নিকটজনের স্বাস্থ্য সমস্যায় মানসিক অস্থিরতা। মুদ্রণ বা সংবাদপত্রের ব্যবসা,বৃত্তি শিক্ষাকেন্দ্রের পরিচালনায় সাফল্য। ... বিশদ
মঙ্গলবার ইন্ডিয়া কালেক্টিভ ট্রাস্ট নামক একটি এনজিও পশ্চিমবঙ্গে ৩৫৬ ধারা জারি করে রাষ্ট্রপতি শাসনের জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে। কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে, বাংলায় ভোট পরবর্তী ‘সন্ত্রাসে’ গণতন্ত্র ও আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। পাশাপাশি, বিজেপির নেতা গৌরব ভাটিয়া সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন সিবিআই তদন্তের দাবিতে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজ্যপালকে ফোন করছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রিপোর্ট চাইছে। বিজেপির এমপিরা ট্যুইটারে বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবিতে সরব হয়েছেন। দিল্লির বিজেপি এমপি পরবেশ সিং ট্যুইটার ট্রেন্ডিং শেয়ার করেছেন। যে ট্রেন্ডিংয়ের নাম ‘বাংলায় চাই রাষ্ট্রপতি শাসন’। সব মিলিয়ে বাংলাকে ‘হেয় করতে’ বিজেপির এই নয়া কৌশল নিয়ে টানটান উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। চিত্রতারকা কঙ্গনা রানাওয়াত একের পর এক ট্যুইট করেছেন। কোথাও বলেছেন, শয়ে শয়ে খুন হয়ে চলেছে। কোথাও বলেছেন, বাংলার মহিলা গুন্ডাকে শায়েস্তা করতে মোদিজি আপনার বিরাট রূপ আর একবার দেখান, যেটা ২০০০ সালের পর তিনি করে দেখিয়েছিলেন। অর্থাৎ কঙ্গনার ইঙ্গিত গুজরাত! অবশ্য ওইখানেই শেষ... এরকম প্ররোচনামূলক ট্যুইটের পর অভিনেত্রীর ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট, পাকাপাকিভাবে বন্ধ করে দিয়েছে ট্যুইটার কর্তৃপক্ষ।
প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি ভোটে পরাস্ত হওয়া বিজেপি পরাজয় মানতে না পেরে এবার অন্য উপায় নিতে চলেছে? মঙ্গলবার বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেছেন, বাংলা আজ নাৎসি জার্মানিতে পরিণত। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছে, বিজেপি কি বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন চায়? সেই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেননি তিনি। বলেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রিপোর্ট চেয়েছে। রাজ্যপালও রিপোর্ট দেবেন। প্রশাসনিক ব্যক্তিরাই প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেবেন। আমরা কিছু বলছি না। যদিও রাজ্যপালকে ফোন করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ এবং জাতীয় মহিলা কমিশনের বাংলা সফর—গোটা ঘটনা পরম্পরা থেকেই স্পষ্ট, সর্বভারতীয়ভাবে বাংলার অশান্তিকে জাতীয় চর্চার কেন্দ্রস্থলে নিয়ে আসার প্রাণপণ চেষ্টা করছে বিজেপি। দিল্লিতে মঙ্গলবার বঙ্গভবনে তারা বিক্ষোভও দেখিয়েছে। তবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় হাতিয়ার কিন্তু ফেক নিউজ আর ছবিই। বাংলাতেও এই প্রবণতা সোমবার রাত থেকে ক্রমশ বাড়ছে। একই ছবি... দাউ দাউ করে জ্বলছে একটি বাড়ি। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে কেউ লিখছে, হিন্দুদের মন্দির জ্বলছে। আবার কেউ সেই ছবির নীচে ক্যাপশন দিয়েছে, আমাদের পার্টি অফিস জ্বলছে। আবার সেই ছবিতে কারও দাবি, ওটা আমাদের দলীয় কর্মীর বাড়ি। কেউ প্রচার করছে, ২৪ ঘণ্টায় ২৮ জন মারা গিয়েছে। কারও দাবি, গ্রামে গ্রামে মহিলাদের গণধর্ষণ চলছে। দিল্লির বিজেপি এমপি হুমকি দিয়ে বলেছেন, তৃণমূলের এমপি, বিধায়কদের কিন্তু দিল্লি আসতে হবে। এটা যেন তাঁরা মনে রাখেন। অর্থাৎ, গণতন্ত্রের যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর বেরিয়ে আসছে দাঁত-নখ। আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন... তৃতীয়বারের জন্য। আর আজকের পর শুরু হতে চলেছে কেন্দ্র বনাম রাজ্য তুমুল লড়াই।