কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য পুর নির্বাচন আইনের নিয়ম অনুযায়ী এবার সেকেন্ড রোস্টার এবং থার্ড রোস্টার অর্থাৎ ২-৫-৮ এবং ৩-৬-৯ ফর্মুলায় ওয়ার্ড সংরক্ষণ করা হয়েছে। যে ওয়ার্ডে তফসিলি জাতি-উপজাতির জনসংখ্যা বেশি, সেটি তফসিলি জাতি বা উপজাতির জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে। এই আসন সংরক্ষণের ফলে গোটা রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের বহু চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারম্যান পারিষদ সমস্যায় পড়েছেন। কলকাতা পুরসভায় বাদ পড়েছেন চার মেয়র পারিষদ। তাঁরা হলেন, দেবব্রত মজুমদার, রতন দে, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় ও স্বপন সমাদ্দার। কোপ পড়েছে দুই বরো চেয়ারম্যান সুশান্ত ঘোষ এবং ইন্দ্রজিৎ ভট্টাচার্য। দক্ষিণবঙ্গের কাঁথি পুরসভায় সংরক্ষণের কোপে পড়েছেন তমলুকের সাংসদ তথা কাউন্সিলার দিব্যেন্দু অধিকারী, খড়গপুর পুরসভার চেয়ারম্যান তথা নবনির্বাচিত বিধায়ক প্রদীপ সরকার, আরামবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী ও ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশ চৌধুরী, উত্তরপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ যাদব, বৈদ্যবাটির চেয়ারম্যান অরিন্দম গুঁইন। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপর পুরসভার চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ও সংরক্ষণের কোপে পড়েছেন। একইভাবে আসানসোলের মেয়র তথা বিধায়ক জিতেন্দ্র তেওয়ারি ও চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় সংরক্ষণের জন্য নিজেদের ওয়ার্ডে দাঁড়াতে পারবেন না।
কলকাতা সংলগ্ন বড় পুরসভা দক্ষিণ দমদমের চেয়ারম্যান পাচু রায়ের ওয়ার্ড মহিলা হিসেবে সংরিক্ষত হয়েছে। এছাড়াও সেখানকার হেভিওয়েট বলে পরিচিত প্রবীর পালের (কেটি) ১৩ নম্বর ওয়ার্ড, প্রদীপ মজুমদারের তিন নম্বর ওয়ার্ড সংরক্ষণের কোপে পড়েছে। উত্তর দমদমের দুই চেয়ারম্যান পরিষদের সদস্যদের আসন সংরক্ষণ হয়েছে। প্রাক্তন চেয়ারম্যান কল্যাণ করের আসন সংরক্ষিত হয়েছে। সংরক্ষণের গেরোয় পড়েছেন বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান, কোপ পড়েছে বারাসত, নিউ বারাকপুর ও বারাকপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের আসনেও। কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহার ওয়ার্ডটি এবার মহিলার জন্য সংরক্ষিত। একইভাবে সংরক্ষণের গেরোয় ফেঁসেছেন টিটাগড়ের চেয়ারম্যান প্রশান্ত চৌধুরী, নৈহাটির চেয়ারম্যান অশোক চট্টোপাধ্যায়, গারুলিয়ার চেয়ারম্যান সঞ্জয় সিং, হালিশহরের চেয়ারম্যান অংশুমান রায়, কাঁচরাপাড়ার চেয়ারম্যান সুদামা রায়। ভদ্রেশ্বর ও ডানকুনি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানরাও সংরক্ষণের কোপে পড়েছেন।
দক্ষিণবঙ্গের মতো উত্তরবঙ্গেও শিলিগুড়ি পুরসভায় তিন মেয়র পারিষদ, চেয়ারম্যান এবং বরো চেয়ারম্যানও সংরক্ষণের কোপে পড়েছেন। কোচবিহারে তুফানগঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান, দিনহাটা ও মাথাভাঙা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান, জলপাইগুড়ির ভাইস চেয়ারম্যান, জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি তথা চেয়ারম্যান পারিষদ সৈকত চট্টোপাধ্যায়, ইংলিশবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান নীহাররঞ্জন ঘোষ, গঙ্গারামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান অমলেন্দু সরকার সংরক্ষণের জেরে আসন হারাচ্ছেন।
সংরক্ষণের গেরোয় অন্দরমহলে তুমুল আলোড়ন শুরু হলেও তৃণমূল পুরদলের আহ্বায়ক ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, দলে গণতন্ত্র রয়েছে। দলনেত্রীর নির্দেশ মতো দলের সর্বস্তরের কর্মীরা কাজ করেন। আজ প্রাথমিক খসড়া তালিকায় যাঁদের ওয়ার্ড সংরক্ষিত হল, তাঁদের বিষয়টি দলে আলোচনা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।