কাজকর্মে আকস্মিক বিঘ্ন ও ভোগান্তি। আইনজীবী ও মুদ্রণ, কাগজ ও কৃষিজ পণ্যের ব্যবসায়ীদের শুভদিন। ... বিশদ
কিন্তু এতে ড্যামেজ কন্ট্রোল আদৌ হবে বলে বিজেপিরও অনেক নেতা ভরসা পাচ্ছেন না। কারণ বিরোধীদের পাশাপাশি শীর্ষ আদালতও বিষয়টি নিয়ে সরকারকে জোরদার চেপে ধরেছে। কিছু পরীক্ষার্থীকে অবাক করা গ্রেস নম্বর দেওয়া নিয়েও এনটিএর জবাব তলব করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এদিকে, বৃহস্পতিবার সিবিআইয়ের জালে বিহারে উঠেছে দুই রাঘববোয়াল। প্রাথমিকভাবে তাদের জেরা করে যা জানা গিয়েছে, তাতে কেঁচো খুঁজতে কেউটের সন্ধানের ইঙ্গিতই স্পষ্ট। বলা বাহুল্য, যে-দল মনমোহন সিংকে ‘মৌনীমোহন’ বলে কটাক্ষ করত, তাদেরই নয়নের মণি নরেন্দ্র মোদি কিন্তু এখনও নিট ইস্যুতে স্পিকটি নট। তাতে অবশ্য দেশবাসী অবাক নয়, কারণ ইতিপূর্বের একাধিক জ্বলন্ত সমস্যাতেও এই প্রধানমন্ত্রীকে একই ভূমিকায় পেয়েছে দেশ। এমনই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বসেছিল সংসদের যৌথ অধিবেশন। সেখানে প্রদত্ত অভিভাষণে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু নিট দুর্নীতির কথাটি কার্যত মেনেই নিয়েছেন। এদিন রাষ্ট্রপতি লোকসভা কক্ষে ‘প্রশ্ন ফাঁস’ শব্দ দুটি উচ্চারণ করামাত্রই ‘নিট, নিট’ বলে চিৎকার করে ওঠেন বিরোধী সদস্যরা। তাঁরা সমস্বরে শিক্ষামন্ত্রীর ইস্তফা দাবি করেন। যে-সরকার টানা একদশকে একটিও খারাপ কাজের দায় স্বীকারসহ নৈতিক পদক্ষেপ করেনি, তার কাছে একজন বাঘা মন্ত্রীকে ছেঁটে দেওয়ার সাহস দেশবাসী অবশ্য প্রত্যাশা করে না। বিরোধী কণ্ঠ শান্ত করতে রাষ্ট্রপতি এটুকুই আশ্বস্ত করেন যে, ‘এই ব্যাপারে রাজনৈতিক দলাদলির ঊর্ধ্বে উঠে সমাধানের দিকেই এগতে হবে।’ প্রশ্ন ফাঁসের একাধিক অতীত কীর্তির প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, ‘আমার সরকার এই ব্যাপারে এনেছে কড়া আইন। পরীক্ষা আয়োজনের প্রতিষ্ঠান এবং পরীক্ষা প্রক্রিয়ার সংস্কারের ব্যাপারেও উদ্যোগী হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁস ইস্যুতে তদন্ত চলছে এবং দোষীদের কড়া শাস্তিও দেওয়া হবে।’
কিন্তু রাষ্ট্রপতির কথায় আশ্বস্ত হওয়ার অবকাশ কোথায়? কারণ একই সময়ে সামনে এসেছে শিক্ষামন্ত্রকেরই এক বার্ষিক রিপোর্ট। তাতে রয়েছে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির (এনটিএ) উদ্বাহু প্রশংসা! শুধু প্রশংসা করেই ক্ষান্ত নয় মোদি সরকার, এনটিএ’কে সরাসরি স্বনির্ভর পরীক্ষা নিয়ামক সংস্থার তকমাও দেওয়া হয়েছে ওই নথিতে। এনটিএ’কে স্বচ্ছতা এবং দক্ষতার পরাকাষ্ঠাই দাবি করা হয়েছে তাতে। একাধিক শিরোপাও জুটেছিল সংস্থাটির! বোঝাই যাচ্ছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের ওই রিপোর্টই শিক্ষামন্ত্রকের চরম বিড়ম্বনার কারণ হয়ে উঠেছে। অস্বস্তিতে পড়েছে গোটা গেরুয়া শিবির। প্রশংসাই যখন বিড়ম্বনার কারণ কিংবা বিড়ম্বনা বাড়িয়ে দেয়, তখন তা প্রত্যাহার করে নেওয়াই শ্রেয়। এনটিএ বাতিলের দাবিতে কমবেশি সোচ্চার সকলেই। সরকারের উচিত, তার আগে এই বিড়ম্বনার রিপোর্ট, খেতাব প্রভৃতি প্রত্যাহার করে নেওয়া। একই সঙ্গে প্রস্থানের দরজা দেখাতে হবে চরম ব্যর্থ দেশের শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়কেও।