প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম প্রণয়ে আগ্রহ বাড়বে। তবে তা বাস্তবায়িত হওয়াতে সমস্যা আছে। ... বিশদ
(হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ)
করোনাকে আমি কখনও সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ভাইরাস বলব না। এর থেকে অনেক বেশি মানুষ ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়ায় মারা যায়। তারা নিজেদের মিউটেশন করে চারিত্রিক বদলও ঘটায়। তাই ভ্যাকসিনেরও পরিবর্তন করতে হয়। কিন্তু করোনা একেবারে নতুন ভাইরাস। এই ভাইরাস সম্বন্ধে খুব বেশি ধারণা কারও নেই। তাই বিশেষ সতর্কতা নিতেই হবে। যাঁদের ক্রনিক অবস্ট্রাকটেটিভ পালমুনারি ডিজিস(সিওপিডি) রয়েছে, এছাড়া যাঁরা ধুমপান করেন, গুটকা খান, অ্যাজমা রয়েছে তাঁদের একদিকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে আসে, তার উপর এই ভাইরাস আক্রমণ হলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে। এসব রোগীর ক্ষেত্রে মৃত্যুর সম্ভবনাও বেড়ে যায়। এর পাশাপাশি যাঁরা সুগারের রোগী তাঁদেরও এই রোগে মৃত্যুর হার ৭.৩ শতাংশ। হাই ব্লাড প্রেসারের রোগীদের ক্ষেত্রেও মৃত্যু হার বেশি। তাই তাঁদের বাড়তি সাবধান হতেই হবে।
হৃদরোগ একাধিক প্রকার হয়। প্রথমত, জন্মগত হৃদরোগ, দ্বিতীয়ত, ভালভিউলার হৃদরোগ অর্থাৎ হৃৎপিণ্ডের ভাল্বের সমস্যা। এছাড়াও হাট অ্যার্টাকের জেরে হৃৎপিণ্ডের সমস্যা। এক্ষেত্রে হৃৎপিণ্ডের পাম্পিং ক্ষমতা কমে যায়। প্রথমেই বলেছি হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের কার্যকারিতা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। তাই হৃদরোগের জেরে একটিতে আগে থেকেই সমস্যা থাকে। এরপর করোনার জেরে ফুসফুসে সংক্রমণ হলে তা ভয়ানক রূপ নেওয়ার সম্ভবনা থাকে। তাই আমার মতে যতটা সম্ভব সাবধানে থাকুন। আমার ছেলে বউমা কলকাতায় কার্যত নিজেদের কোয়ারেন্টাইন করে রেখেছে। আমিও দুর্গাপুরে নিজেকে কোয়ারেন্টাইন করে রেখেছি। খুব জরুরি অপারেশন ছাড়া এখন নিজে খুব বেশি কাজ করছি না। আপনারাও তাই করুন। অসুস্থ, বয়স্কদের সরকার, পুলিস, বিভিন্ন এনজিও বাইরের কাজ করে দিয়ে সাহায্য করছে, তাদের সাহায্য নিন।
তবে আমি বলব সরকার যথার্থ সময়ে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতালিতে এসব প্রথমে মানা হয়নি। সেখানে শুনেছি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত একের পর এক বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকরা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। দেশে এখনও সেই অবস্থা হয়নি। সরকারি নির্দেশ মেনে চলতে হবে। কারণ এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমরা তৃতীয় স্টেজে পদার্পণ করেছি। কমিউনিটি ট্রান্সমিশন যত কমানো সম্ভব, ততই মঙ্গল। কারণ একবার দেশের দরিদ্র শ্রেণির মধ্যে এই রোগ ব্যাপক সংক্রমিত হয়ে গেলে শ্মশানে দাহ করার লোক থাকবে না। কবর দেওয়ার জন্য জায়গা কম পড়ে যাবে। তাই আসুন আমরা সবাই মিলে সচেতন নাগরিকের পরিচয় দিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারি নির্দেশ মেনে চলি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নিজে সুস্থ থাকি, অপরকে সুস্থ রাখি।