শরীর-স্বাস্থ্যের আকস্মিক অবনতি। বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ আসতে পারে। সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদ। ব্যবসায় নতুন সুযোগ ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইএম বাইপাসের হাইল্যান্ড পার্ক থেকে নিউ গাড়িয়ায় ২০৬ নং বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত এই সওয়া কিলোমিটার রাস্তায় মাত্র দুটি স্থানে পুলিসের সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। পুলিসের ক্যামেরা ছাড়া পিয়ারলেস হাসপাতালের গেট, এন কে ভবন এবং কোল ইন্ডিয়া আবাসনের গলি সংলগ্ন একটি বাড়িতে তাদের নিজস্ব ক্যামেরা আছে। রাত ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত ২০৬ নং বাসস্ট্যান্ডের কাছে ‘নাকা চেকিং’ করে পঞ্চসায়র থানা। পাশাপাশি, পিয়ারলেস হাসপাতালের কাছে টহলদারির জন্য কলকাতা পুলিসের একটি পিসিআর ভ্যান থাকে। ঘটনাস্থল থেকে ৩০০ মিটারের মধ্যে প্রাক্তন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, আইজি (মুর্শিদাবাদ রেঞ্জ) বাস্তব বৈদ্যের বাড়ি। তেমনই ৭৫০ মিটারের মধ্যে থাকেন রাজ্যের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিব। স্বাভাবিকভাবেই পঞ্চসায়রের মতো শান্তিপূর্ণ এলাকায় গাড়িতে তুলে মহিলাকে গণধর্ষণের ঘটনায় কার্যত চমকে গিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর শর্মা জানিয়েছেন, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিসের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই তদন্ত চালানো হচ্ছে। তদন্তে নেমে সিসিটিভি’র ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে নির্যাতিতা মানসিকভাবে অসুস্থ। গাড়ির রং ছাড়া তিনি তেমন কোনও তথ্য দিতে পারছেন না। ফলে তদন্তে বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হবে। তেমনই বৃদ্ধাবাস কর্তৃপক্ষও বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোল ইন্ডিয়া সমবায় আবাসনের সেবা ওল্ডেজ হোম থেকে পালানো বছর ঊনচল্লিশের এক মহিলাকে গাড়িতে তুলে গণধর্ষণ করে সোনারপুর স্টেশনের কাছে ফেলে দিয়ে যায় দুই দুষ্কৃতী। প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, কোল ইন্ডিয়া সমবায় আবাসনের এ-১ লেনে এই বৃদ্ধাবাসটি চলছিল প্রায় তেরো-চোদ্দ বছর ধরে। এখানে ছ’জন পুরুষ ও পাঁচজন মহিলা থাকেন। নির্যাতিতার মাও এই বৃদ্ধাবাসে আছেন। গত ৯ নভেম্বর থেকে এই বৃদ্ধাবাসে থাকতে শুরু করেন এই মহিলা। সোমবার রাত ২টো থেকে সওয়া ৩টের মধ্যে তালা খুলে বাইরে বেরিয়ে আসেন মানসিকভাবে অসুস্থ ওই মহিলা। বৃদ্ধাবাস থেকে বেরিয়ে মাঝরাতে তিনি পঞ্চসায়র মেন রোডে বিক্ষিপ্তভাবে ঘোরাঘুরি করছিলেন। ঠিক তখনই হাইল্যান্ড পার্কের দিক থেকে আসা সাদা রঙের একটি গাড়িতে দুই যুবক জোর করে তুলে নেয় ওই মহিলাকে।
পরে সোনারপুরের কোনও অজ্ঞাতস্থানে গণধর্ষণের পর ফেলে দেওয়া হয় তাঁকে। মঙ্গলবার বিকেলে জ্ঞান ফিরতেই নির্যাতিতা স্থানীয় মহিলাদের সাহায্যে সোনারপুর স্টেশনে আসেন। ওই মহিলাদের একজন টিকিট কেটে দিলে, তিনি ট্রেনে করে প্রথমে বালিগঞ্জ স্টেশন নামেন। পরে স্থানীয়দের জিজ্ঞাসা করে তিনি গড়িয়াহাটে মামার বাড়িতে পৌঁছন। সেখান থেকে তিনি যান পর্ণশ্রী এলাকায় দিদির বাড়িতে। মঙ্গলবার রাত ১১টা নাগাদ দিদি পঞ্চসায়র থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যার ভিত্তিতে পুলিস গণধর্ষণ, অপহরণ, মারধরের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। বুধবার এনআরএস হাসপাতালে নির্যাতিতা মহিলার মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়েছে।
এক বিশ্বস্ত সূত্র জানাচ্ছে, জিজ্ঞাসাবাদে মহিলা পুলিসকে জানিয়েছেন, গাড়িতে থাকা দুই যুবকের মধ্যে একজনের নাম ‘ফিরোজ’। কে এই ফিরোজ, তদন্তে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি, রাত ১০টার পর হাইল্যান্ড পার্ক থেকে গড়িয়া স্টেশন পর্যন্ত প্রাইভেট কার, ট্যাক্সি, অ্যাপ ক্যাব ‘শাটল’ হিসেবে চলাচল করে। তদন্তে এই সব গাড়ির ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।