নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: তালিবান শাসিত আফগানিস্তান সম্পর্কে ভারতের অবস্থান যে কী? ঘোষণা হয়নি, কিন্তু কঠোর মনোভাব আন্তর্জাতিক মহলকে স্পষ্ট বুঝিয়ে দিল নয়াদিল্লি। বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমেরিকা যাত্রা করলেন। আর তাঁর সফর শুরু হল আফগানিস্তানের আকাশ সম্পূর্ণ এড়িয়ে। উদ্দেশ্য একটাই, পাকিস্তানের হাতের পুতুল হতে চলা তালিবান শাসকের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক বার্তা বিশ্বমঞ্চে পৌঁছে দেওয়া। আফগানিস্তানকে এড়িয়ে যাওয়ার জন্যই মোদির বিমান পাকিস্তানের আকাশ হয়ে মার্কিন মুলুকে গিয়েছে। নন স্টপ এই বিমানের যাত্রাপথে যাতে পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেওয়া হয়, সেই আবেদন করা হয়েছিল ইসলামাবাদের কাছে। পাকিস্তান সেই আবেদন তৎক্ষণাৎ মেনে নিয়েছে।
২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার করে কেন্দ্র। অর্থাৎ, কেড়ে নেওয়া হয় বিশেষ রাজ্যের তকমা। তারপর পাকিস্তানের কাছে তিনবার আকাশসীমা ব্যবহারের জন্য আর্জি জানিয়েছিল ভারত। এরমধ্যে দু’টি ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী মোদি ও একটি ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সফর ছিল। কিন্তু প্রতিবারই ভারতের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল পাক প্রশাসন। এই নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরেও অভিযোগ জানিয়েছিল ভারত। পাশাপাশি পরোক্ষ বার্তা দিতে চলতি বছরে শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ভারতের আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল কেন্দ্র। এবার পাল্টা সৌজন্য ফিরিয়ে দিল পাকিস্তান। 
বুধবার তিনদিনের মার্কিন সফরে উড়ে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা সহ শীর্ষ সরকারি আধিকারিকদের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল। এদিন সকালে ভারতীয় বায়ুসেনার টেকনিক্যাল এয়ারবেস থেকে ভিভিআইপিদের নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়া ওয়ান আমেরিকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। তিনদিনে মার্কিন মুলুকে একগুচ্ছ কর্মসূচি রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।  রাষ্ট্রসঙ্ঘে সাধারণ সভায় অংশ নেবেন তিনি। থাকবেন কোয়াড গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির বৈঠকেও। এছাড়া, হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। বৃহস্পতিবার মার্কিন উপরাষ্ট্রপতি কমলা হ্যারিসের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন বলে খবর। এছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগার সঙ্গেও মোদির বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।