কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
পুলিস সূত্রে জানা যাচ্ছে, ছাত্রছাত্রীদের কম্পিউটারের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন স্কুলে আলাদা ল্যাব খুলেছে রাজ্য সরকার। তাদের ট্রেনিং দেওয়ার জন্য শিক্ষক নিয়োগও করা হচ্ছে। বেশিরভাগ জায়গাতেই চুক্তির ভিত্তিতে তাঁদের নেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি জানতেন ধৃত ওই স্কুল শিক্ষক। স্কুলের চাকরির প্রতি বেকার যুবক-যুবতীদের যে আগ্রহ রয়েছে, সেটা জানা কথা। তাকে কাজে লাগিয়ে তাঁদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতানোর পরিকল্পনা করা হয়। সেই অনুসারে কম্পিউটার স্কুল খুলে শুরু হয় প্রতারণা। উদ্দেশ্য, একসঙ্গে অনেকর কাছ থেকে বেশি পরিমাণ টাকা হাতানো।
অভিযোগ, ওই শিক্ষক ও তার এক সহযোগী মিলে খড়্গপুরে একটি কম্পিউটার সেন্টার খোলে। বলা হয়, সরকার পোষিত স্কুলগুলিতে কম্পিউটার শিক্ষক নিয়োগের দায়িত্ব পেয়েছে তারা। বিভিন্ন জেলায় বিপুল সংখ্যায় ছেলেমেয়ে নেওয়া হবে। এরজন্য শিক্ষা দপ্তরের ভুয়ো অনুমোদনপত্রও তৈরি করা হয়। বলা হয়, তাদের কাছে প্রশিক্ষণ নিলে অনায়াসে যে কোনও স্কুলে কম্পিউটার শিক্ষকের চাকরি মিলবে। এনিয়ে প্রচারও শুরু করে তারা। ওই শিক্ষক এমনকী পরিচিতদের জানান, বেকার যুবক-যুবতী থাকলে তাদের সংস্থায় পাঠাতে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে খোঁজ পেয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম সহ লাগোয়া কয়েকটি জেলা থেকে যুবকযুবতীরা যোগাযোগ করতে শুরু করেন। তাঁদের বলা হয়, ৬০ হাজার টাকা দিয়ে অ্যাডমিশন নিতে হবে। এক বছর প্রশিক্ষণ চলবে। এই সময়ে মিলবে স্টাইপেন্ড। ট্রেনিং শেষে চাকরির জন্য পাঠানো হবে বিভিন্ন স্কুলে। অনেকেই উৎসাহিত হয়ে এই ভুয়ো সংস্থায় নাম লেখান। তাঁদের শিক্ষা দপ্তরের জাল অনুমোদনপত্রও দেখানো হয়। প্রথম প্রথম তাঁদের স্টাইপেন্ডও দেওয়া হয়। ক্রমেই পড়ুয়া বাড়তে থাকে। এরপর আরামবাগেও একটি শাখা খোলা হয়। চেষ্টা হচ্ছিল বাঁকুড়া, পুরুলিয়াতেও সংস্থা খোলার। এদিকে, নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা চাকরির জন্য দরবার করতে থাকেন। কিন্তু বিভিন্ন অজুহাতে তাঁদের ঘোরানো শুরু হয়। এরই মাঝে কয়েকজন শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, কোনও সংস্থাকেই স্কুলে কম্পিউটার শিক্ষক নিয়োগের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। খড়্গপুরের সংস্থাটি ভুয়ো অনুমোদনপত্র দেখাচ্ছে। এরপরই খড়্গপুর টাউন থানায় অভিযোগ হয়। জেলা জুড়েই প্রতারণার জাল ছড়িয়ে পড়ায় সিআইডিকে তদন্তভার দেওয়া হয়। তারা তদন্ত করতে গিয়ে দেখে, চক্রের মাথা ওই শিক্ষক ও এক মহিলা। এরপরই একে একে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের জেরা করে জানা যাচ্ছে, চক্রে আরও একাধিক লোকজন রয়েছে। যারা শিক্ষা দপ্তরের ভুয়ো সার্টিফিকেট তৈরি করেছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।