গুরুজনের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা ও মানসিক উদ্বেগ। কাজকর্মে বড় কোনও পরিবর্তন নেই। বয়স্কদের স্বাস্থ্য সমস্যা ... বিশদ
হাসিনা পার্কারের মৃত্যু হয়েছে। তাদের ছোটভাই ইব্রাহিম কাসকর জেলে। ছোটা শাকিলের দুই ভগ্নিপতি কেউ আর নেই। হাসিনা পার্কারের এই দুই ফ্ল্যাট সরকার বাজেয়াপ্ত করে নিলামে চড়িয়েছে। তার মানে তো দাউদের প্রভাবই রইল না পাড়ায়! সত্যিই কি তাই? আপাতভাবে কোনও তাপ-উত্তাপ নেই নাগাপাড়ায়। ৩০ বছর ধরে হাসিনা পার্কারের আবাসনের সিকিউরিটি গার্ড ফয়জল আলম বললেন, ‘দাউদ নেই। আবার খুব বেশি করে আছে। ১৮ কোটি টাকা নিলামের দর উঠেছে হাসিনা পার্কারের দু’টি ফ্ল্যাটের। সরকার, পুলিস, আদালত সব একদিকে। অথচ আজও এই দুই ফ্ল্যাট কেনার সাহস করল না কেউ। একজন ২০১৯ সালে নিলামে সর্বোচ্চ দর দিয়েছিল। এক বছর পর হঠাৎ সে বলে, কিনবে না।’ কেন? হাসলেন ফয়জল আলম, ‘আপনাকে এত জেরা করা হচ্ছিল কেন? ওই কারণেই তো! দেখে এরকম মনে হয়। কিন্তু এই বাড়ি অদৃশ্য হাই সিকিউরিটি জোন।’
এই রাস্তার অদূরে টেমকার স্ট্রিটের সরু গলির মধ্যেই তৈরি হচ্ছে বহুতল। এই সেই টেমকার স্ট্রিট, যেখান থেকে সূত্রপাত দাউদের পুলিসের চোখে পড়া। নাগাপাড়া ক্রসিংয়ে এই যে পাঁচ মাথার মোড়, এখানে এখনও বছরের বিশেষ সময় আশপাশের স্কুলের ছাত্রদের ট্রাফিকের ডিউটি করানো হয়। ট্রাফিক রুলস শেখার প্রশিক্ষণ। আজ এই পাড়ার ছাত্রদের ক’জন জানে যে, দাউদ এই কাজটিই করছিল স্কুলের হয়ে। আর সেই সময় সাতের দশকে তার কাছে হঠাৎ খবর আসে, টেমকার স্ট্রিকে তার দাদা সাবিরকে একদল ছেলে পেটাচ্ছে। দাউদ নাগাপাড়া মোড় থেকে এই ডিমটিংকর রোড হয়ে দৌড়ে আসে। আর একাই পাঁচজনকে ঘায়েল করে। প্রতিশোধ। অভিভাবকদের নালিশে দাউদকে বের করে দেওয়া হয় স্কুল থেকে। কোন স্কুল? গর্ডন হলে যাওয়ার ঠিক আগে ওই যে অঞ্জুমান ইসলাম আহমেদ সেইলরস স্কুল।
এহেন নাগাপাড়া আজ শান্ত। কোনও নতুন মাফিয়া ডনের কথা শোনা যায় না মুম্বইয়ে। দাউদ নেই। আবার রজিব পূজারি, অরুণ গাউলি, কুমার পিল্লাই, পাণ্ডব পুত্র সকলের গ্যাংও নিরুদ্দেশ। তবে কেন মাফিয়া জগতে এই মন্দা? টেমকার স্ট্রিটের ঠিক উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে গোপন কথা বলার ভঙ্গিতে দোকানি বললেন, ‘আমরা শুনি, এখন নাকি মুম্বই অপরাধ জগতে শার্প শ্যুটারের অভাব। নিখুঁত নিশানায় গুলি করে হত্যা করবে এমন গ্যাংস্টার আর নেই। ইজাজ লাখাওয়ালা, সাগর চহ্বনের মতো অপরাধীদের নাম মুম্বই পুলিসের ক্রাইম ব্রাঞ্চের ফাইলে আছে। কিন্তু অতীতের হাড় কাঁপানো মাফিয়াদের ধারেকাছে নয় তারা। এখন অপরাধ হল, জমি, বাড়ি, পুরনো বিল্ডিং নিয়ে আইনি কিংবা দখলের জটিলতার সমাধান করা। আর প্রোমোটারদের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়।’
দাউদের পাড়ায় ফ্ল্যাটের স্বর্গরাজ্য চলছে। আপাতত দু’টি জল্পনা। এসব কারা কন্ট্রোল করছে? দ্বিতীয় প্রশ্ন, দাউদভাই জিন্দা হ্যায় না?