ব্যবসায়িক কাজকর্ম ভালো হবে। ব্যবসার প্রসারযোগও বিদ্যমান। উচ্চশিক্ষায় সন্তানের বিদেশ গমনের সুযোগ আসতে পারে। গৃহশান্তি ... বিশদ
এমনিতে বাংলার ভোটাররা উপ নির্বাচনে রাজ্যের শাসককেই জেতান। তাই জয়ী আসনগুলিতে তৃণমূলের জয় নিয়ে রাজনৈতিক মহলের সংশয় নেই। তৎসহ জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব আসনে তৃণমূল প্রার্থীদেরই জেতানোর আর্জি রেখেছেন। এজন্য মুখ্যমন্ত্রী সামনে রেখেছেন তৃণমূল জমানায় রাজ্যজুড়ে প্রকৃত উন্নয়নের খতিয়ান। তাই সবক’টি আসনে সহজ জয়ের আশাতেই বুক বেঁধেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিনিধিরা। বিধানসভা নির্বাচনে গ্রাম বাংলায় বিজেপির ভোট ১৬ শতাংশ কমে গিয়েছিল। এজন্য বিজেপির আদি নেতারা দলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীকে তুলোধোনা করেছিলেন। অন্যদিকে, একই তথ্য সামনে রেখে বাম-কংগ্রেস জোট দাবি করেছিল—বাংলায় ‘আসল বিরোধী’ তারাই। এই আকচাআকচি দেখে রাজ্যের শাসক শুধুই মুচকি হেসেছে। আর এই উপ নির্বাচনে বিরোধীদের সামগ্রিক হাল আরও করুণ। কেননা, সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের ‘পিরিতি’ পাকতেও পেল না, তদুপরি সিপিএম হাত মেলাল একটি নকশালপন্থী পার্টির সঙ্গে! ফলে বাম ভোটাররা কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ভাঙা জুটি সিপিএম-কংগ্রেস এই মুহূর্তে বিধানসভায় ‘বিগ জিরো’! ২০২৩-এর মার্চে সাগরদিঘির উপ নির্বাচনে কংগ্রেসের খরা কাটিয়েছিলেন বায়রন বিশ্বাস। কাস্তে-হাতুড়ি-তারার প্রার্থী না-হলেও তাঁর জয়কে তখন লালেরই জয় বলে জাহির করেন বামেরা। কিন্তু বায়রন দ্রুত তৃণমূলে যোগ দিতেই রাজ্য-রাজনীতির ছবিটা মুহূর্তে বদলে যায়। ভেসে উঠতে উঠতেই, বস্তুত ‘নিখোঁজ’ হয়ে যায় এরাজ্যেরই দুই সাবেক শাসক শ্রেণি! বাংলা থেকে লোকসভাতেও এখন ‘শূন্য’ সিপিএম। একই নির্বাচনে মোদি-শাহের পার্টিকেও জবরদস্ত জব্দ করেছেন বাংলার ভোটাররা।
তাই আজকের ভোটে তৃণমূল-বিরোধী দলগুলি লড়ছে বস্তুত নিজ নিজ অস্তিত্ব জানান দিতেই, যাকে হালকা চালে ‘ভেসে থাকা’ বোঝায়। আর এজন্যই কোনও কোনও জায়গায় যে তারা বেশ হম্বিতম্বিই করবে, তার আঁচ আগাম পাওয়া যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুটমার্চ করার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের প্রবল চাপে অবশেষে ‘সক্রিয়’ ভূমিকায় নির্বাচন কমিশন। তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নিয়েছে তারা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে রাজ্য পুলিসও থাকবে। সেন্ট্রাল আর্মড পুলিস ফোর্সের কোম্পানি কমান্ডারের নেতৃত্বে গঠিত কুইক রেসপন্স টিমে রাজ্য পুলিসের এএসআই অথবা এসআই স্তরের একজনকে রাখতে হবে। সোমবার তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনকে চিঠি দিয়ে একথা জানিয়ে দিল কমিশন। তাদের দাবি, স্টেট পুলিস নোডাল অফিসার এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোঅর্ডিনেটরকে বিষয়টি রবিবারই জানিয়ে দিয়েছে তারা। কমিশন কতটা সক্রিয়, তার ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে। বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী সম্পর্কে তৃণমূলের অভিযোগ পাওয়ার ২০ ঘণ্টার মধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে তারা। রবিবার স্টেট লেভেল ফোর্স ডেপ্লয়মেন্ট কমিটি, স্টেট পুলিস নোডাল অফিসার এবং স্টেটের সিএপিএফের কোঅর্ডিনেটরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাজ্যের সিইও। সেখানেই ঠিক হয়েছে, আধা সেনার সঙ্গে থাকবে পুলিসও। ফলে কেন্দ্রীয় বাহিনী ইস্যুতে কমিশন যে ব্যাপক চাপে, তা বলাই বাহুল্য। বস্তুত, চাপে পড়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় শাসক বিজেপি’ই। লোকসভা নির্বাচন থেকেই তাদের এই পিছু হটার পালা চলছে। এটা হারার আগেই হেরে যাওয়া নয় কি? রাজ্যের শাসক শিবির তো সব বুথেই ভোটগ্রহণের লাইভ স্ট্রিমিং করার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। কিন্তু তা গ্রহণের দাবি জানায়নি কেউই। যাই হোক, এই রাজনৈতিক তরজা ভোটগ্রহণের আগেই যেন সমাপ্ত হয়। সবাই যেন নির্ভয়ে নিজের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন, তার নিশ্চয়তা কমিশনকেই দিতে হবে। গণতন্ত্রে প্রতিটি ভোটের মূল্য সমান এবং অবশ্যই মূল্যবান। এই কথা নির্বাচনের কোনও পক্ষই যেন ভুলে না-যায়।