সামাজিক কল্যাণকর্মে সামাজিক স্বীকৃতি আর সন্মান। গৃহ পরিবেশে চাপ। আর্থক প্রগতি বজায় থাকবে। ... বিশদ
এই ব্যাপারে নবান্নের কোনও ঢাকঢাক-গুড়গুড় নেই। রাজ্যের সাফ কথা: বারবার দরবার করার পরেও বাংলার ন্যায্য প্রাপ্য অর্থ দেওয়া হয় না; কেন্দ্রের ডাকা বৈঠকের আলোচ্য বিষয় আগেই একতরফাভাবে নির্ধারণ করা থাকে; পশ্চিমবঙ্গ বলার সুযোগ পায় বৈঠকের একেবারে অন্তিমলগ্নে, যখন কারওরই শোনার ধৈর্য থাকে না; সবমিলিয়ে বাংলার মানুষকে ন্যূনতম সম্মান দেয় না মোদি সরকার। ‘বাংলার বাঘিনী’র এই রূপ অবশ্য নতুন নয়, তাই তাঁর অনুপস্থিতির বিষয়ে দিল্লিওয়ালাদের সম্ভবত কোনও সংশয় ছিল না। তার মধ্যেও মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে ওই বৈঠকে পাঠাবার প্রস্তাব রেখেছিল নবান্ন। তাঁর সঙ্গে আরও যেতেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদি এবং অর্থসচিব মনোজ পন্থ। তবু কেন্দ্র তাতে আপত্তি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতি নিয়েই অনড় মনোভাব ব্যক্ত করে। স্বভাবতই নীতি আয়োগের এই বৈঠকে বাংলার গরহাজিরা নিশ্চিত হয়ে যায়।
কিন্তু দিল্লির মাথারা সম্ভবত আঁচ করেননি যে, ‘সামান্য’ একজন মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতি শেষমেশ এক বেনজির ‘বয়কট’-এর চেহারা নেবে! সময়টিও লক্ষণীয়, নয়া সংসদ ভবনের বিতর্কিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ঠিক আগের দিন। ‘রাষ্ট্রপতিকে অপমান’ ইস্যুতে দেশের প্রধান ২১টি বিরোধী দল রবিবার যে অনুষ্ঠান বয়কটও করেছে। ভারতের রাজনীতি ‘সার্বিক বিরোধী ঐক্য’ খুব কমই দেখেছে। নরেন্দ্র মোদি এবং তাঁর সরকারের একবগ্গা ‘রাজনীতি’ চব্বিশের ভোটের আগে সেই প্রায় অসম্ভবটাই সম্ভব করে দেবে কি না, তা জানতে আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু তার আগেই, শনিবার মোদিকে যেভাবে ‘একঘরে’ করা হল, সেটা নিঃসন্দেহে বিরোধী রাজনীতির এক বিরাট সাফল্য। বিরোধিতার এই পাঠ বুঝিয়ে দিল, রাজ্যের প্রতি মোদি সরকারের সীমাহীন বঞ্চনার বিষয়টি আর কোনও অভিযোগমাত্র নয়, এক প্রমাণিত সত্য। এই রাজনীতি ভারতের গণতন্ত্রকে আরও মজবুত করবে। এই ঐতিহাসিক ঘটনার সামনে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনের পর গণতন্ত্র সম্পর্কে মোদির ভাষণ এক ‘বাগাড়ম্বর’ হিসেবেই চিহ্নিত হয়ে থাকবে।