গুরুজনের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা ও মানসিক উদ্বেগ। কাজকর্মে বড় কোনও পরিবর্তন নেই। বয়স্কদের স্বাস্থ্য সমস্যা ... বিশদ
কালিয়াগঞ্জের তরঙ্গপুর নন্দকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ছাত্র প্রীতম্বর ৪৮৮ নম্বর পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তিনি বাংলায় ১০০, ইংরেজিতে ৯৩, এডুকেশনে ৯৮, ভূগোলে ৯৮ এবং দর্শনে ৯৯ পেয়েছেন। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার নয়, প্রীতম্বর আগামীদিনে প্রশাসনিক কাজে নিজেকে নিয়োজিত করতে চান। আইএএস অফিসার হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে উচ্চশিক্ষার জগতে যেতে চান কালিয়াগঞ্জের দুঃস্থ পরিবারের এই কৃতী ছাত্র।
প্রীতম্বরের বাবা উত্তম বর্মন নেপালে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। মা তরুলতা বর্মন দিনমজুর। ফল প্রকাশের পর ভিডিও কলে বাবাকে সুখবর দেন প্রীতম্বর। চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি উত্তম। নেপাল থেকে তিনি বলেন, ছেলের ফল শুনে খুব ভালো লাগছে। নিজের চেষ্টায় সব করেছে। ছেলে ও পরিবারের জন্যই নেপালে কাজ করে উপার্জন করছি। ছেলের স্বপ্ন অনেক বড়। তবে খরচ জোগাড় করতে পারব কি না, সেটা নিয়ে চিন্তায় আছি।
এদিকে টিভিতে মেধা তালিকায় ছেলের নাম দেখে চমকে যান মা তরুলতা। তাঁর কথায়, আমার ইচ্ছা ওর পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার। দিনমজুরি করে সংসার চালাই। সরকারিভাবে কোনও সাহায্য পাব কি না জানি না। তবে আমাকে, ওর বাবাকে আরও কাজ করে উপার্জন করতে হবে। যেভাবেই হোক, ছেলের স্বপ্ন সফল করতে চাই।
কালিয়াগঞ্জের ভেউর গ্রামের বাসিন্দা প্রীতম্বর বলেন, সারা বছর সেভাবে বাঁধাধরা নিয়ম মেনে পড়াশোনা করিনি। পরীক্ষার কয়েক মাস আগে রোজ ১০ থেকে ১৫ ঘণ্টা পড়েই সাফল্য এসেছে। এই ফলাফলের পিছনে স্কুলের শিক্ষকদের পাশাপাশি গৃহশিক্ষকদের অবদান রয়েছে। স্কুল থেকেও যথেষ্ট সাহায্য পেয়েছেন প্রীতম্বর।
দরিদ্র পরিবারের ছেলের এই সাফল্যে খুশির হাওয়া ছড়িয়েছে কালিয়াগঞ্জ ব্লকের পাশাপাশি উত্তর দিনাজপুর জেলা জুড়ে। তবে আর্থিক অনটনের কারণে আটকে যাবে না তো এই কৃতী ছাত্রের উচ্চশিক্ষা? তা নিয়ে আতঙ্কের আঁচ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে।
এই বিষয়ে কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায় বলেন, আমি প্রীতম্বরের সাফল্যের কথা শুনেছি। ভোট প্রচারের কারণে আপাতত বাইরে রয়েছি। কালিয়াগঞ্জে ফিরে ছাত্র ও পরিবারের সঙ্গে দেখা করব। এই ছাত্রের স্বপ্ন পূরণে সবসময় পাশে থাকব। তার উচ্চশিক্ষার জন্য সাহায্য করা হবে। প্রীতম্বরকে মিষ্টি খাইয়ে দিচ্ছেন মা। - নিজস্ব চিত্র।