সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মক্ষেত্রে বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার ... বিশদ
সময়টা ছিল ২০১১ সাল। আন্না হাজারে তখন দুর্নীতি-বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের দুর্নীতিই সেই আন্দোলনের মূল ইস্যু। তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মনমোহন সিং। দুর্নীতি-বিরোধী আন্দোলনে হাজারে সে সময় যে ক’জন ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে পেয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে প্রথম সারিতে ছিলেন কেজরিওয়াল। ২০১২ সালের শেষ দিকে কেজরিওয়াল সহ বেশ কয়েকজন নেতা হাজারের দুর্নীতি-বিরোধী মঞ্চ ছেড়ে আম আদমি পার্টি (আপ) গঠন করেন। ২০১৩ সালে দিল্লির বিধানসভা ভোটে লড়াই নামে আপ। তাতে হইহই করে জয়লাভও করে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হন কেজরিওয়াল। এদিন সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে সেদিনের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ভূয়সী প্রশংসা করলেন আপ সুপ্রিমো। তিনি বললেন, ‘২০০৮ সালের শেষ দিকে গোটা বিশ্বে আর্থিক সুনামি হলেও তার ধাক্কা ভারতের গায়ে লাগতে দেননি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন। তিনি এখনকার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চেয়ে হাজারগুণ ভালে ছিলেন।’
মনমোহনের প্রশংসা করলেও সাক্ষাৎকারে রাহুলকে অবশ্য বিঁধতে ছাড়েননি কেজরিওয়াল। রবিবার ষষ্ঠ দফায় দিল্লিতে ভোট। বিজেপির সঙ্গে দ্বিমুখী লড়াই চেয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। এরজন্য কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়তে চেয়ে চেষ্টার কোনও কসুর করেননি তিনি। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত কেজরিওয়ালের সেই চেষ্টা সফল হয়নি। ফলত, দিল্লিতে এবার বিজেপি, কংগ্রেস ও আপের ত্রিমুখী লড়াই হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ভোটের লড়াইয়ে বিজেপি দিল্লিতে খানিক বাড়তি সুবিধা পাবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। দিল্লির মতো একইভাবে বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হয়নি আঞ্চলিক দলগুলির। তা নিয়েই রাহুলকে একহাত নিয়েছেন কেজরিওয়াল।
এদিন দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘রাজ্যে রাজ্যে সার্বিক জোট প্রক্রিয়া বানচাল হওয়ার পিছনে রাহুল গান্ধীই দায়ী। তিনি আসলে বিরোধীদের বিরুদ্ধেই লড়াই করতে চেয়েছিলেন। বিজেপির সঙ্গে নয়। তাই দিল্লিতে আপের সঙ্গে জোট করেনি কংগ্রেস। উত্তরপ্রদেশে সপা-বসপা জোটেরও হাত ধরেনি তারা। কেরল বাম এবং পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের সঙ্গে জোট গড়ার ক্ষেত্রেও সদর্থক ভূমিকা নেয়নি কংগ্রেস।’ এরপরেই কেজরিওয়ালের সংযোজন, এই জোট না হওয়ার কারণে যদি নরেন্দ্র মোদি ফের ক্ষমতায় আসেন, তা হলে দায়ী থাকবেন রাহুল গান্ধী।
আর মোদি প্রধানমন্ত্রী হলে যে দেশের দুর্দশা আরও বাড়বে, তাও জানিয়ে দিয়েছেন আপের জাতীয় আহ্বায়ক। তাঁর কথায়, ‘গত পাঁচ বছর মানুষের মূল সমস্যাগুলির সমাধানে কোনও উদ্যোগ নেননি মোদি। এখন ‘মেকি দেশাত্মবোধ’-এর আওয়াজ তুলে ভোট চাইছেন তিনি। কখনও আবার ভোট চাইতে গিয়ে ব্যবহার করছেন ভারতীয় সেনাবাহিনীকে।’ তাই মোদি আবার ক্ষমতায় ফিরলে দেশ গভীর সঙ্কটে পড়বে বলে মনে করেন কেজরিওয়াল। তার উপর মোদির অন্যতম সেনাপতি অমিত শাহের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা দেখতে পেয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন তিনি। এদিন এক ট্যুইট বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘মোদি প্রধানমন্ত্রী হলে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হবেন অমিত শাহ। আর এমন ঘটনা ঘটলে দেশের পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা সহজে অনুমেয়। তাই ভোট দেওয়ার সময় আপনারা একবার ভাববেন।’ দিল্লির ভোটারদের সতর্কবার্তা দিয়ে রাখলেন কেজরিওয়াল।