বিদ্যার্থীদের মানসিক উদ্বেগ বৃদ্ধি পাবে। পঠন-পাঠনে আগ্রহ কম থাকবে। কর্মলাভের সম্ভাবনা আছে। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
জলোচ্ছ্বাসের জেরে মেরিন ড্রাইভ রাস্তাও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যাঁদের বাড়ি জলমগ্ন হয়েছে, সেই সমস্ত পরিবারকে নিরাপদ দূরত্বে সরানো হয়েছে। কয়েকটি পরিবারকে স্থানীয় মাল্টিপারপাস সাইক্লোন শেল্টারে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেহেতু এখন আবহাওয়া খারাপ রয়েছে, তাই আগামী কয়েকদিনও ব্যাপক জোয়ারের জল ঢুকবে এবং ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে, একথা ভেবে এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে ভুগতে শুরু করেছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং ভগ্ন সমুদ্রবাঁধ আশু মেরামতির জন্য শনিবার সমুদ্রবাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে কালো পাথর(ব্ল্যাকস্টোন) ফেলার কাজ শুরু করেছে সেচ দপ্তর।
শুক্রবার রামনগর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শম্পা মহাপাত্র, বিডিও আশিস রায়, সংশ্লিষ্ট তালগাছাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিশ্বজিৎ জানার নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল ওই গ্রামগুলি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। জনপ্রতিনিধিরা এলাকায় গেলে স্থানীয় মানুষজন ক্ষোভ উগরে দেন। স্থানীয় বাসিন্দা সুনীলবরণ নায়ক বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আমরা জামড়া থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত কংক্রিটের সমুদ্রবাঁধ তৈরি করার দাবি জানিয়ে আসছি। কোনও প্রতিরোধ না থাকায় কোটালের সময় সমুদ্রের জল আমাদের বাড়ির সামনে চলে আসে। প্রতি বছর বিপর্যয়ের সময় প্রশাসনের লোকজন পরিদর্শনে আসেন। আশ্বাসও দেওয়া হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয় না। এবার অন্তত স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বলেন, কিছু পরিবারকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যাঁদের মাটির বাড়ি জলমগ্ন হয়েছে, তাঁদের উঁচু জায়গায় রাখা হয়েছে। কয়েকটি পরিবারকে মাল্টিপারপাস সাইক্লোন শেল্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভাঙন রুখতে আশু ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সেচ দপ্তরের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। সেচ দপ্তর কালো পাথর ফেলে বাঁধ মেরামতির কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে শঙ্করপুর থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত সমুদ্রবাঁধ কংক্রিট দিয়ে বাঁধানোর কাজ হবে। এর জন্য যৌথভাবে ৯০কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সেচ দপ্তর ও পরিবেশ দপ্তর। সমুদ্রবাঁধ কংক্রিট হয়ে গেলে আর কোনও সমস্যাই থাকবে না। বিডিও বলেন, ব্লক প্রশাসন পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রেখেছে। ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে বিপর্যয় মোকাবিলা দল প্রস্তুত রয়েছে। সমস্যা বড় আকার ধারণ করলে সেই দল ঝাঁপিয়ে পড়বে। সেচ দপ্তরের কাঁথি বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, আপৎকালীন বাঁধ মেরামতির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাই ব্ল্যাকস্টোন ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। বর্ষার পর কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে দীঘা থেকে শঙ্করপুর পর্যন্ত সমুদ্রের পাড় কংক্রিট দিয়ে বাঁধানো হয়েছে। কিন্তু শঙ্করপুর থেকে পূর্বদিকে চাঁদপুর পর্যন্ত সমুদ্রপাড় বাঁধানোর কাজ হয়নি। শুধুমাত্র কাঠের বল্লি ও বালির বস্তা ফেলে সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস আটকানোর চেষ্টা করেছে সেচ দপ্তর। কিন্তু এতে কোনও কাজ হয়নি। বরং বছরের পর বছর সমুদ্রবাঁধ আরও দুর্বলতর হয়েছে। এর ফলে প্রতি বছর বর্ষার সময় জলোচ্ছ্বাসের জেরে জোয়ারের নোনা জল ওই দুর্বল সমুদ্রবাঁধ উপচে পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলিতে ঢুকে পড়ে। এতে এলাকার মানুষের চাষের জমিজমা এবং পুকুর নোনাজলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বহু মানুষকে ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয়।