কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ও মানসিক কষ্ট। দূর ভ্রমণের সুযোগ। অর্থ প্রাপ্তির যোগ। যে কোনও ... বিশদ
মালদহের ১৫টি ব্লকের মধ্যে ১২টিকেই গঙ্গা ও ফুলহার নদীর জলে প্লাবিত হয়েছে। জেলার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁরই নির্দেশে এদিন মালদহে এসে পৌঁছন রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের মন্ত্রী জাভেদ খান এবং পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী গোলাম রাব্বানি। কখনও গাড়িতে, কখনও পায়ে হেঁটে আবার কখনও স্পিড বোটে চেপে জেলার বিভিন্ন প্লাবিত এলাকা ঘোরেন তাঁরা। সঙ্গে ছিলেন জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য, পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়া সহ অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিক ও সেচ দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররাও। জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী মৌসম নুর, দলের জেলা চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, মোথাবাড়ির বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিনও এদিন মন্ত্রীদের সঙ্গে ছিলেন।
জলমগ্ন এলাকাগুলি পরিদর্শনের পাশাপাশি দুর্গতদের মধ্যে রান্না করা খাওয়ার ও ত্রাণ সামগ্রীও বিতরণ করেন মন্ত্রীরা। কিন্তু মন্ত্রীদের সফরের ছন্দপতন হয় রতুয়া-১ ব্লকে এসে। মন্ত্রীদের কনভয়ের হুটারের আওয়াজ পেয়েই তাঁদের গাড়ির প্রায় কাছাকাছি চলে আসেন রতুয়ার প্লাবিত এলাকার বাসিন্দারা। মন্ত্রীদের গাড়ি থামিয়ে তাঁরা ত্রাণ নিয়ে ক্ষোভের কথা তুলে ধরেন। ত্রাণ বিলির ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত সদস্যদের একাংশের বিরুদ্ধে ব্যাপক দলবাজির অভিযোগও তোলেন বিক্ষোভকারীরা। এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণের দাবি তোলেন তাঁরা। তাঁরা দাবি তোলেন, রতুয়া-১ ব্লককে বন্যা কবলিত ঘোষণা করতে হবে। কিছুক্ষণ ধরে বিক্ষোভ চলার পরে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয় পুলিস। পরে জাভেদ খান বলেন, আমরা রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে মালদহে এসেছি জলমগ্ন এলাকাগুলির বাসিন্দাদের সমস্যার হালহকিকত জানতে। জেলা প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাধ্য মতো চেষ্টা করছে। তাও মানুষের এখনও কিছু সমস্যা রয়েছে। আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে সব জানাব। নিয়মের মধ্যে থেকে মানবিকভাবে মানুষের জন্য যা যা করা সম্ভব তার সবই করা হবে। ত্রাণ নিয়ে কোনও সমস্যা থাকবে না। সেইমতো জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শুধু জলমগ্ন এলাকার বাসিন্দারাই নন, ত্রাণ বণ্টনে শাসকদলের জেলা নেতৃত্ব, পঞ্চায়েত সদস্য ও সংশ্লিষ্ট ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে এদিন জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করেন কংগ্রেসের বিধায়করা। পরে কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মোস্তাক আলম বলেন, আগে ঠিক ছিল ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল প্রতি ব্লকে ত্রাণ বিলির বিষয়টি দেখবেন। কিন্তু এই ব্যবস্থাকে কুক্ষিগত করে ফেলেছে তৃণমূল। অনেক ক্ষেত্রে প্রকৃত দুর্গতই ত্রাণ পাচ্ছেন না। এবিষয়ে অবশ্য জেলাশাসক মন্তব্য করতে চাননি। তবে মৌসম বলেন, জেলার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে কংগ্রেস রাজনীতি করতে নেমেছে। আমরা দুর্গতদের পাশে রয়েছি।
অন্যদিকে এদিন জেলার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসন ও সেচ দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন রাজ্যের নতুন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। সেচ দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার কৌশিক বসাক বলেন আমরা মুখ্যসচিবকে পরিস্থিতি বিশদে জানিয়েছি। এদিকে বুধবারও ফুলহারের জল বেড়েছে। গঙ্গা চরম বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইলেও জলস্তর স্থিতিশীল ছিল।