কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির সূচনা। ব্যবসায়ীদের উন্নতির আশা রয়েছে। বিদ্যার্থীদের সাফল্যযোগ আছে। আত্মীয়দের সঙ্গে মনোমালিন্য দেখা দেবে। ... বিশদ
শিলিগুড়ি পুরসভার ভোট নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। ইতিমধ্যে তারা পুরসভার আসন সংরক্ষণের খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে। এর থেকেই অনেকের ধারণা চলতি বছরের এপ্রিল, মে মাস নাগাদ পুরভোট হবে। আগামী বছর হবে বিধানসভা নির্বাচন। কাজেই বিধানসভা ভোটের আগে পুরসভা নির্বাচন যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। এই ভোটের জয়-পরাজয়ের উপর নির্ভর করছে অনেক অঙ্ক। স্বাভাবিকভাবেই বিধানসভা ভোটের আগে ঘাসফুল শিবির বড়ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। দলের অন্দরেই এনিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, লাগাতার লড়াই আন্দোলন চললেও এই শহরের নাগরিকদের একাংশের মধ্যে তৃণমূলের প্রতি আগ্রহ তেমন জন্মায়নি। ঘাসফুল শিবিরের অনেক নেতা-নেত্রীকে নিয়ে এলার্জি রয়েছে নাগরিকদের। ওই নেতা-নেত্রীদের আচার-আচরণ, জীবনযাত্রা, স্বল্প সময়ের মধ্যে ফুলেফেঁপে ওঠা এসব অনেকে মেনে নিতে পারছেন না। তাছাড়া তৃণমূলে নতুন মুখদের সেভাবে জায়গা দেওয়া হচ্ছে না। স্বচ্ছ ভাবমূর্তিসম্পন্ন নেতাদের কার্যত কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। পরিবর্তে ঠিকাদারদের একাংশ তৃণমূলে জায়গা করে নিয়েছে বলে অভিযোগ। প্রকাশ্যে অনেক নেতার আশপাশে সর্বদা ঘোরাঘুরি করছে বিতর্কিত কিছু নেতা।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য তৃণমূল নেতাদের একাংশও মেনে নিয়েছেন। তাঁরা বলেন, এই শহরে প্রতিটি ভোটের আগেই বামফ্রন্টকে বিসর্জন দেওয়ার স্লোগান তোলা হয়। মানুষের কাছ থেকে সাড়াও মেলে। কিন্তু সাফল্য মেলে না। রাজ্যজুড়ে পরিবর্তনের হাওয়া ওঠায় ২০১০ সালে এই পুরসভা দখল নেওয়া সম্ভব হয়েছিল। ২০১৫ সালেই তা হাতছাড়া হয়ে যায়। কারণ নেতৃত্বের অভাব। যোগ্যদের সামনে না এনে কিছু নেতা দলকে একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর মধ্যে আটকে রেখেছে। এতে ওই নেতাদের লাভ হলেও আখেরে দল সমৃদ্ধ হচ্ছে না। প্রতিটি ভোটের পর এই ব্যাপারে কিছুটা হইচই হওয়ার পর তা আবার দমে যায়। গত লোকসভা ভোটের পর দলে যে ধরনের পরিবর্তন আশা করা হয়েছিল তা কিন্তু হয়নি। এসব কারণেই এবার পুরভোট যথেষ্ট কঠিন লড়াই।
প্রসঙ্গত, বামফ্রন্ট শাসিত শিলিগুড়ি পুরসভার বিরুদ্ধে সার্বিক ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করছে তৃণমূল। তাদের অভিযোগ, শহরের রাস্তা, নিকাশি নালা, পথবাতি পরিষেবার অবস্থা বেহাল। নিয়মিত জঞ্জাল সাফাই হচ্ছে না। ডেঙ্গু দমন করতেও পুরসভা ব্যর্থ হয়েছে। বহু এলাকায় এখনও পানীয় জলের সুব্যবস্থা হয়নি। এসবের পাশাপাশি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও এনআরসির বিরুদ্ধে লাগাতার মিছিল, পথসভা, বাড়ি বাড়ি অভিযান চলছে। তৃণমূলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর নেতারা বলেন, শহরে ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দলের পক্ষে কিছুটা হাওয়া উঠেছে। এবার পুরসভা দখলে তৃণমূলকে কেউ রুখতে পারবে না। বরং সিপিএম দলীয় কোন্দলে জেরবার। তাই এবার বামফ্রন্টের অবস্থা শোচনীয়। তাই তারা কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি বলেন, দলে কোনও সমস্যা নেই। এবার শহরবাসী আমাদেরকেই পুরসভা উপহার দেবে। সিপিএম নেতারা কোন্দলের অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, পুরসভা ফের তাঁদের দখলেই আসবে।