ব্যবসাসূত্রে উপার্জন বৃদ্ধি। বিদ্যায় মানসিক চঞ্চলতা বাধার কারণ হতে পারে। গুরুজনদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন থাকা ... বিশদ
এদিকে, এদিন সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বাঁকুড়ার বিজেপির সংসদ সদস্য সুভাষ সরকার। তিনি বলেন, এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ভেঙে পড়ার প্রথম নিশান। এত কাটমানি আর সিন্ডিকেট হয়েছে যে, অত্যন্ত নিম্নমানের কাঁচামাল দিয়ে কাজ করা হয়েছে। এরকম কাঁচামালে একতলা বাড়িও তৈরি হয় না। এই এলাকায় এরকম ১৬টি ট্যাঙ্ক রয়েছে। কেন্দ্রীয় কোনও সংস্থাকে দিয়ে সেইগুলিরও স্বাস্থ্য পরীক্ষার দাবি জানাচ্ছি।
মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা বলেন, রিজার্ভার ভেঙে পড়ার ঘটনা মোটেই কাঙ্খিত নয়। সঠিক কারণ জানার জন্য কলকাতা থেকে উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত শুরু করেছেন। তদন্ত দ্রুত শেষ করতে বলা হয়েছে। জেলার অন্যান্য রিজার্ভারগুলির যাতে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। সেই বিষয়ে দপ্তরের আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের বাঁকুড়া ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রাজেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ঠিক কী কারণে সারেঙ্গায় রিজার্ভার ভেঙে পড়ল, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। কলকাতা থেকে বিশেষজ্ঞরা এসে নমুনা সংগ্রহ করেছেন। সেক্ষেত্রে মাটির সমস্যা, নাকি নির্মাণকাজে গাফিলতি, অথবা অন্য কোনও কারণে ভেঙে পড়েছে তা তদন্তের পর বোঝা যাবে। দপ্তরের পানীয় জলের সমস্ত রিজার্ভার নিয়মিত পরিদর্শন করা হয়। তবুও সারেঙ্গার ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে জেলার সবকটি রিজার্ভারের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে।
উল্লেখ্য, রুখাশুখা বাঁকুড়ায় পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে ২০১২সালে মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বের অন্যতম বড় ১১০০কোটি টাকার জলপ্রকল্পের সূচনা করেন। প্রথমে ১৪টি ব্লকে এবং পরে আরও চারটি ব্লককে প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তার মধ্যে প্রথম ধাপে মোট ৯টি বড় এবং ৪৬টি ছোট স্কিমের মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে নলবাহিত জল সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই বছর ৪ডিসেম্বর ওন্দায় মুখ্যমন্ত্রী প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। পরে ধাপে ধাপে সবকটি ব্লকে রিজার্ভার তৈরি করা হয়। সেইমতো সারেঙ্গার গড়গড়িয়া গ্রামপঞ্চায়েতের অন্তর্গত ফতেডাঙা গ্রামেও রিজার্ভার তৈরি হয়। তিন বছর আগে সেখান থেকে এলাকার ১৪টি গ্রামে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহ শুরু হয়। কিন্তু, বুধবার দুপুরে হঠাৎ বিকট আওয়াজে কেঁপে ওঠে সারেঙ্গার ফতেপুর গ্রাম। বাসিন্দারা বেরিয়ে দেখেন, রিজার্ভারে নীচের অংশে গোলাকৃতির ফাটল ধরেছে। সেই ছবি অনেকেই মোবাইলে ক্যামেরাবন্দি করেন। তার কয়েক মিনিটের মধ্যেই হুড়মুড়িয়ে পুরো রিজার্ভারটি ভেঙে পড়ে। যদিও সেই সময় ঘটনাস্থলে কেউ না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে জলের ট্যাঙ্কটি ভেঙে পড়ায় সেখানকার বেশ কয়েক বিঘা জমির সর্ষে ও আলু চাষের ক্ষতি হয়েছে। ট্যাঙ্কের জলে কয়েক বিঘা জমি জলমগ্ন হয়ে পড়ে।
এদিকে, তৈরির মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে ভেঙে পড়ার ঘটনায় অনেকেই রিজার্ভার তৈরিতে নিম্নমানের মালমশলা ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন। বিরোধীরাও এনিয়ে সরব হয়েছে। ঘটনায় উপযুক্ত তদন্ত করে প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে দপ্তরের বিশেষজ্ঞদের একটি টিম ঘটনাস্থলে আসে। প্রতিনিধি সলের সদস্যরা নমুনাও সংগ্রহ করেন। এদিকে, রিজার্ভার ভাঙার কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা যাতে পানীয় জল থেকে বঞ্চিত না হন তার জন্য বুধবারই সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী তথা কোতুলপুরের বিধায়ক শ্যামল সাঁতরা দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা নিতে বলেন। সেইমতো পাম্প থেকে বাইপাস লাইনের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার গ্রামে জল সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়। শুধু তাই নয়, একই প্রকল্পে জেলায় ৫০টিরও বেশি রিজার্ভার তৈরি করা হয়েছে। সারেঙ্গার ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে তিনি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাকি রিজার্ভারগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষায় জোর দিতে বলেন।