বিদ্যার্থীদের মানসিক উদ্বেগ বৃদ্ধি পাবে। পঠন-পাঠনে আগ্রহ কম থাকবে। কর্মলাভের সম্ভাবনা আছে। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
রামপুরহাট পুরসভার ১৭নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বছর পঁয়ত্রিশের ছোটকা পরিচিতির সূত্রে বেশ কয়েক বছর ধরে কখনও জীবন বিমা, কখনও আবার বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থার নামে টাকা তুলত। কয়েকজনকে সময়মতো সুদ সহ ফেরতও দিয়েছে। এমনকী বেশ কিছু চিটফান্ড সংস্থা পাততাড়ি গুটিয়ে চলে গেলেও অর্থ লগ্নিকারীদের সে টাকা দিয়েছে। পরিচিতির সুবাদে অনেকে তার কাছে লক্ষ লক্ষ টাকার স্থায়ী আমানত ও দৈনন্দিন সংগ্রহের ভিত্তিতে টাকা জমা দিত। কিন্তু কয়েক মাস ধরে অনেককেই টাকা ফেরত দেওয়ার নামে ঘোরাতে শুরু করে। মাসখানেক আগে কয়েকজন আমানতকারী তার বাড়িতে চড়াও হয়। সে আসল টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেয়। এরই মধ্যে হঠাৎই সে গা ঢাকা দেয়। তার নাগাল পাওয়া যাচ্ছিল না বলে অভিযোগ। শুক্রবার রাতে কয়েকজন আমানতকারী জানতে পারেন, বনহাট গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে এসেছে নজরুল। পুলিস অভিযোগ পেতেই তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে। তার বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণা এবং অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের ধারায় মামলা রুজু হয়। অভিযোগকারী একই পাড়ার বাসিন্দা সেলিম রেজা বলেন, এলাকায় ভালো ছেলে হিসেবেই পরিচিত ছোটকা। এসপি কিষাণ প্রোডিউসার নামে একটি অর্থলগ্নি সংস্থায় এক লক্ষ টাকা স্থায়ী আমানত হিসেবে রাখলে সাড়ে ছ’বছরে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা পাওয়া যাবে বলেছিল। বিশ্বাস করে সেই টাকা দিয়েছিলাম। পরে স্ত্রীর নামে আরও প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা রেখেছিলাম। কিন্তু বছরখানেক আগে ম্যাচুরিটি হয়ে গেলেও টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে সে গড়িমসি করছিল। পেশায় বাস মালিক চাঁদু শেখ বলেন, এর আগে সাহারা, স্বভূমি সংস্থার নামে টাকা তুলেছে ছোটকা। সংস্থা গুটিয়ে গেলেও টাকা ফেরত দিয়েছিল। সেই বিশ্বাসে স্ত্রী ও আমার নামে প্রায় দশ লক্ষেরও বেশি টাকা রেখেছিলাম। কিন্তু ম্যাচুরিটি হয়ে গেলেও দেড় বছর ধরে ঘোরানো হচ্ছে।
শহরের পাঁচমাথা মোড়ের ফুটপাত ব্যবসায়ী নিয়ামত শেখ বলেন, একটি সংস্থার হয়ে কাজ করছে বলে আমার কাছ থেকে দৈনিক ২০০টাকা করে তুলেছে নজরুল। রানিগঞ্জ, আসানসোল, সিউড়িতে তাদের অফিস আছে বললেও খোঁজখবর করে দেখা গিয়েছে কোনও অফিস ছিল না। টাকা ফেরত পাইনি। এলাকার বাসিন্দারা বলেন, একাধিক ভুয়ো সংস্থার নাম করে পাঁচশো জনেরও বেশি মানুষের কাছ থেকে এক কোটি ১০লক্ষ টাকা তোলা হয়েছে। ছোট বাড়ি থেকে এখন তার বিশাল বাড়ি। নামে-বেনামে প্রচুর সম্পত্তি কিনেছে। অনেকে চড়া সুদের লোভে মেয়ের বিয়ের জন্য কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকাও জমিয়েছে। স্থানীয় মানুষজন বলেন, সম্প্রতি সে দুবাই পালিয়ে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট ও ভিসা তৈরি করেছিল। তার আগেই পুলিস তাকে গ্রেপ্তার করে। পুলিস জানিয়েছে, এই আর্থিক প্রতারণার পিছনে আর কেউ রয়েছে বা আদৌ ওই সমস্ত কোম্পানির অস্তিত্ব ছিল কিনা তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।