নয়াদিল্লি: হাঙ্গেরির বিএসি কনসালটিং। লেবাননে হিজবুল্লার ঘাতক পেজারগুলি তৈরি করেছিল এই সংস্থাটি। হাঙ্গেরির মাটিতে সক্রিয় এই বিএসি কনসালটিং আসলে একটি ভুয়ো ইজরায়েলি সংস্থা। নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি রিপোর্টে এই দাবি করা হল। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার লেবাননজুড়ে প্রাণঘাতি পেজার হামলার নেপথ্যে ইজরায়েল রয়েছে বলে দাবি করেছিল হিজবুল্লা নেতৃত্বও। কাঠগড়ায় তুলেছিল ইজরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদকে। নয়া রিপোর্টে এবার ভুয়ো ইজরায়েলি সংস্থার মাধ্যমে পরিকল্পনা কর্যকর করার ইঙ্গিত দেওয়া হল। রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রাণঘাতি পেজার তৈরির পরিকল্পনা গোপন রাখতেই বিএসি কনসালটিং নামে সংস্থাটি গড়ে তোলা হয়েছিল। অন্যান্য ক্লায়েন্টের জন্য পরিচিত সাধারণ পেজার বানায় এই সংস্থা। আর সেই কাজের আড়ালেই হিজবুল্লার বরাতের পেজারগুলি পৃথকভাবে বানানো শুরু হয়। সেগুলিতে বিস্ফোরক বোঝাই ব্যাটারির ব্যবহার করা হয়। ছোট ছোট ব্যাচে এই পেজারগুলি লেবাননে পাঠানো হয়েছিল। ২০২২ সাল থেকে তা শুরু হয়েছিল। এই পেজারগুলিই পৌঁছে গিয়েছিল হিজবুল্লার বিভিন্ন আধিকারিক ও তাদের সহযোগীদের কাছে।
লেবাননে একের পর এক বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম প্রায় ৪৫০। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পেজার ও ওয়াকি-টকি বিস্ফোরণের এই ঘটনায় প্রযুক্তিনির্ভর এক নয়া যুদ্ধ কৌশলের যুগ শুরু হল। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ কর্নেল অজয় রায়না বলেন, এক্ষেত্রে অত্যাধুনিক বিস্ফোরক ও রেডিও তরঙ্গ প্রযুক্তিকে ব্যবহার করা হয়েছে। এই ঘটনা আধুনিক যুদ্ধবিদ্যার এক উদ্বেগজনক সন্ধিক্ষণের ইঙ্গিতবাহী। বিস্ফোরক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে পিইটিএন (পেন্টাএরিথ্রিটল টেট্রানাইট্রেট)। এই বিস্ফোরক তার ধ্বংসাত্মক ক্ষমতার জন্য সুপরিচিত। ডিটোনেশন প্রক্রিয়ার জন্য রেডিও তরঙ্গের ব্যবহার। এভাবে দূর নিয়ন্ত্রক বিস্ফোরণের জন্য কতটা দক্ষতার প্রয়োজন, গোটা ঘটনা থেকেই তার ইঙ্গিত মিলছে।