কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ও মানসিক কষ্ট। দূর ভ্রমণের সুযোগ। অর্থ প্রাপ্তির যোগ। যে কোনও ... বিশদ
জীবন আমাদের দিয়েছে যেন দুটি ইচ্ছে ডানা। আমরা সেই ডানায় ভেসে উড়ে বেড়াই। স্বাস্থ্যবোধকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে ডুবে যাই ভোগবিলাসের জীবনে। দেখা যায় মানুষের মধ্যে খাদ্যাভাসের বিরাট পরিবর্তন হয়েছে। অধিকাংশ মানুষই যে ধরনের খাবার খান, তাতে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিধিনিষেধগুলি বিশেষ মান্যতা পায় না। খেতে ভালোলাগে এমন খাবারই অধিকাংশ মানুষ পছন্দ করেন। কিন্তু সেই ধরনের খাবার বহুক্ষেত্রে আমাদের শরীরের ক্ষতি করে। খাদ্যকে সুস্বাদু করার জন্য এমনভাবে তা প্রস্তুত করা হয়, যাতে তার খাদ্যগুণ অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া খাদ্য উৎপাদনের ব্যাপারটিও উল্লেখ করা যেতে পারে। জৈব সারের বদলে ব্যবহৃত হচ্ছে রাসায়নিক সার। ব্যবহৃত হচ্ছে নানা ধরনের কীটনাশক। এগুলিতে উৎপাদন হয়তো বাড়ছে। কিন্তু নষ্ট হচ্ছে খাদ্যগুণ। নষ্ট হচ্ছে মাটির চরিত্র এবং নষ্ট হচ্ছে উপকারী কীটপতঙ্গের জীবন। বৃষ্টির জলে ধুয়ে সেই রাসায়নিক সার গিয়ে পড়ছে পুকুরে, নদীতে। তাতে ক্ষতি হচ্ছে মাছ ও অন্যান্য জলে বাস করা প্রাণীর জীবন। আমরা বুঝতেও পারছি না, ধীরে ধীরে কীভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে জীববৈচিত্র্য।
আজ বহু মানুষ স্বাস্থ্য সম্পর্কে উদাসীন। তাই ক্রমেই বাড়ছে ধূমপান, মদ্যপান, গুটকা বা পানমশলা খাওয়ার অভ্যাস। এগুলি শরীরের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। বিশেষ করে এগুলি হৃদযন্ত্রের ক্ষতিও করে। বহু ব্যক্তিকে দেখা যায় তিনি শিশুসন্তানকে কোলে নিয়ে ধূমপান করছেন। অথচ তিনি বুঝতেও পারেন না, এই পরোক্ষ ধূমপানে ক্ষতি হচ্ছে তাঁর সন্তানের হৃদযন্ত্রও। আজ সারা পৃথিবীতে বহু শিশু পরোক্ষ ধূমপানের শিকার। পাশাপাশি মাদক নেশাও ক্রমে ধ্বংস করে দিচ্ছে নয়া প্রজন্মের একাংশকে। তাদের সুস্থ পথে ফেরাতে না পারলে ক্ষতি শুধু তাদের ব্যক্তিগত নয়, ক্ষতি সমাজেরও।
আজ দেখা যাচ্ছে চল্লিশ বছরের নীচে যাঁদের বয়স, তাঁদেরও হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। শুধু অনিয়ন্ত্রিত জীবনই তাঁদের ঠেলে দিচ্ছে এই আশঙ্কার দিকে। ডাক্তাররা বলছেন, অনিয়ন্ত্রিত জীবনের কারণে আমরা চারটি রোগের শিকার হই। এগুলি হল সুগার, প্রেসার, হার্ট অ্যাটাক এবং স্থূলতা। বাবা-মায়েরা তাঁদের ব্যস্ততার মধ্যে ছেলেদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন বিভিন্ন ধরনের ফাস্ট ফুড। অল্পবয়সিদের এই ধরনের খাবারের প্রতি একটা ঝোঁক তৈরি হচ্ছে। ছেলেমেয়েরা এখন আর মাঠে গিয়ে সেভাবে খেলাধূলা করে না। তারা হয় কম্পিউটারে বা মোবাইলে নানা ধরনের গেম খেলে। খেলাধুলো করলে যে শারীরিক পরিশ্রম হয় বা ক্যালরি ক্ষয় হয়, ঘরে বসে খেললে সেটা হচ্ছে না। এতে স্থূলতার শিকার হচ্ছে বহু অল্পবয়সি। মার্কিন দেশে এই রোগ ভয়াবহ। এখানেও ক্রমে তা বাড়ছে।
আর একটা কথা বলা দরকার। সেটা হল আমাদের পরিবেশ। প্রতি মুহূর্তে বাতাসে বেড়ে চলেছে কার্বনের মাত্রা। পরিবেশ দূষণ অবিরত ঘটেই চলেছে। আমরা যে নিশ্বাস নিচ্ছি, তার সঙ্গে শরীরে ঢুকে যাচ্ছে বিষ। বাতাসের বিষ কমাতে না পারলে এই পূথিবী একদিন অক্সিজেন শূন্য হয়ে যাবে।
তাই আমাদের সচেতন হতেই হবে। স্বাস্থ্যের দিক থেকে এবং পরিবেশ রক্ষার দিক থেকে। নাহলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বেড়েই যাবে। একটু ‘স্বাস্থ্যকর’ আনন্দ করলে অনেক বিপদের আশঙ্কা দূর হতে পারে। তাই প্রার্থনা, হৃদয়ের যত্ন নিয়ে সকলে যেন সুস্থ থাকে।