উচ্চতর বিদ্যায় শুভ। যে কোনও কর্মে উপার্জন বাড়বে। ব্যবসার গতি ও আয় বাড়বে। ... বিশদ
জখমদের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আহতরা কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ সহ শহরের দু’টি নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন। পরপর দু’সপ্তাহে জল্পেশমুখী পুণ্যার্থীদের গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ার ঘটনাকে ঘিরে কোচবিহার জেলাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পুণ্যার্থীদের গাড়িতে পিছন থেকে একটি ট্রাক এসে আচমকাই ধাক্কা মারে। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছে মেখলিগঞ্জ থানার পুলিস। তবে পুলিস ও চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসাধীন জখমরা সকলেই বিপদমুক্ত রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার শৈবতীর্থ ময়নাগুড়ির জল্পেশে যাওয়ার পথে ডিজে বাজানোর জন্য পিকআপ ভ্যানেই রাখা জেনারেটরের শটসার্কিটে তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু হয় ১০ পুণ্যার্থীর। মর্মান্তিক ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের দুর্ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন ছড়িয়ে পড়ে জনমানসে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার একটি ছ’চাকার ট্রাকে করে দিনহাটা থানার নাজিরহাটের ৩৫ জন যুবক জল্পেশের উদ্দেশ্যে রওনা হন। ভোররাত সাড়ে ৩টে নাগাদ মাথাভাঙা-ময়নাগুড়ি রাজ্য সড়কের জামালদহে পূণ্যাথী বোঝাই ট্রাকটিকে ধাক্কা মারে অন্য একটি ট্রাক। ঘটনায় কমবেশি আহত হন ২২ জন। স্থানীয়রাই তাঁদের উদ্ধার করে জামালদহ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ১২ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি ১০ জনের চোট আঘাত গুরুতর থাকায় তাঁদের কোচবিহারে রেফার করা হয়। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে চলে আসে মেখলিগঞ্জ থানার পুলিস। ঘাতক ট্রাকটি বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি পুলিস গাড়ির চালককে আটক করে। এই দুর্ঘটনার পিছনেও ডিজে জড়িত রয়েছে এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রাকটিতে সাউন্ড বক্স ছিল। গভীর রাতে তারস্বরে বক্স বাজিয়ে ওই যুবকরা জল্পেশ যাওয়ার সময়ে জামালদহে পুলিস তাদের আটকায়। বাজেয়াপ্ত করে সাউন্ড সিস্টেম। পরে পুলিস ফাঁড়িতে গিয়ে ভুল স্বীকার করায় সাউন্ড সিস্টেম ফেরত দেওয়া হয় ওই যুবকদের। এর অল্প সময় পরেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। গত রবিবারের দুর্ঘটনার পর দিনহাটা থেকে জামালদহ পর্যন্ত ওই পুণ্যার্থীরা কী করে সাউন্ড সিস্টেম নিয়ে এল তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে পুলিসি গাফিলতির বিষয়টি সামনে এসেছে।
চ্যাংরাবান্ধার বাসিন্দা সমাজকর্মী সুর্নিমল গুহ বলেন, সাতদিন আগেই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে যায়। ১০টি তাজা প্রাণ বলি হয়। জামালদহে সাউন্ড সিস্টেম পুলিসের নজরে এল। কিন্তু, দিনহাটা থেকে জামালদহ পর্যন্ত পুলিসের নজরদারি ছিল না, এটা কী করে সম্ভব। পুলিসের আরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
মাথাভাঙার অতিরিক্ত পুলিস সুপার অমিত ভার্মা বলেন, জল্পেশ যাওয়ার পথে জামালদহ ফরেস্ট এলাকায় পুণ্যার্থীদের ট্রাকের পিছনে অপর একটি ট্রাক ধাক্কা মারে। এতে ২২ জন জখম হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১০ জনকে কোচবিহার রেফার করা হয়েছিল। কোচবিহারে চিকিৎসার পর এদিন আরও পাঁচজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। গুরুতর আহত পাঁচজন এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ সহ সেখানকার দু’টি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন রয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহতরা বিপদমুক্ত এখন। ওই অফিসার বলেন, রাতেই ঘাতক ট্রাকটি আটক করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয় ওই ট্রাকের চালককে। বক্স বাজিয়ে পুণ্যার্থীদের যাতায়াত রুখতে নজরদারি চলছে।
দুর্ঘটনায় জখম এক পুণ্যার্থী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিজস্ব চিত্র