উচ্চতর বিদ্যায় শুভ। যে কোনও কর্মে উপার্জন বাড়বে। ব্যবসার গতি ও আয় বাড়বে। ... বিশদ
স্থানীয় আনারস চাষি ও ব্যবসায়ীদের কথা মাথায় রেখেই ২০০৯ সালে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি ভীমভারে পাইনঅ্যাপেল ডেভেলপমেন্ট সেন্টারটি নির্মাণ করেছিল। প্রায় ১৭ একর এলাকা জুড়ে থাকা এই কেন্দ্রে ৫৬টি আড়ত রয়েছে।
বিধাননগরে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে আনারস ব্যবসায়ীদের আড়ত থাকায় সেখানে নিয়মিত যানজট হয়। এই সমস্যা মেটাতে জাতীয় সড়ক থেকে এক কিলোমিটার ভিতরে ভীমভারে পাইনঅ্যাপেল ডেভেলপমেন্ট সেন্টারটি করা হয়। ছাদ দেওয়া আড়ত, ভিতরে কংক্রিটের বাঁধানো রাস্তা, আলো, শৌচাগার, বিদ্যুৎ, গাড়ি পার্কিং, পানীয় জল সহ সবরকমের সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু, তৈরির পর থেকেই এ’টি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।
আনারস ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ছিল জাতীয় সড়ক থেকে সেখানে যাওয়ার রাস্তাটি সংকীর্ণ। ফলে লরি চলাচলের ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। প্রশাসন রাস্তা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। কিন্তু, জমিজটের জন্য রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ এখনও থমকে আছে। এছাড়া মূল বাজারটি বিধাননগরে থাকায় সেখান থেকে সরে আসতে চাইছেন না ব্যবসায়ীরা।
বিধাননগর পাইনঅ্যাপেল প্রোডিউস কোম্পানির সভাপতি বাদল সরকার বলেন, রাস্তার সমস্যার জন্য ওই জায়গায় বড় গাড়ি যেতে সমস্যা। তাই ওখানে কেউ যেতে চান না। ফাঁসিদেওয়ার বিডিও সঞ্জু গুহ মজুমদার বলেন, কেন্দ্রটি এসজেডিএ’র অধীনে। রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব এসজেডিএ’র। চাষি বা আড়তদাররা সমস্যার কথা আমাদের জানালে এসজেডিএ’র নজরে নিয়ে আসতে পারি।
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নয়া সভাধিপতি অরুণ ঘোষ বলেন, এখনও বোর্ডের কর্মাধ্যক্ষ ঠিক হয়নি। কর্মাধ্যক্ষ হয়ে গেলে বোর্ড মিটিংয়ে এনিয়ে আলোচনা করা হবে।
এসজেডিএ’র সদস্য কাজল ঘোষ বলেন, রাস্তা সংকীর্ণ তাই বাজার সেখানে স্থানান্তরিত করা যাচ্ছে না। এখন আবার জমি থেকেই আনারস গাড়িতে চাপিয়ে সরাসরি রপ্তানি করা যাচ্ছে। কোটি টাকা খরচ করে নির্মিত পরিকাঠামো অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। দ্রুত চালুর ব্যাপারে সব পক্ষকে আলোচনায় বসার অনুরোধ জানাব।
ষাটের দশক থেকে বিধাননগরে আনারস চাষ শুরু হয়। ওই সময় ৫০ বিঘা জমিতে চাষ শুরু হয়েছিল। এখন তা বেড়ে হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমিতে। ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বিধাননগর-১, ২ এবং চটহাট গ্রাম পঞ্চায়েতে আনারসের চাষ হয়। আনারস থেকে জ্যাম, জেলি, জুস, আচার তৈরি হচ্ছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি দিল্লি, পাঞ্জাব, জম্বু কাশ্মীর, উত্তরপ্রদেশ এমনকী প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল, ভুটানে বিধাননগরের আনারস রপ্তানি করা হচ্ছে। প্রায় তিনলক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আনারস চাষের সঙ্গে যুক্ত। এখান থেকে বছরে ১০০ কোটি টাকার আনারস রপ্তানি করা হয়। বছরে প্রায় ১৩৫ হাজার মেট্রিক টন আনারসের চাষ হয়। সিস্যানাল, কার্ব্রাইট, ভাদুই ও শীত এই চার প্রকারের আনারসের ফলন হয় বিধাননগরে। জুন থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত চলে এই ফলের চাষ।
ফাঁসিদেওয়ার বিধাননগরে জরাজীর্ণ আনারস উন্নয়ন কেন্দ্র। -িনজস্ব চিত্র