গুরুজনের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা ও মানসিক উদ্বেগ। কাজকর্মে বড় কোনও পরিবর্তন নেই। বয়স্কদের স্বাস্থ্য সমস্যা ... বিশদ
পুলিস ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম এলিনা দত্ত ভট্টাচার্য (১৫)। সে দশম শ্রেণির ছাত্রী। মা ডালিয়া দত্ত ছিলেন আইআইটি খড়্গপুরের ছাত্রী। বর্তমানে তিনি সল্টলেকে তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত। বাবা আনন্দ ভট্টাচার্যও সল্টলেকে তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত। এলিনার এক বোনও রয়েছে। সল্টলেকের এ-ই ব্লকে তাঁদের বাড়ি। চারজনই বিধাননগর পুরসভার সুইমিং পুলে অনুশীলন করেন। ডালিয়াদেবী নিজেও একজন নামী সাঁতারু। তিনি জাতীয় স্তরেও সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। এলিনাও বহুদিন ধরে সাঁতার শিখছে। সেও একাধিক পুরস্কার নিয়ে এসেছে। দুর্ঘটনার পরই এদিন বিধাননগর পুরসভার পক্ষ থেকে সুইমিং পুল বন্ধ রাখা হয়।
এলিনার দাদু তথা আইআইটি খড়্গপুরের প্রাক্তন অধ্যাপক গৌরাঙ্গলাল দত্ত বলেন, নাতনি খুবই ভালো সাঁতার জানে। কিন্তু, আচমকাই দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। আমি নিজেও ওই পুলে সাঁতার কাটতে যেতাম। এদিন সকালে বড় নাতনিকে নিয়েই মেয়ে সাঁতার অনুশীলনে গিয়েছিল। নাতনি আন্ডার ওয়াটার অনুশীলন করছিল। মেয়ে নিষেধ করেছিল। মেয়ে পুলেই ছিল। নাতনি ডুব দেওয়ার পর নীচে কাউন্টিং করছিল। কিন্তু দেড়-দু’মিনিট হয়ে যাওয়ার পরেও সে ওঠেনি। তারপরই মেয়ে জলের তলায় গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। সকাল ১০টায় মেয়েই আমাকে ফোন করে বলল, বাবা সব শেষ! বাবু (এলিনার ডাক নাম) আর নেই!
আর জি কর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর এদিন সন্ধ্যায় সল্টলেকের বাড়িতে এলিনার মৃতদেহ নিয়ে আসা হয়। শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তাদের বাড়িতে যান বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী, ডেপুটি মেয়র অনিতা মণ্ডল সহ আরও দুই মেয়র পারিষদ। মেয়র বলেন, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আমরা সবাই মর্মাহত।
এদিন বাড়িতে দেহ ঢুকতেই কান্নার রোল ওঠে। এলিনার ছোট বোন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। এদিন বিকেলে তারও অনুশীলনে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সন্ধ্যার পর দিদির মৃতদেহ এল বাড়িতে। নিজের চোখকেও সে বিশ্বাস করতে পারছিল না। এই তো সকালেই দিদি মায়ের সঙ্গে গেল। শেষ বিদায়ে দিদির দেহের পাশে সে রাখল কয়েকটি চকোলেট আর একটি চিঠি!