নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা এবং সংবাদদাতা, হলদিয়া: দিল্লির নিজামুদ্দিন ফেরত হলদিয়ার বাসিন্দা এক ব্যক্তির করোনা পজিটিভ মিলল। তিনি ৩১ মার্চ থেকে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন। ২ মার্চ সোয়াব পাঠানো হয় কলকাতায়। রাত ১০টা নাগাদ বেলেঘাটা আইডি থেকে খবর আসে, তাঁর করোনা পজিটিভ। রাতেই তাঁকে বেলেঘাটায় স্থানান্তরিত করা হয়। পরিবারের পাঁচজনকে আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে সল্টলেকে এক প্রাক্তন পুলিসকর্তার স্ত্রীর নোভেল করোনা ধরা পড়েছে। তিনি অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি আছেন। খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন অ্যাপোলোর মেডিক্যাল ডিরেক্টর ডাঃ শ্যামাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের আক্রান্ত তরুণের বাবাও এই রোগে সংক্রমিত হয়েছেন। হাওড়ার সত্যবালা আইডি হাসপাতালের এক রোগীর শরীরেও করোনার জীবাণু মিলেছে বলে স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন সূত্রে জানা গিয়েছে। সেখানে ভর্তি আরও এক ব্যক্তির পরীক্ষা রিপোর্ট নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি ডাক্তাররা। তাই তাঁর নমুনা এনআইভি পুনেতে পাঠানো হচ্ছে বলে ট্রপিক্যাল সূত্রের খবর। ট্রপিক্যাল অধিকর্তা ডাঃ প্রতীপ কুণ্ডু বলেন, পরপর দু’দিন মিলিয়ে আসা ১৬টি নমুনার মধ্যে ১৪টিই নেগেটিভ এসেছে। বাইপাসের একটি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর দেহেও করোনা মিলেছে। সব মিলিয়ে নতুন করে চারজন আক্রান্ত হয়েছেন এই রোগে। এদিকে করোনা চিকিৎসায় প্রশিক্ষণের অভাব থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসা করতে পাঠানো, পর্যাপ্ত মাস্ক ও স্যানিটাইজার না থাকা ইত্যাদি ইস্যুতে এদিন টালিগঞ্জের এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। সংবাদমাধ্যমের সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন কর্মরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ।
হলদিয়ার ঘটনা সম্পর্কে আরও জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি নিজামুদ্দিন থেকে ফেরার তথ্য গোপন করেছিলেন। এক বন্ধুকে হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেজ করে লিখেছিলেন, নিজামুদ্দিন থেকে ফিরলেও আমি ‘ফাইন’ আছি। পুরসভার চেয়ারম্যান শ্যামল আদক সেই সূত্র ধরে তাঁকে খুঁজে বের করেন। বন্দর কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি জানানো হয়। ওই ব্যক্তি বন্দরে গিয়ে অনেকের সঙ্গে দেখা করায় শুক্রবার সকাল থেকে হলদিয়া শহরে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। সিআইএসএফ বন্দর ফাঁকা করে দেয়। জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি বন্দরের ১৩ নম্বর জেনারেল কার্গো বার্থ বা জিসি বার্থে একটি বেসরকারি ক্রেন অপারেটিং সংস্থায় সুপারভাইজারের কাজ করেন। ২৪ মার্চ দিল্লি থেকে ফেরার পর বন্দরে কর্মস্থলে গিয়েছিলেন। এখন বন্দরের ওই বার্থের সিসিটিভি ক্যামেরা চেকিং করে ওই ব্যক্তির গতিবিধি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার অমল দত্ত বলেন, ওই ব্যক্তি দিল্লি থেকে ফেরার পর বন্দরে এসেছিলেন কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং কাদের সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাও দেখা হচ্ছে। সবাইকে বলা হচ্ছে, যাঁরা ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছিলেন, বিষয়টি গোপন না করে জনস্বার্থে জানান।-নিজস্ব চিত্র