পড়লে একেবারে অতল জলে ডুবে চলে যায়, যতদিন না মুক্তা হয়। সকলেরই মুক্তি হবে, তবে গুরুর উপদেশ অনুসারে চলতে হয়। বাঁকা পথে গেলে ফিরে আসতে কষ্ট হয়। মুক্তি অনেক দেরিতে হয়। হয় তো এ জন্মে হ’ল না, আবার হয় তো অনেক জন্মের পর হ’ল। গুরুর কাছে সন্ধান নিতে হয়। ব্যাকুল প্রাণে যে তাঁকে ডাকে, তার কিছুই দরকার নাই। কিন্তু সচরাচর সে-রকম ব্যাকুলতা দেখা যায় না বলেই গুরুর দরকার হয়। গুরু এক, কিন্তু উপগুরু অনেক হ’তে পারেন। যাঁর কাছে কিছু শিক্ষা পাই, তিনিই উপগুরু। অবধূত এই রকম চব্বিশটি উপগুরু করেছিলেন। যেমন অচেনা জায়গায় যেতে হ’লে—যে জানে এমন একজনের কথামত চলতে হয়।