গুরুজনের চিকিৎসায় বহু ব্যয়। ক্রোধ দমন করা উচিত। নানাভাবে অর্থ পাওয়ার সুযোগ। সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়ায় ... বিশদ
আবাসনে যাঁর ঘরে চুরি হয়েছে তাঁর নাম পূর্ণম চক্রবর্তী। তিনি বলেন, স্ত্রীকে আনতে আমি শ্বশুরবাড়ি ডালখোলায় গিয়েছিলাম। রাতে সেখানেই থেকে যাই। এদিন সকালে বাড়ি ফিরে দেখি ঘরের দরজার তালা ভাঙা অবস্থায় আছে। দুষ্কৃতীরা আলমারি ভেঙে সোনার গয়না, নগদ টাকা নিয়ে গিয়েছে। দুষ্কৃতীরা যাওয়ার সময়ে আমাদের আবাসনের অন্য একটি ঘরের তালাও ভাঙার চেষ্টা করেছিল। তারা আবাসনের এক পুলিস কর্মীর সাইকেল নিয়ে গিয়েছে।
ওই বাড়ির পাশের আবাসনের বাসিন্দা স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্মী প্রসেনজিৎ দাস বলেন, আমাদের আবাসনের এক তলার মূল দরজাটির তালা ভাঙার চেষ্টা দুষ্কৃতীরা করেছিল। আমাদের আবাসনে ১২৭টি ঘর আছে। এখানে নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। সেকারণে প্রায় ছোটখাট চুরি হয়। এবার বড়মাপের চুরি হয়েছে।
উত্তর দিনাজপুরের পুলিস সুপার সুমিত কুমার বলেন, আমরা চুরির ঘটনা অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। আশা করছি, দুষ্কৃতীরা শীঘ্রই ধরা পড়বে।
সরকারি আবাসনের সি-১/৩ নম্বর ঘরে চুরি হয়। তিনতলা ওই আবাসনটির একতলার মাঝের ঘরে পূর্ণমবাবু পরিবার নিয়ে থাকেন। দুষ্কৃতীরা দরজার কড়ায় লাগানো তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকে। পূর্ণমবাবুর দাবি, দুষ্কৃতীরা আলমারি ভেঙে একটি সোনার নেকলেস, সাত-আটটি কানের দুল, চারটি আংটি, দু’টি চেন, দু’টি মঙ্গল সূত্র ও নগদ প্রায় ৭০০০ টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছে। যাওয়ার সময়ে আবাসনের সিঁড়ির নীচে রাখা একটি সাইকেল দুষ্কৃতীরা নিয়ে যায়। ওই আবাসনেরই তিনতলাতে কর্ণজোড়া পুলিস ফাঁড়ির ওসি চন্দন সিংহ থাকেন। রাত ৩টে নাগাদ ডিউটি করে তিনি আবাসনে ফেরেন। তিনিও বিষয়টি রাতে আঁচ করতে পারেননি। এদিন সকালে চুরির ঘটনা সামনে আসে।
কর্ণজোড়ায় জেলাশাসকের দপ্তর ও পুলিস ফাঁড়ির মাঝের অংশে আবাসনটি অবস্থিত। সেখানকার বাসিন্দাদের দাবি, ওই দুই জায়গা থেকে আবাসনটির দূরত্ব মেরেকেটে ৭৫ মিটার। অপরদিকে উত্তর দিকে জেলা পরিষদের অফিস। সেটির দূরত্ব মাত্র ৫০ মিটার। কিছু দূরে কর্ণজোড়া পুলিস ফাঁড়ির আগে রয়েছে সার্কিট হাউস। সরকারি কর্মীর আবাসনে চুরির ঘটনায় এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এলাকায় এত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দপ্তর থাকার পরেও এই ধরনের চুরির ঘটনায় বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
ওই এলাকায় আরও বেশকয়েকটি আবাসন রয়েছে। সবক’টি আবাসনই তিনতলা। যার মধ্যে বেশ কয়েকটি করে ফ্ল্যাট আছে। ওসবে জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে কর্মরত কর্মী থাকেন। ওই আবাসনগুলির অধিকাংশেই কোনও সীমানা প্রাচীর নেই। রাস্তার ধারে বা একটু ভিতরের দিকে ওই আবাসনগুলিতে ঢোকার জন্য মূল গেটগুলিতে গ্রিলের দরজা রয়েছে। তাতে রাতে তালা দেওয়া থাকে। দিনে বা সন্ধ্যাবেলায় সেগুলি খোলা থাকলে রাস্তা থেকে খুব সহজেই ওসব আবাসনের ভিতরে ঢুকে পড়া যায়। সরকারি আবাসনগুলির বাসিন্দাদের অভিযোগ, এর আগেও ওই আবাসনে বেশ কয়েকবার চুরি ও চুরির চেষ্টা হয়েছে। এবার পুলিস ফাঁড়ির একেবারে সামনে সরকারি কর্মীদের আবাসনে চুরি এবং দু’টি ঘরে চুরির চেষ্টায় এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আবাসিকদের একাংশের দাবি, এখানে বহু সরকারি কর্মী আবাসন নিয়ে থাকেন। অধিকাংশরই অন্যত্র বাড়ি রয়েছে। ছুটিতে তাঁরা বাড়ি যান। কাজের সূত্রেও অনেককে বাড়িতে তালা দিয়ে বাইরে থাকেন। সেসময়ে আবাসনের দরজায় তালা দিয়ে যাওয়া ছাড়া তাঁদের আর কোনও উপায় থাকে না। কিন্তু সঠিক পুলিসি নজরদারি, সিসিটিভি ক্যামেরা সহ অন্যান্য কোনও ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। আবাসিকদের দাবি, সরকারি আবাসনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা দরকার।