শরীর-স্বাস্থ্যের আকস্মিক অবনতি। বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ আসতে পারে। সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদ। ব্যবসায় নতুন সুযোগ ... বিশদ
১৯৬৬ সালে শিবসেনা গঠন করেছিলেন বাল থ্যাকারে। বিজেপির সঙ্গে প্রায় ২৫ বছর জোট ছিল তাদের। পাশাপাশি, প্রকাশ্যে এবং গোপনে কংগ্রেসের সঙ্গে শিবসেনার সম্পর্কের বয়সও পাঁচ দশকের বেশি। শিবসেনার প্রথম জনসভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের কংগ্রেস শীর্ষ নেতা রামরাও আদিক। খ্যাতনামা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ সুহাল পালশিকর একটি সাময়িকীতে এব্যাপারে লিখেছেন। ‘দ্য কাজিনস থ্যাকারে- উদ্ধব অ্যান্ড রাজ অ্যান্ড ইন দ্য শ্যাডো অব দেয়ার সেনা’ বইটির লেখক ধবল কুলকার্নিও জানিয়েছেন, ছয় ও সাতের দশকে শহরে শ্রমিক ইউনিয়নগুলিতে বামেদের প্রভাব কমাতে শিবসেনাকে ব্যবহার করত কংগ্রেস। ১৯৭১ সালে কংগ্রেস (ও)-এর সঙ্গে জোট করে লোকসভা ভোটে ৩ কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়ে পরাজিত হয় তারা। ১৯৭৭ সালে জরুরি অবস্থাকে সমর্থন জানিয়ে সেবছরের লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থীও দেয়নি বালাসাহেবের দল। ওই বছরই মেয়র নির্বাচনে কংগ্রেসের মুরলি দেওরাকে সমর্থনও দেয় তারা। ১৯৭৮ সালে জনতা পার্টির সঙ্গে জোটের চেষ্টা ব্যর্থ হলে ইন্দিরা কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলায় তারা। সেবার ইন্দিরাবিরোধী হওয়ায় বিধানসভা ভোটে শিবসেনার সমস্ত প্রার্থীই হেরে যায়। ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর কংগ্রেস-সেনার এই সম্পর্ক ভেঙে যায়। এরপর থেকেই ঘোরতর হিন্দুত্বের দিকে সরে যান থ্যাকারে। কিন্তু, তারপরেও এনডিএ-তে থাকার সময়ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী প্রতিভা পাটিল এবং প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থন দিয়েছিল শিবসেনা।
প্রবীণ সাংবাদিক প্রকাশ আকোলকরের ‘জয় মহারাষ্ট্র’ বই থেকে জানা যায়, ১৯৭০ সালে মুম্বইয়ের মেয়র নির্বাচনের সময় মুসলিম লিগের সঙ্গেও জোট করেছিল হিন্দুত্ববাদী শিবসেনা। সেবার দক্ষিণ মুম্বইয়ে মুসলিম লিগ নেতা জি এম বানটওয়ালার সঙ্গে একই মঞ্চে হাজির হয়েছিলেন স্বয়ং বালাসাহেব। একইভাবে ১৯৬৮ সালে মধু দন্ডবতের প্রজা সোশ্যালিস্ট পার্টির সঙ্গেও হাত মিলিয়েছিল শিবসেনা।
বাল থ্যাকারে এবং শারদ পাওয়ার পরিবারের সম্পর্কও দীর্ঘদিনের। রাজনীতির ময়দানে তাঁরা পরস্পরের শত্রু। কিন্তু ব্যক্তিজীবনে গলায় গলায় বন্ধুত্ব ছিল দু’জনের। পাওয়ার নিজের আত্মজীবনী ‘অন মাই টার্মস’-এ লিখেছেন, আড্ডা দিতে এবং নৈশভোজের আমন্ত্রণে তিনি এবং তাঁর স্ত্রী প্রতিভা মাতোশ্রীতে (থ্যাকারের বাসভবন) যেতেন। ২০০৪ সালে ক্যান্সার ধরা পড়ার সময় বালাসাহেবই তাঁকে ডায়েটের পরামর্শ দিয়েছেন। ‘শারদবাবু’র মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে রাজ্যসভার নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সময় তাঁর বিরুদ্ধে কাউকে দাঁড় করায়নি শিবসেনা। এমনকী, বিজেপি যাতে তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী না দেয়, সেব্যাপারেও পাওয়ারকে আশ্বস্ত করেছিলেন থ্যাকারে। এবারের নির্বাচনে বালাসাহেবের নাতি আদিত্যের বিরুদ্ধে হেভিওয়েট প্রার্থী না দিয়ে তারই প্রতিদান দিয়েছেন পাওয়ার।