উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে মধ্যম ফল আশা করা যায়। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে নতুনত্ব আছে। কর্মরতদের ... বিশদ
মুদিয়ালি ক্লাবের সামনে সেজেগুজেই দাঁড়িয়ে ছিলেন অয়ন আর দীপশিখা বন্দ্যোপাধ্যায়। সামনে সারি বাঁধা পুলিসের গার্ডরেল। পাশে দাঁড়ানো পুলিসকর্মী থেকে ক্লাবের কর্মকর্তাদের কড়া নজর। এগনোর উপায় নেই। তাই হতাশা যেন ঢাকছিল না নতুন জামা-জুতোয়। দূর থেকেই মণ্ডপ আর প্রতিমা দর্শন করে দীপশিখা বললেন, ‘সাধ আর সাধ্যের মধ্যে ফারাকটা অনুভব করলাম। আমাদের সাধ্য নেই নির্দেশকে অমান্য করে এগিয়ে যাওয়ার। ইচ্ছে ছিল, প্রতিমার সামনে গিয়ে ছবি তুলব। সেটা তোলা থাকল পরের বছরের জন্য।’
মঙ্গলবার দুর্গাপুজো নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশের পর কলকাতা শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ—ছবিটা ছিল একেবারেই আলাদা। জেলাগুলিতেও দেখা গিয়েছে তারই প্রতিফলন। ছোট ও বড় পুজোর হিসেব করে মণ্ডপ থেকে ৫ ও ১০ মিটারের দূরত্বে ছিল ব্যারিকেড। সঙ্গে ‘প্রবেশ নিষেধ’ সাইনবোর্ড। এমনকী ১০ মিটারের অংশে রাস্তার উপরও লিখে দেওয়া হয়েছে ‘নো এন্ট্রি’।
উত্তর কলকাতার গলির ভিতরে যে সব পুজো হয়, দূরত্ববিধিতে সমস্যায় পড়েছেন তারা। তবে শহরের কোনও পুজোমণ্ডপেই ভিতরে প্রবেশের ‘যোগ্য’ নির্দিষ্ট কয়েকজনের নামের তালিকা চোখে পড়েনি। কাশী বোস লেনের পুজোর সাধারণ সম্পাদক সোমেন দত্ত বলেন, ‘সদস্য রয়েছেন ৪৫০ জনের উপরে। সেখানে ২৫ জন কী করে বাছব?’
নিয়মের কড়াকড়ির জেরে বেশ কয়েকটি জায়গায় দর্শনার্থীদের সঙ্গে কর্মকর্তাদের তর্কও বাধে। ‘অনেক দূর থেকে পুজো দেখতে এসেছি। কেন ভিতরে ঢুকতে দেবেন না’, এই প্রশ্ন শুনতে হয়েছে ত্রিধারা সম্মিলনীর উদ্যোক্তা গার্গী মুখোপাধ্যায়কে। দমদম পার্ক তরুণ সঙ্ঘের কর্মকর্তা রবীন গঙ্গোপাধ্যায়ও একই কথা জানিয়েছেন। পুজো উদ্যোক্তারা বলছেন, মাইকে ঘোষণা করে আদালতের নির্দেশ দর্শনার্থীদের বোঝানো হচ্ছে। পাশাপাশি দিনভর ফেসবুকে প্রতিমা মণ্ডপের ছবি-ভিডিও তুলে ধরেছে সব পুজোকমিটি। বারাসত, বারাকপুর, বারুইপুর, সোনারপুরের সিংহভাগ পুজো কমিটিতে প্রবেশ নিষেধের হোর্ডিং চোখে পড়েছে। হুগলির বহু জায়গায় প্যান্ডেল এখনও শেষ হয়নি।
দক্ষিণবঙ্গের অন্য জেলাগুলিতেও অনেকে মণ্ডপসজ্জায় বদল আনছে। ব্যারিকেড পড়েছে বর্ধমান শহরের একাধিক বড় পুজোয়। পশ্চিম বর্ধমান জেলায় সোমবার রাতেই পুলিস ও প্রশাসনের কর্তারা বৈঠক করেছেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের অনেক কমিটি অবশ্য তাকিয়ে বুধবারের শুনানির দিকে। আদালতের নির্দেশ মানার জন্য বাঁকুড়ার জেলার সমস্ত পুজো কমিটিগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। নদীয়া, বীরভূমেও বিভিন্ন মণ্ডপের সামনে ব্যারিকেড, ‘নো এন্ট্রি’ বোর্ড টাঙানো হয়েছে। চতুর্থীতে পূর্ব মেদিনীপুরের বহু পুজো উদ্বোধন হলেও কোনও অনুষ্ঠান হয়নি। হাইকোর্টের নির্দেশে সমস্যায় পড়েছেন উত্তরবঙ্গ ও গৌড়বঙ্গের আটটি জেলার পুজো উদ্যোক্তারা। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে দূরত্ব মাপা ও ব্যারিকেডের ব্যবস্থা করার চাপ বেড়েছে। মালদহের ইংলিশবাজার ও পুরাতন মালদহে একাধিক পুজোমণ্ডপ রয়েছে রাস্তার ধারে। সেক্ষেত্রে দূরত্ববিধি মানতে হিমশিম খাচ্ছেন উদ্যোক্তারা।