ব্যবসায়িক কাজকর্ম ভালো হবে। ব্যবসার প্রসারযোগও বিদ্যমান। উচ্চশিক্ষায় সন্তানের বিদেশ গমনের সুযোগ আসতে পারে। গৃহশান্তি ... বিশদ
কেন্দ্রীয় সরকারের সাইবার অপরাধ নথিভুক্তির পোর্টালের (এনসিআরপি) তথ্য অনুসারে, গত কয়েক বছরে সাইবার অপরাধের প্রবণতা বেড়েই চলেছে। গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ৭ লাখ ৪০ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। ২০২৩ সালে গোটা বছরে অভিযোগ জমা হয়েছিল সাড়ে ১৫ লাখের কিছু বেশি। ২০২২ সালে অভিযোগ জমা পড়েছিল সাড়ে ৯ লাখের কিছু বেশি। সংখ্যটি ২০২১ সালে ছিল ছিল সাড়ে ৪ লাখ। গত তিনবছরের পরিসংখ্যানেই পরিষ্কার, উদ্বেগ কতটা গুরুতর। তাছাড়া এবছরের প্রথম চারমাসে লগ্নির টোপ দিয়ে প্রতারণা হয়েছে ২২২ কোটি ৫৪ লাখ টাকার। বন্ধুত্বের অ্যাপ থেকে প্রতারণা হয়েছে ১৩ কোটি ২৩ লাখ টাকার। পাশাপাশি শেয়ার বাজার সংক্রান্ত সাইবার প্রতারণাতেও প্রচুর মানুষ টাকা খুইয়েছেন। ট্রেডিংয়ের টোপে প্রতারণা হয়েছে ১ হাজার ৪২০ কোটি টাকার। সাইবার বিশেষজ্ঞদের দাবি, সামাজিক সম্মানের কথা ভেবে অনেক ঘটনাই পুলিস পর্যন্ত পৌঁছয় না। সেসব ধরলে আরও বিপুল টাকায় থাবা বসেছে সাইবার প্রতারকদের।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী তাঁর ‘মন কি বাত’-এ জনগণকে সতর্ক হতে বলেছেন। কিন্তু শুধু জনগণ সচেতন হলেই কি সুরাহা মিলবে? সরকার বা প্রশাসনের কি কোনও দায়িত্ব নেই? না কি সরকারের কোনও ভুল নীতির ফলে নাগরিকরা এই প্রতারণার শিকার হচ্ছেন? মোদি সরকারের ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের কল্যাণে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাসহ অন্য প্রায় সবক্ষেত্রেই অনলাইন বা ডিজিটাল ব্যবস্থা চালু হয়েছে। যতদিন যাচ্ছে ততই বাড়ছে ডিজিটাল নির্ভরতা ও ডিজিটাল অপরিহার্যতা। ফলে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে সড়গড় নয় বা একেবারেই অপারগ কোটি কোটি মানুষও ডিজিটাল লেনদেনে যেতে বাধ্য হচ্ছে। অন্যের সাহায্য নিতে গিয়েও বিপদে পড়ছেন অনেকে। বিশেষ করে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ডিজিটাল অজ্ঞ বা স্বল্পজ্ঞাত মানুষের সামনে এটাই মূর্তিমান বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডিজিটাল ব্যবস্থায় নিরাপত্তা অবশ্যই থাকে। কিন্তু জালিয়াতরা অনেক ক্ষেত্রে সহজেই সেই নিরাপত্তা ভেদ করে মোটা টাকা হাতিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। ২০১৮ সালে প্রথমবার খবর হয়েছিল প্রায় এক কোটি মানুষের আধার তথ্য ফাঁস হওয়ার কথা। করোনা মহামারীর সময়েও একই ধরনের আরও একটি খবর জনসমক্ষে আসে, কোউইন মোবাইল অ্যাপ থেকে অসংখ্য মানুষের আধার এবং মোবাইল তথ্য চুরি গিয়েছে। অর্থাৎ, দেশের বিরাট সংখ্যক মানুষের আধার, মোবাইল নম্বর, ইমেল আইডি রয়েছে প্রতারকদের হাতে। অথচ, সরকার দাবি করে এসেছে, নাগরিকের সব তথ্যই সুরক্ষিত। এমনকী, ২০১৮ সালে শীর্ষ আদালতে শুনানিতেও সরকার পক্ষ বলেছিল, আধার তথ্য চুরি হওয়ার কোনও কারণ ঘটেনি, অতএব নাগরিকরা নির্ভয়েই থাকুন। কেন্দ্র যতই অস্বীকার করুক, যেদিন থেকে কোনও ব্যক্তির প্রত্যেকটি ব্যক্তিগত তথ্যের সঙ্গে আধারকে যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে, সেদিন থেকেই বেড়েছে প্রতারণার সম্ভাবনা। সরকার এখনও এই দায় এড়িয়ে গেলে আগামী দিন এদেশের নাগরিকদের জন্য ভয়ঙ্কর!