ব্যবসাসূত্রে উপার্জন বৃদ্ধি। বিদ্যায় মানসিক চঞ্চলতা বাধার কারণ হতে পারে। গুরুজনদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন থাকা ... বিশদ
এদিন রানাঘাট মহকুমা অফিসে বৈঠকে ফুলিয়ার জ্যোতিপল্লির জমিদাতাদের ডাকা হয়। জমিদাতাদের সঙ্গে আন্দোলনে থাকা অনগ্রসর জনজাগরণী মঞ্চের কার্যকর্তারা এদিন দিগনগর অবধি পৌঁছতে পারেনি। জেলা পুলিস সূত্রে খবর, পরিকল্পনা করে পুলিস নাকা চালায়। প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য আটঘাট করেই মাঠে নেমেছিল তারা। জনজাগরণ মঞ্চের তরফে দাবি করা হয়, সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ আহমেদ রানাঘাট পৌঁছতেই তাঁকে আটক করে পুলিস। যদিও রানাঘাট জেলা পুলিসের পক্ষ থেকে এই দাবি মানা হয়নি। এদিন উচ্ছেদের কাজ চলাকালীন জখম হন মোশারফ মণ্ডল নামে এক যুবক। পুলিস তাঁকে গাড়ি করে চিকিৎসার জন্য কৃষ্ণনগরের শক্তিনগর হাসপাতালে পাঠায়।
প্রশাসনকে এতটা কড়া হতে এর আগে দেখেননি জমিদাতারা। সকাল থেকে অতিরিক্ত জেলাশাসক(ভূমি ও ভূমি সংস্কার) নারায়ণচন্দ্র বিশ্বাস, কৃষ্ণনগর সদরের মহাকুমা শাসক মনীশ ভার্মা, বিশেষ ভূমি অধিগ্রহণ আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস সহ একাধিক ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, দুই ডেপুটি পুলিস সুপার উপস্থিত থেকে উচ্ছেদের কাজ তদারকি করেন। পরে জেলাশাসক বিভু গোয়েল, অতিরিক্ত পুলিস সুপার(সদর) আমনদীপ জাখুও দিগনগরে আসেন। এদিনের এই কাজে জাতীয় সড়কের গতি কিছুটা থমকায়। কিন্তু কাজ চালিয়ে যায় প্রশাসন।
জেলাশাসক বলেন, নির্মাণ ভাঙার জন্য জমিদাতাদের যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়েছিল। অনেকেই নিজে থেকে সরে গিয়েছেন। আমরা চাইছি, যতটা দ্রুত সম্ভব রাস্তার কাজ শুরু করে দেওয়ার।
অনগ্রসর জন জাগরণী মঞ্চের পক্ষে ভাস্কর পাল বলেন, আমার নিজের সহ একাধিক বাড়ি কিছু না জানিয়েই জোরপূর্বক ভেঙেছে প্রশাসন। একদিকে প্রশাসন আমাদের সঙ্গে বসতে চাইছে অন্যদিকে আবার জোর করে সব কিছু ভেঙে দিচ্ছে। আমাদের সংগঠনের নেতৃত্বকেও আটক করা হয়েছে।
এদিন সকালে প্রথমে এলাকার বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরপরেই পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে শুরু হয়ে যায় উচ্ছেদ অভিযান। আচমকা উচ্ছেদ শুরু হওয়ায় অনেকেই হকচকিয়ে যান সকলে। উত্তম মহন্ত, গৌতম মহন্ত, দেবাশিস মহন্তর মতো দোকানদাররা কান্নায় ভেঙে পড়েন। প্রশাসনকে বাধা দেওয়ার কিছুটা চেষ্টা করেন। কিন্তু জেলা প্রশাসনের কর্তারা পরিষ্কার করে জানায়, অনেক দিন সময় দেওয়া হয়েছিল। এরপর পুলিস এদেরকে হটিয়ে নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু করে দেয়। সরকারি জমিতে কারও ছিল চায়ের দোকান, কারও কলের দোকান। নেপাল নাথ, বিজন বিশ্বাস, সৌমিত্র বিশ্বাসের মতো সরকারি জমি দখল করে থাকা ব্যবসায়ীরা বলেন, আমরা কোনও ক্ষতিপূরণ পাইনি। আমরা বহু বছর ব্যবসা করছি। আমাদের একটা পুনর্বাসন দেওয়া হোক। আমাদের কী হবে কেউ ভাবেনি একবারও। মুখ্যমন্ত্রী কি এসব জানতে পারছেন না? যদিও জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, যারা জমিদাতা, জমির কাগজ রয়েছে সকলকেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। কিছু আছেন, যারা সরকারি জমি দখল করে দোকান করে ছিল। তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এদিন প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চলেছে। আর ৮ কিলোমিটার এলাকায় উচ্ছেদের কাজ হলেই রাস্তার কাজ শুরু করা যাবে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর গত অক্টেবর মাসের শেষ দিকে বড়জাগুলি থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত রাস্তা ফোরলেনের কাজ তৈরির কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। ১১১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৬.৭২ কিলোমিটার এই রাস্তার কাজ হবে বলে ঠিক হয়েছে। এই রাস্তা চওড়া হওয়ার কথা দীর্ঘদিনের। এর আগে জমি অধিগ্রহণ নিয়েও ব্যাপক সমস্যা হওয়ায় কাজ বন্ধ হয়েছে। কিন্তু এবার অনেকটাই আটঘাট করে নেমেছে প্রশাসন।