সামাজিক কল্যাণকর্মে সামাজিক স্বীকৃতি আর সন্মান। গৃহ পরিবেশে চাপ। আর্থক প্রগতি বজায় থাকবে। ... বিশদ
তাঁর তিনদিনের এই সফর নিরাপদ করে তুলতেই, তার দু’দিন আগে ২৭ মে, শনিবার উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে পৌঁছে যান সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পান্ডে। অতঃপর রবিবার কাকভোরে, রাজ্যের পাঁচ স্থানে ভয়াবহ হামলা চালায় জঙ্গিরা। তারপরই চলে যৌথবাহিনীর দীর্ঘ অপারেশন। তাতে অন্তত ৪০ জন কুকি জঙ্গি নিহত হয়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করে ক্ষতে মলম দিতে চেয়েছেন অমিত শাহ—এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, আর ঘোষণা করা হয়েছে গোষ্ঠী সংঘর্ষে মৃতদের পরিবারের জন্য কিছু ক্ষতিপূরণ। কিন্তু অশান্তি দূর হয়নি এরপরও। এতদিন বাদে, চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান এক অবাক দাবি করেছেন, এই অশান্তি দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ মাত্র, এর সঙ্গে কোনও জঙ্গিযোগ নেই! তবে পরিস্থিতি যে এখনই স্বাভাবিক হচ্ছে না, তাও পরিষ্কার করেছেন তিনি। চৌহান আরও জানান, শান্তিশৃঙ্খলা ফেরাতে রাজ্য সরকারকে সেনাবাহিনী প্রয়োজনীয় সহায়তা করছে। মঙ্গলবারই ঘোষণা করা হয়েছে, সিআরপিএফের আইজি রাজীব সিংকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে মণিপুরের পাঠাচ্ছে কেন্দ্র। অন্যদিকে, এই অশান্ত পরিস্থিতির সূত্রে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। মণিপুর কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওকরাম ইবিবো সিং দাবি করেছেন, এখন মণিপুর যেভাবে জ্বলছে, এই রাজ্যের ইতিহাসে তার কোনও নজির নেই।
পরিস্থিতি এত খারাপ কেন, তা জানতে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মণিপুর যেতে চান। অন্যদিকে, সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গের নেতৃত্বে কংগ্রেসের আট সদস্যের এক প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করে। চারপাতার এক স্মারকলিপি দিয়ে মণিপুরে অবিলম্বে শান্তি ফেরানোর দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস। এই ভয়াবহ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গড়ারও দাবি জানিয়েছেন ওই প্রতিনিধিরা। কংগ্রেসের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের কর্মরত অথবা অবসরপ্রাপ্ত কোনও বিচারপতিকে শীর্ষে রেখেই এই কমিটি গড়তে হবে। এরপর দলের সদর দপ্তরে ফিরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ দাবি করেন, ২২ বছর আগে, ২০০১ সালের জুন মাসে মণিপুর এইভাবেই অশান্ত হয়ে উঠেছিল। রাজ্যের হাইকোর্ট এবং বিধানসভা ভবনেও অগ্নিসংযোগ করা হয়। তখন ক্ষমতায় ছিলেন বিজেপির অটলবিহারী বাজপেয়ি এবং আজ প্রধানমন্ত্রী ওই দলেরই নেতা নরেন্দ্র মোদি। জয়রামের অভিযোগ, বিজেপির বিভাজন এবং মেরুকরণের ভয়াবহ রাজনীতিই এই অবাঞ্ছিত অশান্তির নেপথ্যে। সমস্যাটি এখন আর শুধু রাজনীতির কারবারিদের চর্চার বিষয় নেই। প্রতিবাদে সরব স্থানীয় ক্রীড়াবিদরাও। সকলের দাবি, রাজ্যে দ্রুত শান্তি ফেরাতেই হবে। সব মিলিয়ে এই যে ভয়াবহ পরিস্থিতি, তার দায় নরেন্দ্র মোদির পার্টি ও সরকার কোনওভাবেই এড়াতে পারে না।