গুরুজনের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা ও মানসিক উদ্বেগ। কাজকর্মে বড় কোনও পরিবর্তন নেই। বয়স্কদের স্বাস্থ্য সমস্যা ... বিশদ
ভগবানগোলা বিধানসভার অন্তগর্ত রানিতলা থানার বালিগ্রামের খেটে খাওয়া গরিব মানুষগুলি আগে কখনও নির্বাচনী হিংসার সাক্ষী হননি। ২০১৯ সালে ২৩ এপ্রিল লোকসভা ভোটের দিন দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হন ষাটোর্ধ্ব টিয়ারুল শেখ। খুনের ঘটনায় মুর্শিদাবাদের প্রত্যন্ত বালিগ্রাম খবরের শিরোনামে উঠে আসে। ভোটের দিন বেলা ১টা নাগাদ টিয়ারুল তাঁর বড় ছেলে মাহাতাব শেখকে নিয়ে বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে সরকারপাড়া বালিগ্রাম প্রাইমারি স্কুলের ১৯৭ নম্বর বুথে ভোট দিতে আসেন। বেশ কয়েক জনের পিছনে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন। আচমকাই কয়েকজন দুষ্কৃতী ধারালো অস্ত্র নিয়ে টিয়ারুল শেখের উপর হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্রের এলোপাথাড়ি কোপে বুথ চত্বরেই টিয়ারুল শেখ লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে নশিপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বাবাকে বাঁচাতে গেলে মাহাতাব শেখও জখম হন। তিনিও বেশ কিছুদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। স্বামী এবং বাবাকে হারানোর যন্ত্রণা এখনও টাটকা স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের বুকে। যন্ত্রণা বুকে চেপে মঙ্গলবার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেন তাঁরা। এদিন সকালেই ভোট দিয়ে বাড়ির উঠোনে বসেছিলেন সাহানুরা বেওয়া।
পাঁচ বছরের আগের সেই দুঃস্বপ্নের স্মৃতিচারণ করে বুকের মধ্যে চেপে রাখা যন্ত্রণাকে জাগিয়ে তুলতে চাইছিলেন না। পরে মৌনতা ভেঙে বলেন, গত নির্বাচন স্বামীকে কেড়ে নিয়েছিল। তাই ভেবেছিলাম এবার ভোট দেব না। শেষমেশ বুথে গিয়ে ভোট দিয়েছি। সেই সঙ্গে স্বামীর খুনিদের চরম শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। টিয়ারুল শেখের বড় ছেলে মাহাতাব শেখ বলেন, আমার চোখের সামনে বাবাকে মেরে ফেললেও কিছু করতে পারিনি। এবার কোনও অশান্তি বা গন্ডগোল হয়নি। আমি চাইব প্রতি বছর যেন এরকম অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হয়। বুথের বাইরে মোড়ে কয়েকজন গ্রামবাসী বসে গল্প করছিলেন। তাঁরা আক্ষেপের সুরে বলেন, বালিগ্রামে কখনও, কোনওদিন ভোটে হিংসা হয়নি। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনে কীভাবে ঘটনাটা ঘটে গেল আজও তার উত্তর খুঁজে পাই না।