কাজকর্মে আকস্মিক বিঘ্ন ও ভোগান্তি। আইনজীবী ও মুদ্রণ, কাগজ ও কৃষিজ পণ্যের ব্যবসায়ীদের শুভদিন। ... বিশদ
এদিকে, ‘বঞ্চিত-প্রতারিত’ ২০ জন পরীক্ষার্থীর আর্জির সূত্রে ৫ মে নিট বাতিলের জন্য শীর্ষ আদালতে একটি মামলা হয়েছে। তাঁদের দাবি, এবারের নিট নতুন করেই নিতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট এনটিএ’কে দ্রুত এই নির্দেশই যেন দেয়। বাদীদের আরও দাবি, সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে সিবিআই কিংবা অন্যকোনও নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে এই অপরাধের তদন্তও করাতে হবে। এই বিষয়ে কেন্দ্র এবং এনটিএ’কে শুক্রবারই নোটিস পাঠিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। সিবিআই তদন্তের বিষয়ে মতামতও চাওয়া হয়েছে তাদের। সব মিলিয়ে এই নিট-ইউজি কেলঙ্কারি ভারতে শিক্ষা দুর্নীতির ইতিহাসে জঘন্যতম দৃষ্টান্ত ‘ব্যাপম’কেই মনে করাচ্ছে। ২০১৩ সালে সিবিএসই নিট গ্রহণ শুরু করে। তবে ওই পরীক্ষা রাজ্যগুলির জন্য তখন আবশ্যিক ছিল না। ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নিট সারা ভারতেই আবশ্যিক গণ্য হয়। ২০১৯-এ নিট গ্রহণের দায়িত্ব হস্তান্তরিত হয় শিক্ষামন্ত্রকের তৈরি এনটিএ’র উপর।
আর তখন থেকেই বিতর্কের মুখে পড়ে নিট এবং এনটিএ। প্রতিযোগিতায় রাজ্য বোর্ডগুলির ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বঞ্চনার ইস্যুটি বড় হয়ে ওঠে। সামনে আসে সিলেবাস, প্রশ্নের ধরন এবং ‘মিডিয়াম’ সমস্যার বাস্তবতা। দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে এই বৈষম্যগুলি দূর করার সূত্র আবিষ্কৃত হলেও পুরনো দাবি থেকে সরেনি তামিলনাড়ু এবং আরও একাধিক রাজ্য। তবে এবারের নিট বিতর্ক অতীতের সমস্ত বিতর্ককেই পিছনে ফেলে দিয়েছে। ভাবা যায়, একসঙ্গে ৬৭ জন প্রথম এবং সকলেরই ঝুলিতে ১০০ শতাংশ নম্বর! একে ‘কেলঙ্কারির বিশ্ব রেকর্ড’ বললেও অতিরঞ্জিত হয় না। আরও একাধিক অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টে বহু পিটিশন জমা পড়েছে। সংগত প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছে বাংলা সহ অনেকগুলি রাজ্য থেকে। অনেকে সরাসরি কাঠগড়ায় তুলেছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রক এবং প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপিকে। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের বরাবরের দাবি, মেডিক্যাল প্রবেশিকা গ্রহণের দায়িত্ব ও ক্ষমতা রাজ্যগুলিকেই ফিরিয়ে দেওয়া দরকার। এবার পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কণ্ঠেও উঠে এল একই দাবি। শনিবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠান শেষে ব্রাত্য বলেন, ‘রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি নিয়ে অনেক কেন্দ্রীয় এজেন্সি তদন্ত করল, গ্রেপ্তারিও হল। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয়, শুধুমাত্র একটি রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে শুধু আলোচনা হবে? এটা হতে পারে না। কেন্দ্রীয় পরীক্ষার দুর্নীতি নিয়েও তদন্ত চাই এবার।’ নিট দুর্নীতি মোদি সরকারেরই এক ক্ষমাহীন ব্যর্থতা। কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারও নেই।