সম্পত্তি সংস্কার বিষয়ে চিন্তাভাবনা ফলপ্রসূ হতে পারে। কর্মক্ষেত্রে প্রভাব-প্রতিপত্তি বৃদ্ধি। যাবতীয় আটকে থাকা কাজের ক্ষেত্রে ... বিশদ
রাজআমল থেকে চলে আসা এই পুজোয় মহা সরস্বতীর চার হাত। পুজোয় বলিপ্রথার প্রচলন রয়েছে। মহা সরস্বতী প্রতিমার পাশেই হয় শীত-বসন্ত পুজো। এখানে শীতকে ঘিরে আরও চারটি ঋতুর পুজো হয়। মাঝে শীতের প্রতিমা। তাঁর ডান দিকের পিছনে বসন্ত, সামনে গ্রীষ্ম থাকেন। বাঁ দিকের পিছনে হেমন্ত ও সামনে বর্ষার অধিষ্ঠান। কাঠামিয়া মন্দিরে মহা সরস্বতী ও শীত-বসন্তের প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। এই প্রতিমাগুলি বংশপরম্পরায় তৈরি করেন প্রভাত চিত্রকর। সরস্বতী পুজোর শেষে মদনমোহন মন্দির চত্বরের পলাশ গাছ থেকে পালাশ ফুল তোলা হয়। সেই পলাশ ফুল থেকে তৈরি আবির দিয়েই দোল পূর্ণিমার দিন দোল খেলবেন মদনমোহন।
কোচবিহারের মদনমোহন মন্দিরের কর্মী জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, মহনমোহন মন্দিরে রাজআমল থেকেই মহা সরস্বতী ও শীত-বসন্তের পুজোর প্রচলন রয়েছে। মহা সরস্বতী পুজোয় পায়রা বলি ও বিশেষ ভোগের আয়োজন থাকে। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত মতে এখানে ৩০ জানুয়ারি মহা সরস্বতীর পুজো হবে। মহা সরস্বতী পুজোর পর পলাশ ফুল তোলা হবে। সেই পলাশের আবিরেই দোল খেলবেন মদনমোহন। প্রভাত চিত্রকর বলেন, আমরা বংশপরম্পরায় মহা সরস্বতী ও শীত-বসন্তের প্রতিমা তৈরি করছি। আমি এই প্রতিমা গত প্রায় ২৫ বছর ধরে করছি। এখানে মহা সরস্বতীর চার হাত। তাঁর চার দিকে চারটি রাজহংস থাকে। শীত-বসন্তের প্রতিমাতে পাঁচটি প্রতিমা থাকে। তাঁদের হাতে ভিন্ন ভিন্ন অস্ত্র, চামর, করতাল প্রভৃতি থাকে। প্রতিমার রঙও নানা ধরনের হয়।
কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী মদনমোহন মন্দিরে সারা বছরই নানা পুজোর আয়োজন থাকে। দুর্গাপুজো থেকে শুরু করে রাস উৎসব উপলক্ষে মদনমোহনের বিশেষ পুজো সহ আরও নানা দেবদেবীর পুজো হয়। প্রতিটি পুজোকে ঘিরেই কোচবিহারের মানুষ আবেগে উদ্বেলিত হয়ে ওঠেন। মদনমোহন মন্দিরের বিশেষ পুজোগুলিতে প্রতিমার গড়ন থেকে রীতি-রেওয়াজ সবেতেই রয়েছে অভিনবত্ব। ব্যতিক্রম নয় মহা সরস্বতীর পুজোও।
মহা সরস্বতীর পাশেই অধিষ্ঠান করেন শীত-বসন্তের প্রতিমা। যেন প্রকৃতির ঋতুচক্রকে মেনেই শীতকে মাঝখানে রেখে তার চারপাশে হেমন্ত, বসন্ত, গ্রীষ্ম ও বর্ষার প্রতিমা রাখা হয়। শীতের প্রতিমার বাঁ হাতে তির ও ডান হাতে ধনুক থাকে। এই প্রতিমার রঙ হয় শ্যামলা বর্ণের। শীতের প্রতিমাটি মাঝখানে থাকে। এই শীতের প্রতিমার ডান দিকের পিছন দিকে থাকে বসন্তের প্রতিমা। এই প্রতিমার মাথাটি ঘোড়ার মাথার আদলে নির্মিত হয়। এর অর্ধেক দেহ সাদা ও অর্ধেক দেহের রঙ লাল হয়। এঁর দুই হাতে থাকে করতাল। শীতের প্রতিমার সামনের ডান দিকে থাকে গ্রীষ্মের প্রতিমা। এটি নারী প্রতিমা। এর রঙ হয় হলুদ রঙের। এর হাতে থাকে চামর। শীতের বাঁ দিকে পিছনে থাকে হেমন্তের প্রতিমা। এর রঙ হাল্কা হলুদ। এঁর হাতে থাকে বীণা। শীতের বাঁ দিকের সামনের অংশে থাকে বর্ষার প্রতিমা। এটিও নারী প্রতিমা। এর রঙ হয় হলুদ। এই প্রতিমার হাতেও থাকে চামর।
মহা সরস্বতীর পুজোর শেষে যে পলাশ ফুল তোলা হয় তা থেকে নির্মিত আবির দিয়ে দোল পূর্ণিমার দিন মদনমোহন বাণেশ্বর মহাদেব ও ষাড়েশ্বর মহাদেবের সঙ্গে দোল খেলেন বলে মদনমোহন মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।