অগ্নিভ ভৌমিক, কৃষ্ণনগর: ঢাক-ঢোল বাজল, মিছিলে দেখা গেল রঙের বাহারও। কিন্তু তারপরও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের রোড শো শেষে কৃষ্ণনগরে শোনা গেল ‘যত গর্জাল, তত বর্ষাল না।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রচারে যেমন ভিড় হওয়া উচিত, তেমনটা না হওয়ায় বিজেপি প্রার্থী ‘রানিমা’র প্রচারে ঝড় তুলতে পারলেন না অমিত শাহ। সৌজন্যে, বিজেপির দুর্বল সংগঠন। বহু সংখ্যায় ঢাকি, সাজগোজ করে রোড শো আলো করে রাখা বহু যুবতী এবং গলায় বিজেপির উত্তরীয় পরে থাকা বিজেপির কর্মী-সমর্থক। এঁরাই ছিলেন রোড শোয়ের ‘শক্তি’। তৃণমূল দাবি করেছে, শাহের মেগা রোড শো মোটেও সফল হয়নি। মিছিলে পা মেলানো বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের থেকে পুলিসের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। পদযাত্রা শেষে অমিত শাহ অবশ্য বলেন, ‘রানিমার সঙ্গে এক ঘণ্টা রোড শো করলাম। মানুষের উৎসাহ দেখে আমি নিশ্চিত, রানিমার জয় হবেই।’ বাংলায় অনুপ্রবেশ বন্ধ থেকে সিএএ, সন্দেশখালি কাণ্ড সবই ঘুরে ফিরে এসেছে তাঁর বক্তব্যে। যদিও সন্দেশখালির স্টিং-ভিডিও সম্পর্কে নীরবই ছিলেন তিনি। তিনি এদিন শুধু বলেন, ‘বাংলায় অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে। সিএএ’র বাস্তবায়ন করতে হবে। গুন্ডামি, কাটমানি, সন্দেশখালিতে আমাদের মা-বোনেদের উপর শোষণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বন্ধ করতে পারবেন না। এটা শুধুমাত্র মোদিজির নেতৃত্বেই সম্ভব।’
এদিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ কৃষ্ণনগরে পৌঁছন অমিত শাহ। তারপর বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়ের সমর্থনে কৃষ্ণনগর সদরের মোড় থেকে রোড শো শুরু করেন। এই প্রচার কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোটা শহর পুলিসে মুড়ে দেওয়া হয়েছিল। মিছিলের সিংহভাগ জুড়েই ছিল বাজনার দল। ভীমপুর, আসাননগর এলাকা থেকে মতুয়া সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ এসেছিলেন। তবে অমিত শাহকে দেখতে রাস্তার দু’ধারে অনেকেই ক্যামেরা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
এদিনের রোড শো নিয়ে শহরে ধামাকা করার বার্তা দিয়েছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু কোথায় সেই ধামাকা? মিছিলের গাড়ি এভি স্কুল মোড়ের কাছে পৌঁছনোর পর সেই প্রশ্নই তুলেছেন শহরবাসী। বিজেপি নেতৃত্বের সাফাই, তীব্র গরমের কারণেই অনেকে মিছিলে আসেননি। কৃষ্ণনগর শহর তৃণমূলের সভাপতি প্রদীপ দত্ত বলেন, ‘অমিত শাহের রোড শোয়ের থেকে ১০ গুণ বেশি কর্মী-সমর্থক মহুয়া মৈত্রের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শোভাযাত্রায় ভিড় করেছিলেন। মিছিল দেখে মনে হল বিজেপির লোকজনের থেকে পুলিসের সংখ্যা অনেক বেশি।’